শেয়ার বিজ ডেস্ক: পূর্ব আফ্রিকার দেশ ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক (ডিআর) কঙ্গোর উত্তর কিভু প্রদেশে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে আগ্নেয়গিরি নাইরাগঙ্গো। শনিবার থেকে পর্বতের জ্বালামুখ থেকে লাভা ছিটকে বেরিয়ে শহর পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ছে। অগ্ন্যুৎপাতের ফলে লাল হয়ে উঠেছে নাইরাগঙ্গোর আশপাশের এলাকা ও রাজধানী গোমা শহরের আকাশ। এদিকে জীবন বাঁচাতে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছেন হাজার হাজার স্থানীয় অধিবাসী। সরকারিভাবেও তাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। খবর: বিবিসি, রয়টার্স, গার্ডিয়ান।
স্থানীয়রা বলছেন, আগ্নেয়গিরির লাভা পার্শ্ববর্তী দেশ রুয়ান্ডার দিকেও ছড়িয়ে যাচ্ছে। এতে কঙ্গো ছেড়ে রুয়ান্ডায় আশ্রয় নিচ্ছেন কয়েক হাজার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ। গতকাল সকালে রুয়ান্ডার সরকার জানিয়েছে, রোববার পর্যন্ত সাত হাজার মানুষ সীমান্ত অতিক্রম করে রুয়ান্ডায় প্রবেশ করেছে।
গতকাল ডিআর কঙ্গোর সরকারি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গোমা শহরের অধিকাংশ মানুষকে এরই মধ্যে নিরাপদ এলাকায় নেয়া হয়েছে, বাকিদেরও দ্রুত সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।
প্রসঙ্গত, গোমা শহরে প্রায় ২০ লাখ লোক বসবাস করছেন। শহর থেকে নাইরাগঙ্গো আগ্নেয়পর্বতের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার (ছয় মাইল)। সর্বশেষ এ পর্বতটিতে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছিল ২০০২ সালে। সে সময় অগ্ন্যুৎপাতের ফলে মারা গিয়েছিলেন প্রায় ২৫০ মানুষ, বাস্তুহারা হয়েছিলেন এক লাখ ২০ হাজার। তার আগে বিস্ফোরণ হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। সে সময় মারা গিয়েছিলেন ছয় শতাধিক মানুষ।
কেরিন এমবালা নামে শহরের এক বাসিন্দা জানান, বাতাসে সালফারের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। সামান্য দূরেই পাহাড় থেকে আসা আগুনের শিখা দেখা যায়।
প্রায় ২০ বছর নীরব থাকার পর হঠাৎ নাইরাগঙ্গো সক্রিয় হয়ে ওঠায় গোমা শহরের মানুষদের মধ্যে দেখা দিয়েছে তীব্র আতঙ্ক। জাচারি পালুকু নামে গোমার এক বাসিন্দা জানান, আমরা ব্যাপকভাবে মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছি। প্রত্যেকেই আতঙ্কগ্রস্ত। সবাই ছুটছে। আমরা সত্যিই জানি না, আমাদের কী করা উচিত।
গোমার বাসিন্দা দারিও তেড়েস্কো বলেন, জ্বালামুখ ছাড়াও এর কাছে পর্বতের একটি অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেই ফাটল থেকেও নিঃসৃত হচ্ছে লাভা। পর্বতের যেদিকের ফাটল থেকে লাভা বের হচ্ছে, সেটি অব্যাহত থাকলে শহরের বিমানবন্দর পর্যন্ত লাভা এসে পড়তে পারে।
গতকাল রোববার কঙ্গোর যোগাযোগমন্ত্রী প্যাটট্রিক মুইয়াইয়া এক টুইট বার্তায় বলেন, গোমা শহরকে খালি করার ঘোষণা কার্যকর করা হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার বিষয়ে আলোচনা করছে। এদিকে কঙ্গোতে নিযুক্ত জাতিসংঘ মিশনের হেলিকপ্টার ওই এলাকায় পাঠিয়ে বিস্ফোরণের বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। জাতিসংঘ মিশনের পক্ষ থেকে বলা হয়, আগ্নেয়গিরির লাভা রুয়ান্ডার দিকে যাচ্ছে।