Print Date & Time : 10 September 2025 Wednesday 7:12 pm

এলপিজির মূল্য হ্রাসের সুফল পাক ভোক্তাসাধারণ

রান্নার কাজে ব্যবহার্য তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম চার শতাংশ কমিয়েছে জ্বালানি খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিইআরসি। সোমবার বিইআরসির মাসিক মূল্য নির্ধারণের ঘোষণায় বলা হয়েছে, জানুয়ারিতে প্রতি কেজি এলপিজির সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য হবে ৯৮ টাকা ১৭ পয়সা, যা ডিসেম্বরে ১০২ টাকা ৩২ পয়সা ছিল। এ হিসাবে প্রতি কেজিতে এলপিজির দাম কমছে চার টাকা ১৫ পয়সা বা চার শতাংশ।

জানুয়ারি মাসের জন্য মূল্য সমন্বয় আদেশ ঘোষণা উপলক্ষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেছেন, সৌদি সিপি, মূসক ও ডলারের বিনিময় হারÑএ তিন সূচকের ওঠানামার ওপর ভিত্তি করে প্রতি মাসে এলপিজির দাম নির্ধারণ করা হয়। সরকারি এলপিজির ক্ষেত্রে এসব বিষয় না থাকায় তা আপাতত দাম অপরিবর্তিত থাকছে। ভোক্তা পর্যায়ে সবচেয়ে বেশি ব্যবহƒত ১২ কেজির এলপিজি সিলিন্ডারের দাম নতুন হারে দাম দাঁড়াচ্ছে ১ হাজার ১৭৮ টাকা, যা ডিসেম্বরে ১ হাজার ২২৮ টাকা ছিল। অর্থাৎ ১২ কেজির সিলিন্ডারে একজন ভোক্তার সাশ্রয় হবে ৫০ টাকা। সোমবার থেকে নতুন এ দাম কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে বিইআরসি।

বর্তমানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম আকাশছোঁয়া। জ্বালানি তেলের দাম কমলে সাধারণ মানুষ কিছুটা স্বস্তি পাবেন। কিন্তু বিইআরসি দাম ঘোষণাতেই দায়িত্ব সীমিত রাখলে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবে না। নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দমে বিক্রি হচ্ছে কি না, তা তদারকি করতে হবে। আবার সিলিন্ডারে ঘোষিত পরিমাণের চেয়ে কম গ্যাস থাকলে ভোক্তা প্রতারিত হতে পারেন। তাই সেদিকেও লক্ষ রাখতে হবে।

কভিডের অভিঘাতে দেশের ৭৭ শতাংশ মানুষের আয় কমে গেছে আর সব পণ্যের দাম বেড়েছে। জ্বালানি খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা, ট্যারিফ নির্ধারণ, ভোক্তার স্বার্থ সংরক্ষণ ও প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টির লক্ষ্যে বিইআরসি দর বেঁধে দিয়ে থাকে। টেকসই উন্নয়নের অন্যতম নিয়ামক জ্বালানি নিরাপত্তা। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে কর্মপন্থা গ্রহণ করলে ২০৩০ সালের মধ্যে জ্বালানি খাতে ন্যায়বিচার ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলে আমরা মনে করি। কিন্তু ট্যারিফ নির্ধারণে স্বচ্ছতা আনয়ন করা না গেলে সরকারি ও বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের জন্য অভিন্ন সুযোগ এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি হবে না। জ্বালানি খাতে আর্থিক ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিও প্রতিষ্ঠা করা যাবে না। বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানের স্বেচ্ছাচারী মনোভাবের কারণে বাজার অনেক সময়ই সরকারের নির্ধারিত দামে এলপিজি বিক্রি হয় না। অবশ্য বেশি দামে বিক্রির অভিযোগ পেলে বিইআরসির উচিত ডিলারদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া। নির্ধারিত দামে এলপিজি বিপণন নিশ্চিত করা না গেলে বাজারে বিইআরসির নিয়ন্ত্রণ থাকবে না। নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও ভোক্তাদের সচেতন করা গেলে সরকার নির্ধারিত দামে এলপিজি বিক্রি নিশ্চিত করা সম্ভব। তা হলেই দাম কমার সুফল পাবেন ভোক্তাসাধারণ।