ওষুধ ছাড়া অন্যান্য বড় মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদরে পতন

শেখ আবু তালেব: বড় কোনো কারণ ছাড়াই গত সপ্তাহে অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারদরে পতন হয়েছে। এর ফলে শুধু ওষুধ ও রসায়ন ছাড়া বড় মূলধনি সব খাতের শেয়ারদরে পতন হয়েছে। বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমেছে দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই)। একই সঙ্গে সপ্তাহ শেষে পতন হয়েছে ডিএসইর সব সূচকের।
ডিএসইর সাপ্তাহিক তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য উঠে এসেছে। জানা গেছে, ২৯ আগস্ট শেষ হওয়া সপ্তাহে ডিএসইতে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ কমেছে আগের চেয়ে দুই দশমিক ছয় শতাংশ। বড় মূলধনি খাতের সবগুলোতেই নেতিবাচক ধারা দেখা গেছে। শুধু ওষুধ ও রসায়ন খাতের শেয়ারদর ইতিবাচক ধারায় থেকে সর্বোচ্চ শূন্য দশমিক ৭১ শতাংশ গেইন করেছে। এর ফলে ডিএসইতে মোট লেনদেন আগের সপ্তাহের চেয়ে কমেছে ছয় শতাংশ।
এ সময়ে দেশের পুঁজিবাজারে বড় ধরনের কোনো তথ্য বা নির্দেশনা আসেনি কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে। উল্টো ব্যাংক খাতে আমানত বৃদ্ধি পাচ্ছে, এমন সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে। প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে। তবে পর্যালোচনা বলছে, বিদেশিদের বিনিয়োগ জুলাই মাসে কিছুটা কমেছে, কিন্তু আগস্ট শেষে হঠাৎ করেই বাজারে নেতিবাচক প্রভাব পড়ার কথা নয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বিদেশি বিনিয়োগ হুট করেই কমেনি। এটি বৃদ্ধি পায় ও কমে যায় ধীরে ধীরে। পুঁজিবাজারে প্রভাবও ধীরে ধীরে পড়তে শুরু করে।
গত সপ্তাহে ডিএসইতে মোট ৩৫৭টি সিকিউরিটিজ লেনদেনে অংশগ্রহণ করে। এর মধ্যে শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ৪৮টির বা ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ, শেয়ারদর কমে ৩০২টির বা ৮৪ দশমিক ৬০ শতাংশ, দর অপরিবর্তিত ছিল পাঁচটির এবং লেনদেন হয়নি দুটি সিকিউরিটিজের।
এই সময়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সূচক হারায় ১৪১ পয়েন্ট বা দুই দশমিক ৬৯ শতাংশ। অপর দুটি সূচকেও পতন হয়। এতে বাজার মূলধন হারায় এক দশমিক ৯৬ শতাংশ বা সাত হাজার ৫৯৪ কোটি টাকা।
সাপ্তাহিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইর মোট লেনদেনে সর্বোচ্চ ২১ শতাংশ অবদান রাখে ওষুধ ও রসায়ন খাত। এর ১৭ শতাংশ অবদান রাখে প্রকৌশল খাত। এ সময়ে ১০ শতাংশ অবদান রাখে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং বস্ত্র খাতের শেয়ার। এছাড়া লেনদেনে সাধারণ বিমা খাত ছয় শতাংশ, জীবন বিমা খাত দুই শতাংশ, সিরামিক খাত চার শতাংশ, আইটি খাত তিন শতাংশ ও মিউচুয়াল ফান্ড খাত ছিল তিন শতাংশ।
জানা গেছে, গত সপ্তাহে ডিএসইতে শেয়ারদর বৃদ্ধির তালিকায় শীর্ষ ১০টির তালিকায় প্রথমে রয়েছে রেকিট বেনকিজার। গত সপ্তাহে কোম্পানির সর্বোচ্চ দর বেড়েছে ১৮ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এর পরই রয়েছে প্রাইম ফিন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড, ওয়াটা কেমিক্যালস, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লাইন (জিএসকে), সিলকো ফার্মাসিউটিক্যালস, স্ট্যান্ডার্ড সিরামিক, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, এস এস স্টিল, জেনেক্স ইনফোসিস ও মুন্নু জুট স্টাফলার্স।
অপরদিকে শীর্ষ ১০ লুজার বা দর পতনের শীর্ষে রয়েছে গ্লোবাল ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি। গত সপ্তাহে কোম্পানির দর কমেছে ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। এছাড়া দরপতনের তালিকায় রয়েছে ভিএফএস থ্রেড ডায়িং, তুং হাই নিটিং, জেনারেশন নেক্সট, ফ্যামিলি টেক্সটাইল, আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক লিমিটেড, কপারটেক ইন্ডাস্ট্রিজ, এসইএমএল এফবিএলএসএল গ্রোথ ফান্ড, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স ও অ্যাপোলো ইস্পাত।