আরিফ হোসেন, বরিশাল: প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল শহরে নির্মিত শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার এ বছরই চালু হচ্ছে। সেন্টারের নির্মাণকাজ প্রায় ৮৫ ভাগ শেষ হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের ধারণা, এটি চালু হলে প্রায় দুই হাজার দক্ষ ও প্রশিক্ষিত আইটি উদ্যোক্তা সৃষ্টি করা যাবে।
জানা যায়, ২০১৭ সালে শুরু হয় শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের নির্মাণকাজ। এটা চালু হলে মানবসম্পদের উন্নয়ন এবং আইটি সেক্টরে দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা সক্ষম হবে দক্ষিণাঞ্চলে। গত ৩১ ডিসেম্বর এটি চালু হওয়ার কথা থাকলেও করোনার কারণে বিলম্ব হয় নির্মাণকাজ। আশা করা হচ্ছে, এ বছরে নির্মাণকাজ শেষ হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে দক্ষ উদ্যোক্তা তৈরিতে সহায়তা করতে এ প্রতিষ্ঠান যেমন ভূমিকা রাখবে, তেমনি এর মাধ্যমেই একাডেমিক ও আইটিশিল্পের মধ্যে প্রতিষ্ঠা করা যাবে শক্তশালী লিংকেজ।
প্রকল্পের সহকারী প্রকৌশলী মো. সুমন জানান, এ প্রকল্পে প্রথম পর্যায়েই দুই হাজার দক্ষ আইটি উদ্যোক্তা তৈরি করা যাবে। দক্ষিণের যুবসমাজের আÍকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে এ কেন্দ্রে থাকবে গ্রাফিক ডিজাইন, ভিডিও এডিটিং, ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপমেন্ট, ওয়েবসাইট ডিজাইন, টু-ডি ও থ্রি-ডি এনিমেশন, সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন, ডিজিটাল মার্কেটিং, ই-কমার্স কন্ডাক্টিংসহ প্রযুক্তিনির্ভর উন্নতর প্রশিক্ষণ।
বরিশালে বিভিন্ন সেক্টরে প্রযুক্তিতে প্রশিক্ষণরতদের যেমন উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে তৈরি করা হবে, তেমনি তারুণ্যকে গড়ে তোলা হবে আÍনির্ভর করে, এমনটাই ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের অধীন অন্তত দুই লাখ তরুণ প্রতি বছর মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে থাকে। একই সঙ্গে মাদরাসা শিক্ষা থেকে যুক্ত হয় আরও অন্তত ৫০ হাজার শিক্ষার্থী। তাদের একটি বড় অংশই প্রযুক্তির বাইরে রয়ে যায়। শেখ কামাল আইটি কেন্দ্র চালু হলে এ ক্ষেত্রে ঘটবে বিশাল পরিবর্তন। তবে প্রশিক্ষিত দক্ষ জনশক্তিকে কর্মসংস্থান তৈরিতে সার্বিক সহায়তা করার দাবি স্থানীয় উদ্যোক্তাদের। মাঠপর্যায়ে সহযোগিতা না পাওয়ায় অনেক উদ্যোক্তারই উদ্যোগে ভাটা পড়ে যায় বলে জানিয়েছেন আইটি উদ্যোক্তা ও ইঞ্জিনিয়ার বিডি নেটওয়ার্কের সিইও প্রকৌশলী জিহাদ রানা।
তবে শেখ কামাল আইটি সেন্টার উদ্বোধনের পর তৃণমূল পর্যায়ে সব সমস্যা সমাধান করে এর সুফল তরুণদের হাতে পৌঁছে দেয়ার কথা বলছে বরিশাল জেলা প্রশাসন। তাদের মতে, তথ্য ও প্রযুক্তির উন্নয়নে দক্ষিণের জনপদে এ কেন্দ্র হবে একটি মাইলফলক। নগরীর নথুল্লাবাদ এলাকায় প্রায় আড়াই একর জমির ওপর নির্মিত এ কেন্দ্রেটিতে থাকবে ছয়তলা অত্যাধুনিক ভবন। প্রতি ফ্লোরের আয়তন হবে ছয় হাজার বর্গফুট। প্রকল্প চলাকালে এখান থেকে ১৬ হাজার জন প্রশিক্ষণ নেবে আইটির ওপর।