কভিড-১৯ নিয়ে শিশুসন্তানের সঙ্গে কীভাবে কথা বলতে হবে

খতিয়ে দেখতে হবে শিশু স্টিগমার শিকার হয়েছে বা ছড়াচ্ছে কি না: করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বর্ণবৈষম্যের ঘটনা ঘটেছে বলে অনেক খবর প্রকাশিত হয়েছে। তাই শিশুসন্তানও এ ধরনের বিদ্বেষের শিকার হচ্ছে কি না, বা তা ছড়াতে ভূমিকা রাখছে কি না, তা খতিয়ে দেখা গুরুত্বপূর্ণ। শিশুদের বুঝিয়ে বলতে হবে কোন মানুষ দেখতে কেমন, সে কোথা থেকে এসেছে বা কোন ভাষায় কথা বলে, তার সঙ্গে করোনাভাইরাসের কোনো সম্পর্ক নেই।

যদি তারা এ ধরনের আচরণের শিকার হয়, তাহলে যেন সংকোচ না করে তাদের আস্থাভাজন বড় কাউকে বিষয়টি সম্পর্কে জানায়। শিশুসন্তানকে বুঝিয়ে দিতে হবে, স্কুলে নিরাপত্তা ও বন্ধুসুলভ আচরণ সবারই প্রাপ্য। কাউকে হেনস্তা করা কখনোই ঠিক নয়। বরং একে অপরের প্রতি সহযোগিতা ও সহমর্মিতা বাড়াতে আমাদের সবারই দায়িত্ব রয়েছে।

বিপদে এগিয়ে আসা লোকজনের দিকে নজর: এটি শিশুদের জানা গুরুত্বপূর্ণ যে, এ সংকটকালে অনেক মানুষ সহমর্মিতা ও উদারতার হাত নিয়ে একজন আরেকজনের পাশে দাঁড়াচ্ছে, সহায়তা করছে। রোগের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে ও কমিনিউটিকে নিরাপদ রাখতে স্বাস্থ্যকর্মী, বিজ্ঞানী ও তরুণসহ অন্যরা যারা কাজ করছে, সে বিষয়ে তাদের সঙ্গে গল্প করতে হবে। সহƒদয় লোকজন যে তাদের সাহায্যের জন্য প্রস্তুত আছে, সেটা জানতে পারলে তারা অনেকখানি স্বস্তি ও সাহস পাবে।

নিজের যত্ন নেওয়া: পরিস্থিতির সঙ্গে নিজে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে পারলেই শিশুসন্তানদের সহায়তা করতে পারবেন। এসব খবরে বাবা-মায়ের কী প্রতিক্রিয়া ঘটে, তা থেকেই শিক্ষা নেবে শিশুসন্তান। তাই এ পরিস্থিতিতে বাবা-মা সুস্থ ও শান্ত আছেন দেখলে শিশুরাও স্বস্তি অনুভব করবে।

বড়রা উদ্বিগ্ন ও হতাশ বোধ করলে নিজের জন্য সময় দিতে হবে এবং সমাজে আস্থাভাজন মানুষ, বন্ধু ও অন্যান্য পরিবারের কাছে গিয়ে কথা বলতে হবে। আপনি নিজে যাতে চাঙা ও উজ্জীবিত থাকেন, সেজন্য কিছু সময় ব্যয় করতে হবে।

সতর্কতার সঙ্গে আলোচনায় সমাপ্তি টানা: এটি নিশ্চিত করা অভিভাবকদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, আমাদের সন্তানদের আমরা মানসিক যন্ত্রণার মধ্যে রাখছি না। আলোচনা শেষ করার সময় তাদের শরীরী ভাষা দেখে এবং স্বাভাবিকভাবে কথা বলছে কি না এবং শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক আছে কি না, তা দেখে তাদের উদ্বেগের মাত্রাটা বোঝার চেষ্টা করতে হবে।

শিশুসন্তানদের মনে করিয়ে দিন, যেকোনো সময় আপনার সঙ্গে তাদের আরও গুরুতর কোনো বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। তাদের বুঝিয়ে দিন, আপনি তাদের প্রতি যতœশীল, তাদের কথা শুনছেন এবং তারা যখনই উদ্বিগ্ন হবে তখনই আপনার সঙ্গে তা নিয়ে বিনা সংকোচে কথা বলতে পারবে।

ইউনিসেফের তথ্য অবলম্বনে