Print Date & Time : 10 September 2025 Wednesday 8:51 pm

কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে শক্তিশালী করতে হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশের শহরগুলোয় প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২৫ হাজার টন বর্জ্য উৎপাদিত হয়, যার প্রায় এক-চতুর্থাংশ বর্জ্য শুধু ঢাকা শহরেই উৎপাদিত হয়। প্রতিদিন উৎপাদিত এ বিপুল পরিমাণ বর্জ্যরে একটি বৃহত্তর অংশই আবার থেকে যাচ্ছে অসংগৃহীত, যা নিক্ষিপ্ত হচ্ছে নগরের আশপাশের রাস্তা, খাল, বিল, জলাধার, নি¤œাঞ্চল ইত্যাদি জায়গায়। প্রায় ৩৪ শতাংশ মানুষ নোংরা পরিবেশের কারণে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হন। ২৭ শতাংশ মানুষ ময়লা পানির জন্য এবং ১৯ শতাংশ জলাবদ্ধতার কারণে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে। সরকারের বর্জ্য সংগ্রহে বাজেট থাকলেও ব্যবস্থাপনায় কোনো বাজেট নেই। ফলে জনস্বাস্থ্য হুমকিতে রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে তুলতে হবে।

জাতীয় প্রেস ক্লাবে গতকাল ঢাকা কলিং প্রকল্পের পক্ষ থেকে আয়োজিত ‘কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যগত প্রভাব’ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওরের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার রেবেকা সান-ইয়াত, মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা কলিং প্রকল্পের কারিগরি পরামর্শক সুমন আহসানুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী, পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, দুস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক ডা. দিবালোক সিংহ, বাংলাদেশ রিসার্চ সেন্টার ফর ইন্ডিজেনাস নলেজের নির্বাহী পরিচালক সুকান্ত সেন, এনডিবিইউএসের সাধারণ সম্পাদক ফাতেমা আক্তার, প্রোমোটিং অ্যাডভোকেসি অ্যান্ড রাইটসের চিফ অব পার্টি মইনুদ্দীন আহমদ এবং ডিএসকের পরিচালক ওয়াস এমএ হাকিম প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, কঠিন বর্জ্যরে অব্যবস্থাপনার ফলে পরিবেশে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য, স্বল্প এবং দীর্ঘ মেয়াদে ঝুঁকির মধ্যে থাকে। জ্বর, সর্দি, মাথাব্যথা, চর্মরোগ, ইউরিন ইনফেকশন, প্রস্রাবে জ্বালাপোড়াসহ কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্যানসার, জন্ডিস, নিউমোনিয়া, টাইফয়েড রোগের মতো বিপজ্জনক রোগের বিষয়টিও গবেষণায় উঠে এসেছে। এ ধরনের রোগ সাধারণত অবিশুদ্ধ ও অনিরাপদ পানি খাওয়া, অনেকক্ষণ ময়লার মধ্যে থাকা ইত্যাদি কারণে হয়ে থাকে। প্রায় ৩৪ শতাংশ মানুষ নোংরা পরিবেশের কারণে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হন। ২৭ শতাংশ মানুষ ময়লা পানির জন্য এবং ১৯ শতাংশ জলাবদ্ধতার কারণে এ ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে বলে গবেষণায় তথ্য পাওয়া গেছে।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গ্রামের মানুষের তুলনায় শহরের বস্তিবাসীদের শিশুমৃত্যুর হার বেশি। যেখানে বস্তিতে প্রতি হাজারে ৫৭ শিশুর মৃত্যু হয়, সেখানে গ্রামে হাজারো মারা যায় ৪৯ জন। এসব রোগ-শোকে শারীরিক ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীরা সবচেয়ে বেশি অবহেলিত। পরিবারে তাদের বোঝা বলে মনে করা হয়। ফলে অনেকেই তাদের ভিক্ষাবৃত্তির সঙ্গে যুক্ত করে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রান্তিক নাগরিকরা শুধু স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যেই থাকে না, বরং তাদের অর্থনৈতিক অবস্থার ওপরও পড়ে নেতিবাচক প্রভাব। আবার সুচিকিৎসার অভাব তাদের স্বাস্থ্যগত নানারকম জটিলতা তৈরি করে। এগুলো তাদের মানসিক অবস্থাকে বিপর্যস্ত করে তোলে।