প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসজনিত রোগের (কভিড-১৯) বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারেন ইমাম ও ধর্মীয় নেতারা। যেসব পরিবারে স্মার্টফোন ও টেলিভিশন নেই, এমন লাখ লাখ মানুষের কাছে ইমামরা মসজিদের মেগাফোনের মাধ্যমে জীবন রক্ষায় সহায়ক তথ্য পৌঁছে দিচ্ছেন।
রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরসহ সারা বাংলাদেশের ধর্মীয় নেতারা নভেল করোনাভাইরাস (এনকভ১৯) তথা কভিড-১৯-এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে সম্মত হয়েছেন।
মসজিদের মুয়াজ্জিনরা আজান দেওয়ার জন্য ঐতিহ্যগতভাবে মসজিদের মেগাফোন ব্যবহার করেন। তবে এখন জনস্বাস্থ্য-সম্পর্কিত বার্তা প্রচারের কাজে ইমামরা এটি ব্যবহার করছেন।
ইউনিসেফের কমিউনিকেশন ফর ডেভেলপমেন্ট স্পেশালিস্ট শেখ মাসুদুর রহমান ইমামদের ‘দক্ষ যোগাযোগকারী’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, মসজিদে খুতবা দেওয়ার সময় মুসল্লিরা এবং মসজিদের মেগাফোন ব্যবহারকালে এলকাবাসী তাদের বার্তা শোনেন। কভিড-১৯-সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ইমামদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হলে তারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে কমিউনিটিতে সেগুলো প্রচার করতে পারেন।
মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ইমামরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। কারণ তারা লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছেন। ২০১৭ সাল থেকে ইউনিসেফ ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অধীন সরকারি সংস্থা ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ (আইএফবি) নারী ও শিশুদের উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করছে।
বর্তমানে প্রায় পাঁচ লাখ ইমাম ও ধর্মীয় নেতা দেশব্যাপী কভিড-১৯-সম্পর্কিত তথ্য প্রচার করছেন। সাবানপানি দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, হাঁচি-কাশি বিষয়ে ইসলামের শিক্ষা এবং বাড়িতে লকডাউনে থাকাকালে কোরআন শরিফ ও হাদিস থেকে কীভাবে উপকার পাওয়া যায়Ñএসব ছাড়াও স্বাস্থ্যবিধি ও সংক্রমণ প্রতিরোধ-সম্পর্কিত মূল বার্তা প্রচারে তারা সহায়তা করছেন।
শহরাঞ্চলের তুলনায় বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চল ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষের রেডিও শোনা, টেলিভিশন দেখা বা সংবাদপত্র পড়ার সুযোগ নেই।
মাসুদুর রহমান জানান, এসব প্রত্যন্ত অঞ্চলে দিনে পাঁচবার আজানের সময় ইমামরা এই মেগাফোন ব্যবহার করেন এবং তাই এটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এলাকার মানুষ ইমামদের কথা শোনেন এবং মানুষের কাছে জনগুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রচারের ক্ষেত্রে এই মেগাফোন একটি কার্যকর মাধ্যম।
ইউনিসেফের তথ্য অবলম্বনে