এসএম রুবেল, কক্সবাজার: প্রধান সড়ক দখল করে সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি মালামাল বহনকারী ট্রাক। সেসব ট্রাকের পাশে ঠেলাগাড়ি রেখে মালামাল নামানোর কাজ করা হচ্ছে কয়েক ঘণ্টা ধরে। সঙ্গে কুলিরাও কাঁধে করে মালামাল নামাচ্ছেন সেসব গাড়ি থেকে। একদিকে মালামাল ওঠানামার কাজ চলছে, অন্যদিকে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র যানজট। এমন জনদুর্ভোগের দৃশ্যের দেখা মেলে কক্সবাজার জেলার মহেশখালী উপজেলার বিভিন্ন বাজারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সকাল থেকেই বেলা পর্যন্ত চট্টগ্রাম শহরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে মালামাল বহনকারী গাড়ি মহেশখালীর বিভিন্ন বাজারে প্রবেশ করে। এসব গাড়ি থেকে মালামাল ওঠানামা করার কোনো নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করা হয়নি। মনগড়া নিয়মে সড়কের যে কোনো জায়গা দখল করেই মালামাল ওঠানো ও নামানোর কাজ করেন ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়রা জানান, রাস্তা দখল করে মালামালের গাড়ি রাখা, যততত্র পার্কিং করা, সড়কঘেঁষে দোকানের মালপত্র রাখা, সড়কের ওপর মাছবাজার বসানো, ঝুপড়ি দোকান নির্মাণসহ নানা স্থাপনা তৈরি করে রাস্তায় যানবাহন চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। দীর্ঘদিন এসব অনিয়ম চলে এলেও প্রশাসন কিংবা চেয়ারম্যানরা কোনো ব্যবস্থা নেননি।
তারা আরও জানান, প্রশাসনের নীরব ভূমিকার কারণে দিন দিন প্রধান সড়কটি দখল হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে বাড়ছে তীব্র যানজট এবং সংঘটিত হচ্ছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, মাতারবাড়ী সিএনজি স্টেশন এবং পুরোনো ও নতুনবাজার, কালারমারছড়া বাজার, নুনাছড়ি বাজার, হোয়ানক টাইমবাজার, বড়মহেশখালী নতুনবাজার ও গোরকঘাটা বাজারের বিভিন্ন অংশে সড়কের ওপর গাড়ি থামিয়ে মালামাল ওঠানামার কাজ করা হচ্ছে। এসব কাজে নিয়োজিত কুলিরা জানান, বাজার কমিটি কিংবা কোনো কর্তৃপক্ষ গাড়ি থেকে মালামাল ওঠানামা করার জায়গা ঠিক করে দেয়নি। আর প্রতিদিন রাস্তার পাশে এসব কাজ করলেও তারা বাধার সম্মুখীন হননি।
সাহেদ, সৌরভ, মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন পথচারী জানান, সড়কের নানা ধরনের বিশৃঙ্খলার কারণে যানজট লেগেই থাকে। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন একটু আন্তরিক হলেই এই সমস্যার নিরসন হতো। কিন্তু অনিয়ম বাড়লেও কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকায় রয়েছে। তারা আরও জানান, যানজটে আটকে পড়ে অনেক রোগীর হাসপাতালে পৌঁছাতে দেরি হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলা ও হার্টের রোগীদের এই বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়।
যাত্রীবাহী গাড়ির চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কে যানজটে পড়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে দেরি হয় তাদের। এছাড়া দুর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়েই গাড়ি চালাতে হয়। বিশেষ করে সড়কের ওপর দাঁড়ানো গাড়ি ও সড়কঘেঁষে নির্মিত দোকানের কারণে গাড়ি চালাতে বাধার সৃষ্টি হয়।
তবে এ বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ ইয়াসিনের কাছে সড়কের বিশৃঙ্খলা নিরসনের বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের ভূমিকা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি কোনো ধরনের মন্তব্য করেননি।