এশিয়ার পুঁজিবাজারে পতন তেলের দাম আরও বেড়েছে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: এশিয়ার বিভিন্ন পুঁজিবাজারে গতকাল সোমবার সূচকের পতন হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে। খবর: রয়টার্স।

সোমবার জাপানের নিক্কেই সূচক ১ শতাংশের বেশি পড়েছে। অস্ট্রেলিয়ার এসঅ্যান্ডপি/এএসএক্স ২০০ সূচকের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ১৫ শতাংশ। নিউজিল্যান্ডের ইকুইটি বাজারের মানদণ্ড হিসেবে পরিচিত এনজেড ৫০-এর পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৯ শতাংশ।

এর আগে গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শুক্রবারে সর্ব-ইউরোপীয় স্টকস ৬০০ সূচকের পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং নিউইয়র্কের এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকের পতন হয় শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ। তবে গতকাল সোমবার আইএস স্টক ফিউচার্সের শূন্য দশমিক ১৮ শতাংশ উত্থান হয়েছে।

আর্থিক খাতের বিশ্লেষকরা বলছেন, পরিস্থিতি দ্রুত বদলাচ্ছে, তাই শুক্রবার যেসব হেজিং করা হয়েছে সেগুলো যে অপ্রয়োজনীয় ছিল, সে কথা এখনই বলা যাচ্ছে না।

এদিকে ১০ বছর মেয়াদি মার্কিন ট্রেজারি বন্ডের সুদহার সামান্য পরিবর্তিত হয়েছে, যা এখন ৪ দশমিক ৬৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত শুক্রবার এই ১০ বছর মেয়াদি ট্রেজারি বন্ডের সুদ হার ৮ ভিত্তি পয়েন্ট কমেছে। তাই বাজারের বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বন্ডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি উঠেছে।

বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ৯১ ডলার ২০ সেন্ট হয়েছে। পরে কিছুটা কমে ৯০ ডলার ৮৪ সেন্ট হয়। বিশ্লেষকরা বলছেন, ইসরাইল ও ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সংঘাতের প্রতিক্রিয়ায় তেলের দাম বেড়েছে। গত বছর ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযানের পর থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এ সংঘাত তেলের বাজারের জন্য সবচেয়ে আশঙ্কাজনক ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করেছে।

সপ্তাহের শুরুতে গতকাল বিশ্বের বিভিন্ন মুদ্রার গতিপ্রকৃতি কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে। আগের সপ্তাহে যে পরিস্থিতি ছিল, সেখান থেকে কিছুটা মূলের দিকে ফিরেছে। অর্থাৎ মার্কিন ডলার আগের মতো শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে। তবে ইকুইটির বাজার ছিল কিছুটা দুর্বল ছিল। ইউএস ডলার ইনডেক্সের মান আজ ১০৬ দশমিক ৫৫, যা গত শুক্রবার ১০৬ দশমিক ৭৯-এ উঠেছিল। ইউরোপীয় মুদ্রা ইউরোর মান ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ দশমিক ০৫২২ ডলারে। হামলার কারণে ইসরাইলের মুদ্রা শেকলের দর আট বছরের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমেছে।

মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাতের কারণে বিনিয়োগকারীরা বিচলিত। বাজারে তার প্রভাব পড়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্লেষকরা। গত ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামলা করে হামাস। পরদিন থেকেই বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বাড়তে শুরু করে। এরপর তা কিছুটা কমে গত শুক্রবার। ফের বৃদ্ধির ধারায় ফেরে। সবশেষ সোমবার তা ব্যারেলপ্রতি ৯০ ডলার ছাড়িয়ে যায়। বিশ্লেষকরা বলছেন, তেলের দাম বাড়ার ফলে যুক্তরাষ্ট্রে গ্যাসের দাম বা ভোক্তা ব্যয়ের ওপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়বে না।

ক্রেসেট ক্যাপিটালের চিফ ইনভেস্টমেন্ট অফিসার জ্যাক আবলিন বলেন, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। হঠাৎ করে যদি তেলের উৎপাদন কমে যায় অথবা তেল পরিবহন ব্যাহত হয়, তাহলে তা শুধু অর্থনীতির জন্যই নয়, বাজারের জন্যও সমস্যা তৈরি হবে।

ইরান জানিয়েছে, ফিলিস্তিনিদের সহায়তা করা তাদের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাই স্বাভাবিকভাবে জ্বালানি ও আর্থিক বাজার এখন ইরানের উদ্যোগের দিকে তাকিয়ে থাকবে। যুদ্ধের কারণে অন্যান্য জ্বালানি বাজারও প্রভাবিত হতে পারে। সাম্প্রতিক সময়ে দেখা গেছে, শেভরন ইসরাইল ও মিসরের মধ্যকার একটি প্রধান সাব-সি পাইপলাইনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি বন্ধ করে দিয়েছে।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা যেন আর না বাড়ে, সে লক্ষ্যে এখন ওই অঞ্চলের ছয় দেশ সফর করেছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু দক্ষিণ গাজার বিভিন্ন অংশে পানি সরবরাহ চালু করতে সম্মত হয়েছেন।