কঙ্গোর যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, বেলজিয়াম ও রুয়ান্ডা দূতাবাসে হামলা

‘দশকের পর দশক ধরে কঙ্গোয় সংকট চলছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এর সমাধান করা যাবে না’

শেয়ার বিজ ডেস্ক: গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে ২৩ মুভমেন্ট (এম২৩) বিদ্রোহীদের আক্রমণের জেরে আশু ব্যবস্থা নেয়ার দাবিতে দেশটির রাজধানী কিনশাসায় ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, রুয়ান্ডাসহ কয়েকটি দেশের দূতাবাসে হামলা চালিয়েছেন। খবর: আল জাজিরা।

কিনশাসায় গত মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, কেনিয়া ও রুয়ান্ডার দূতাবাসে বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় ফরাসি দূতাবাসে আগুন জ্বলতে ও কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যায়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোয় চলমান সংঘাত নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নিষ্ক্রিয় আচরণ করছে। এমন আচরণের নিন্দা জানান তারা। সেই সঙ্গে যেসব দেশ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রতি রুয়ান্ডার সমর্থনের অভিযোগ এনেছে, সেসব দেশের দূতাবাস ঘিরে বিক্ষোভ করা হয়েছে। যদিও রুয়ান্ডা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জঁ নোয়েল বাহো এক এক্স পোস্টে বলেন, দূতাবাসে এমন হামলা ‘অগ্রহণযোগ্য’। তিনি আরও জানান, বিক্ষোভের সময় কিছু সময়ের জন্য দূতাবাস ভবনে আগুন লাগে। পরে তা নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের হটাতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এ সময় বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা সড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে দেন। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান।

এক বিবৃতিতে কেনিয়ার বৈদেশিক ও প্রবাসীবিষয়ক মন্ত্রী মুসালিয়া মুদাভাদি বলেন, কিনশাসায় দূতাবাস ও কর্মীদের ওপর দাঙ্গাকারীদের হামলার ঘটনায় কেনিয়া বেশ উদ্বিগ্ন। এভাবে সহিংস হামলা চালানো, লুটপাট ও সম্পদ ধ্বংস করা আন্তর্জাতিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘন।
রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে কথা বলার সময় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর যোগাযোগমন্ত্রী প্যাট্রিক মুয়ায়া বিক্ষোভকারী ব্যক্তিদের প্রতি শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করতে এবং স্বীকৃত কূটনৈতিক অবকাঠামোয় সহিংসতা থেকে বিরত থাকতে আহ্বান জানান। এরপর তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সংঘাত প্রশমনের লক্ষ্যে গতকাল জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো ও রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্টদের সঙ্গে পৃথকভাবে কথা বলেছেন। জাতিসংঘের মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এ কথা জানিয়েছেন। ডুজারিক বলেন, কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের এই সংকট দশকের পর দশক ধরে চলছে। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এর সমাধান করা যাবে না। উল্লেখ্য, গত মার্চ এম২৩ নামের বিদ্রোহী গোষ্ঠীটি গত সোমবার গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলের গোমা শহর নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করে। এটা দেশটির নর্থ কিভু প্রদেশের সবচেয়ে বড় শহর। গত সপ্তাহ থেকে ওই অঞ্চলে ব্যাপক সংঘাত দেখা দিয়েছে। এই সংঘাতে অন্তত ১৭ জন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।