এসএসসি কবে, সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি: শিক্ষামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বন্যার কারণে পিছিয়ে যাওয়া এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা কবে হবে, সে বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বন্যায় আমাদের অনেক শিক্ষার্থীর বইপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাদের নতুন বই দিতে হবে। আমরা এখন পুরো নিরূপণ করছি যে, আমাদের কত পরীক্ষার্থীকে নতুন করে বই দিতে হবে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা দেখছি, হিসাব করছি, যদি প্রয়োজন হয় তাহলে বইও ছাপিয়ে ফেলব। তারপর আমরা আমাদের পরীক্ষার্থীদের হাতে বইগুলো পৌঁছে দেব, যাদের বইগুলো নষ্ট হয়েছে।

বই দেয়ার পর প্রস্তুতি নেয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের অন্তত ২ সপ্তাহ তাদের সময় দিতে হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, এটা আমাদের টাইমলাইন। কিন্তু এটা কোথায় গিয়ে ঠেকবে এটা এই মুহূর্তে বলা সম্ভব নয়।”

মহামারির কারণে পিছিয়ে যাওয়া এসএসসি ও সমমানের লিখিত পরীক্ষা এবার ১৯ জুন শুরু করে ৬ জুলাই শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু জুনের মাঝামাঝি সময়ে প্রবল বর্ষণ আর উজানের ঢলে সিলেট অঞ্চল এবং উত্তরের কয়েকটি জেলায় ব্যাপক বন্যা দেখা দিলে সরকার ১৭ জুন পরীক্ষা স্থগিতের ঘোষণা দেয়।

সারাদেশে ২০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা দেবে। এর মধ্যে বন্যাকবলিত জেলা সুনামগঞ্জে ২৩ হাজার ৭৫২ জন এবং সিলেটে ৪৩ হাজার ৮৪৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে।

বন্যার পানি অনেকটা নেমে গেলেও সুনামগঞ্জের প্রত্যন্ত এলাকায় এখনও কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখনও পানিতে নিমজ্জিত। কোনো কোনো এলাকার স্কুল এখনও দুর্গতদের আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহƒত হচ্ছে।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, আমরা খোঁজ রাখছি নিয়মিত। কিছু কিছু এলাকায় শহর থেকে পানি নেমে গেছে। গ্রাম পর্যায়ে এখনও কোথাও কোথাও হয়তো আছে, সেটাও নেমে যাবে। কিন্তু ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে কিছু জায়গায়। আমাদের অনেক পরীক্ষার্থী আমাদের কাছে তথ্যও আসছে… বইপত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবার বেড়ে গেলেও আপাতত স্কুল বন্ধের কোনো পরিকল্পনা হয়নি বলে জানান দীপু মনি।

তিনি বলেন, স্বাস্থ্য বিভাগের সঙ্গে কথা বলে যখন শিশুদের ভ্যাকসিনের বিষয়টি নিশ্চিত হতে পারব, তারপর পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে আমরা চিন্তা করতে পারব। এটা ঠিক যে, সংক্রমণ বাড়ছে। আমাদের সচেতন হতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখব কি না, আমাদের তো ১২ বছরের ওপরে সবার টিকা দেয়া আছে। ১২ বছরের নিচের টিকা যদি আমরা দেয়ার ব্যবস্থা করে ফেলতে পারি, তাহলে হয়তো সেটার আর প্রয়োজন হবে না। যেহেতু আমরা চাই যতটা সম্ভব স্কুল খোলা রেখেই আমরা আমাদের সমস্যা সমাধানের দিকে যাবে। কাজেই এ মুহূর্তে স্কুল বন্ধের কথা আমরা ভাবছি না বরং অনেক বেশি সচেতন থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষা কার্যক্রমটাকে চালিয়ে নেয়ার কথা ভাবছি। তবে সবকিছুই যে ‘পরিস্থিতির ওপর’ নির্ভর করবে, সে কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, আমার শিক্ষার্থী, তার পরিবার ও শিক্ষকের জীবনটাই আমাদের কাছে জরুরি।”