কভিডে শনাক্তের হার সাড়ে ছয় মাস পর পাঁচ শতাংশের নিচে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে সাড়ে ছয় মাস পর দৈনিক নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত কভিড রোগীর হার পাঁচ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গতকাল মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দেশে সোয়া ৩৩ হাজার নমুনা পরীক্ষা করে এক হাজার ৫৬২ জনের দেহে কভিড শনাক্ত হয়েছে। তাতে নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়াচ্ছে চার দশমিক ৬৯ শতাংশ।

এর আগে সর্বশেষ শনাক্তের হার পাঁচের নিচে ছিল ৮ মার্চ। সেদিন শনাক্তের হার ছিল চার দশমিক ৯৮ শতাংশ শতাংশ। আর মঙ্গলবারের চেয়ে কম শনাক্তের হার ছিল সর্বেশষ ৭ মার্চ। সেদিন নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্তের হার ছিল চার দশমিক তিন শতাংশ।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, দেশে কভিডে আক্রান্তদের মধ্যে গত এক দিনে আরও ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে।

নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ৮০০ জন। তাদের মধ্যে ২৭ হাজার ২৭৭ জনের মৃত্যু ঘটিয়েছে করোনাভাইরাস।

সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর আগের ২৪ ঘণ্টায় এক হাজার ৫৫৫ জন নতুন রোগী শনাক্ত ও ২৬ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল। সে হিসেবে গত এক দিনে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা সামান্য বেড়েছে, মৃত্যুর সংখ্যা অপরিবর্তিত।

গত এক দিনে শুধু ঢাকা বিভাগে এক হাজার ৩২ জনের মধ্যে কভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছে, যা দিনের মোট শনাক্তের ৬৬ শতাংশের বেশি। যে ২৬ জন গত এক দিনে মারা গেছেন, তাদের ১৫ জনই ছিলেন ঢাকা বিভাগের।

সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন এক হাজার ৬০৩ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ চার হাজার ৭০৯ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, গত এক দিনে সারা দেশে মোট ৩৩ হাজার ৩২৭টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৪টি নমুনা।

এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৬ দশমিক ২৭ শতাংশ, মৃত্যুহার এক দশমিক ৭৬ শতাংশ।

গত এক দিনে যারা মারা গেছেন তাদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৫ জন বাদে চট্টগ্রাম বিভাগে তিন, রাজশাহী বিভাগে তিন, খুলনা বিভাগে দুই, সিলেট বিভাগে এক ও ময়মনসিংহ বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন একজন।

গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ১৫ জনের বয়স ছিল ৬০ বছরের বেশি। পাঁচজনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, তিনজনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে, দুজনের বয়স ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ও একজনের বয়স ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ছিল।

তাদের মধ্যে ১৬ জুন ছিলেন পুরুষ, ১০ জন নারী। ২১ জন সরকারি হাসপাতালে ও চারজন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। একজনের মৃত্যু হয়েছে বাড়িতে চিকিৎসাধীন অবস্থায়।

বাংলাদেশে কভিডের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়ে গত বছর ৮ মার্চ। গত ৩১ আগস্ট তা ১৫ লাখ পেরিয়ে যায়। এর আগে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ব্যাপক বিস্তারের মধ্যে ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হন।

প্রথম রোগী শনাক্তের ১০ দিন পর গত বছর ১৮ মার্চ দেশে প্রথম মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৯ আগস্ট তা ২৬ হাজার ছাড়িয়ে যায়। তার আগে ৫ ও ১০ আগস্ট ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারির মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।

বিশ্বে কভিডে মৃতের সংখ্যা ইতোমধ্যে ৪৭ লাখ ছাড়িয়েছে। আর শনাক্ত হয়েছেন ২২ কোটি ৯১ লাখের বেশি রোগী।