Print Date & Time : 8 September 2025 Monday 10:34 am

এশিয়ার শীর্ষ অর্থনৈতিক কেন্দ্র সিঙ্গাপুর

শেয়ার বিজ ডেস্ক:যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রে সফর করেছেন। যুক্তরাষ্ট্রে এই প্রথম সফরে তিনি দুই দেশের মধ্যকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির ওপর গুরুত্ব দেন। তার আশঙ্কা কয়েক বছরের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। খবর: ডেইলি সাবাহ।

ট্রাস বলেছেন, ট্রান্স-আটলান্টিক চুক্তি তার কাছে প্রথম অগ্রাধিকার নয়। কেননা তার পূর্বসূরি কনজারভেটিভ পার্টির দুই প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন ও থেরেসা মে এই চুক্তির বিষয়ে তেমন কোনো উল্লেখজনক কাজ করেননি। তারা

ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে বেরিয়ে আসার পুরস্কারস্বরূপ এই চুক্তি ঝুলিয়ে রেখেছিলেন।

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৭তম অধিবেশনে যোগ দিতে নিউইয়র্কে যাওয়ার আগে বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের লিজ বলেন, সেখানে এখনই কোনো চুক্তি হচ্ছে না এবং শিগগির কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর ব্যাপারেও আমি আশাবাদী নই। এর পরিবর্তে ট্রান্স-প্যাসিফিক চুক্তির বিষয়ে আমি বেশি আগ্রহী। একই সঙ্গে ভারত ও উপসাগরীয় সহযোগিতা কাউন্সিলের (জিসিসি) দেশগুলোর সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে চাই।

ছয় দেশের জোট জিসিসির সদস্য হচ্ছেÑবাহরাইন, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। জোটের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের ৫০ বছরের শক্তিশালী অংশিদারি রয়েছে। এ দেশগুলোকে নিজেদের বাণিজ্যিক উন্নতির জন্য অগ্রাধিকার দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী।

দুই সপ্তাহ আগে মসনদে বসার পর লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে ট্রান্স-আটলান্টিক বাণিজ্য নিয়ে ট্রাসের বৈঠক হওয়ার কথা ছিল, যা পরে স্থগিত করা হয়। যুক্তরাজ্যের সদ্যপ্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে লন্ডনে এসেছিলেন জো বাইডেন। নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সমাবেশে তাদের সরাসরি বৈঠক হবে। বৈঠকের আগে ট্রাসের মুখপাত্র পুনর্ব্যক্ত করেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যচুক্তিকে প্রাধান্য দিচ্ছি না, যদিও যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বৃহৎ বাণিজ্য অংশীদার এবং আমরা অর্থনৈতিক সম্পর্ক মজবুত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আমরা বাণিজ্য চুক্তির পরিবর্তে রাশিয়ার আগ্রাসন নিয়ে আলোচনাকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমরা কতৃত্ববাদী যুগে বাস করতে চাই না। রাশিয়াকে কীভাবে একত্রে মোকাবিলা করা যায়, তা-ই আমাদের প্রধান আলোচনার বিষয়। আমাদের প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশ, যেমন ফ্রান্স, ইইউ, বাল্টিক দেশগুলো ও পোল্যান্ডকে নিয়ে রাশিয়াকে মোকাবিলা করতে চাই। এটাই এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। রাশিয়ার তেল ও গ্যাস কেনা বন্ধ করতে চায় ট্রাস প্রশাসন।

রাশিয়া ও চীনের বিরুদ্ধে এই একই অবস্থানে রয়েছে বাইডেন প্রশাসন। তবে বাণিজ্যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হলে যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের এমন পদক্ষেপে ভাটা পড়তে পারে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা। তবে ব্রেক্সিট (ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদ) সমর্থকদের

মতে, এই জোট ছেড়ে আসার ফলে বিশ্বের অন্য সব দেশের সঙ্গে সহজে বাণিজ্য করতে পারছে যুক্তরাজ্য। ২০২০ সালে ইইউ থেকে বেরিয়ে আসার পর যুক্তরাজ্য-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য আলোচনা শুরু হয়। তবে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড নিয়ে জটিলতার কারণে এই চুক্তি বিষয়ে গড়িমসি করতে থাকে যুক্তরাষ্ট্র। নর্দান আয়ারল্যান্ডই যুক্তরাজ্যের একমাত্র অংশ, যার সঙ্গে ইইউ দেশগুলোর সীমান্ত রয়েছে।

যুক্তরাজ্যভুক্ত নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও ইইউতে থেকে যাওয়া আয়ারল্যান্ডকে আলাদা করতে কীভাবে সীমান্ত তুলতে হবে, তার মীমাংসা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিধা রয়েছে। এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে দেশটি। বাইডেন তাই সতর্ক করে বলেন, ১৯৯৮ সালের গুড ফ্রাইডে চুক্তি মেনে চলতে হবে, সবাইকে যাতে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের শান্তি প্রক্রিয়া বহাল থাকে।

দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য চুক্তি ফিকে হয়ে এলেও স্বতন্ত্রভাবে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যগুলোর সঙ্গে চুক্তি করতে চাইছে যুক্তরাজ্য। এখন পর্যন্ত ইন্ডিয়ানা ও নর্থ ক্যারোলিনা অঙ্গরাজ্যের সঙ্গে

তাদের বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। ট্রাস চান, কনজারভেটিভ পার্টির নেতারা দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা করতে করতে করহার কমানো, বাণিজ্য-সহায়ক আইন প্রণয়ন ও বিনিয়োগে আকৃষ্ট করবেন। তবে রানির মৃত্যুতে তার রাজনৈতিক পরিকল্পনা বেশ পিছিয়ে গেছে।