Print Date & Time : 1 September 2025 Monday 4:21 pm

কম ঝুঁকি, নিরাপদ ও বেশি মুনাফার জন্য ভরসা নৌ-বাণিজ্য

ইমদাদ ইসলাম:দেশে একটি জনপ্রিয় প্রবাদ আছে ‘আদার ব্যাপারী জাহাজের খবর নেয়ার দরকার কী?’ ব্রিটিশরা বাঙালিদের নিচ দৃষ্টিতে রেখেই কথাটি বলতেন। যদিও তখনকার তোষামোদকারী বাঙালিরা এটা শুনে খুশিতে ডগমগ হয়ে যেত। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সুফলে আজ সেই আদার ব্যাপারীরাই বিশাল বিশাল জাহাজের মালিক হয়েছে। তাদের মালিকানাধীন বিশাল বিশাল সমুদ্রগামী জাহাজ এখন বাণিজিক পণ্য নিয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের বড় বড় সামুদ্রিক বন্দরে নোঙর করছে। বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকা উড়িয়ে দক্ষতার সঙ্গে করছে বাণিজ্য, আর দেশের জন্য বয়ে আনছে সম্মান।

বাংলাদেশ ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে নদীমাতৃক দেশ। বাংলাদেশ পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ। উত্তরে হিমালয় পর্বত এবং দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের পরিবেশের ওপর গভীরভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে। দেশটির ওপর দিয়ে অসংখ্য নদনদী বয়ে গেছে। বাংলাদেশের ভূমিরূপ উত্তর থেকে দক্ষিণ দিকে ক্রমেই ঢালু হওয়ায় এসব নদ-নদী, উপনদী, শাখা নদীগুলো উত্তর দিক থেকে দক্ষিণে বঙ্গোপসাগর অভিমুখে প্রবাহিত হয়েছে। উত্তর-পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্বাংশের পাহাড়ি অংশ ব্যতীত সমগ্র বাংলাদেশ এসব নদ-নদীর পলি দ্বারা গঠিত সমভূমি। নদীমাতৃক বাংলাদেশের পরিচিতি কৃষিপ্রধান অর্থনীতির একটি দেশ হিসেবে। কৃষির বিকাশে নদীর অবদান যেমন অনস্বীকার্য, তেমনি শিল্প স্থাপনেও নদীর বিকল্প নেই। আধুনিক সময়ের উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা হয়তো এ সমস্যার অনেকটাই বিকল্প তৈরিতে সক্ষম হয়েছে; কিন্তু শেষ বিচারে নদী, সমুদ্র বা জলপথই ভরসা। নৌকার সঙ্গে ও নদীর সঙ্গে বাঙালির জীবন আষ্টেপৃষ্ঠে জড়ানো। প্রাচীনকাল থেকে সমুদ্রগামী সুবিশাল নৌকা বা জাহাজ তৈরিতে বাঙালির দক্ষতা ছিল বিশ্বের অন্যান্য জাতির কাছে সুবিদিত। চীনা পরিব্রাজক মাহুন্দের লেখনী থেকে জানা যায়, তুরস্কের সুলতান আলেকজান্দ্রিয়ার জাহাজ নির্মাণ পদ্ধতিতে অসন্তুষ্ট হয়ে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম থেকে জাহাজ নির্মাণ করিয়ে নিয়েছিলেন। বাংলাদেশ নদ-নদীবহুল হওয়ায় স্বভাবতই বাংলার মানুষের প্রধান বাহন হয়ে ওঠে নৌকা আর বাণিজ্যের জন্য জাহাজ।

প্রাচীনকাল থেকেই বাংলার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিস্তৃত ছিল সমগ্র পৃথিবীর। পারস্য উপসাগর ও আরব সাগর হয়ে সুমেরীয়, কেলডীয়, আক্কাদীয়, ব্যাবিলনীয় ও মিসরীয় সভ্যতার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে বাংলার বণিকদের ছিল পণ্য আদান-প্রদানের সম্পর্ক। ১২০০ থেকে ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এ অঞ্চলের মুসলিম শাসনামলকে ইতিহাসের স্বর্ণযুগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এ সময়ে নৌ-শিল্পের কিছুটা প্রসার ঘটে। রণতরীসহ পালতোলা যাত্রীবাহী বিভিন্ন ধরনের নৌকা এসময় তৈরি হয়েছিল। চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়নও এসময় হয়েছিল। মোগল আমলের কিছু আগে থেকেই ব্যবসা-বাণিজ্য উপলক্ষে বাংলার মাটিতে বিদেশি বণিকদের আনাগোনা শুরু হয়।

বিদেশি পর্যটক ও ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে বাংলার ধনরতেœর গল্প যখন বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে, তখনই বিভিন্ন দস্যুবৃত্তিতে অভ্যস্ত জাতিগোষ্ঠী এবং পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বিবেক-বিবেচনাহীন অর্থলোভী লুটেরা এ অঞ্চলে আসতে থাকে, তাদের নানা মুখোশÑকেউ ধর্মপ্রচারক, কেউ ব্যবসায়ী, কেউ পরিব্রাজক, কেউ-বা নিতান্তই ভবঘুরে; কিন্তু সবার সেই একই উদ্দেশ্য কিছুটা উন্নত জীবন উপভোগের সুযোগ লাভ করা। ওলন্দাজ, ইংরেজ ও ফরাসি বণিকরা এ ভূখণ্ডে ব্যবসার সূত্রপাত ঘটায়। বিদেশি বণিকদের মধ্যে সর্বপ্রথম এ ভূখণ্ডে আসে পর্তুগিজরা। পর্তুগিজদের পর আসে ওলন্দাজরা। ১৬১৫ খ্রিস্টাব্দে প্রথম ওলন্দাজ জাহাজ এ ভূখণ্ডে নোঙর করে।

স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু তাঁর দূরদর্শী চিন্তা দিয়ে উপলব্ধি করেছিলেন, ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমেই দেশকে স্বনির্ভর করতে হবে। তাই ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্ব বিবেচনা করে তদানীন্তন নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় নিজ দায়িত্বে রেখে ছিলেন। তিনি ভবিষ্যতে নৌ-বাণিজ্য এবং এর সঙ্গে বিশাল অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে সমুদ্র বন্দরগুলোর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন। সদ্য স্বাধীন দেশের চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের চ্যানেলকে মাইনমুক্ত করার জন্য তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের সহায়তা নিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় চট্টগ্রাম বন্দরকে অকেজো করার জন্য এর চ্যনেলে মাইন পুঁতে রেখেছিল।

নদীমাতৃক বাংলাদেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে নৌ সেক্টর বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। নৌপথকে নিরাপদ, যাত্রীবান্ধব, আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে এবং হচ্ছে। এ লক্ষ্যে নৌ-বন্দরগুলোর আধুনিকায়ন, নৌপথ সংরক্ষণ, নৌ-সহায়ক যন্ত্রপাতি স্থাপন, নৌপথে নৌযান উদ্ধারকারী আধুনিক যন্ত্রপাতি-সংবলিত জাহাজ সংগ্রহ, নৌপথের আধুনিকায়ন, দেশব্যাপী নদীর তীরভূমি রক্ষা এবং তীরভূমিতে পর্যটন ব্যবস্থা গড়ে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহনে মানসম্মত যাত্রীসেবা এবং নিরাপদ পণ্য পরিবহন নিশ্চিত করতে সরকারি-বেসরকারি সব কর্তৃপক্ষ আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন খাতের সঙ্গে জড়িত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের গুরুত্ব এখন সবাই অনুধাবন করতে পারছে।

আন্তর্জাতিক নৌ-বাণিজ্যেও বাংলাদেশের অবস্থান দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতি বছর কম-বেশি ছয় হাজার পণ্যবাহী সমুদ্রগামী জাহাজ পণ্য পরিবহনে দেশের সমুদ্রবন্দরগুলোয় আসে। এসব সমুদ্রগামী জাহাজে কম-বেশি ৯২ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে থাকে। তবে বিগত কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে সমুদ্রগামী জাহাজগুলোর মোংলা বন্দর ব্যবহার বৃদ্ধি পাচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর এ বন্দরের গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। অপেক্ষাকৃত কম সময়ে নিরাপদে পণ্য পরিবহনসহ অন্যান্য সুযোগ বৃদ্ধি এবং খরচ কম হওয়ার কারণে ব্যবসায়ীরা মোংলা বন্দর ব্যবহারে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করছে, যার ফলে এ বন্দরে জাহাজের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দর দিয়ে বছরে কম-বেশি ১২ কোটি মেট্রিক টন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। এসব পণ্যের সামান্য অংশই দেশীয় পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহন করা হয়। বর্তমানে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে কন্টেইনার পরিবহনের মাত্র চার শতাংশ দেশীয় জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়, আর বাকি ৯৬ শতাংশ বিদেশি জাহাজের মাধ্যমে পরিবহন করা হয়। দেশের সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ খাতে পরিকল্পিতভাবে বিনিয়োগের মাধ্যমে এ ব্যবসায় সুযোগ নিতে পারে। এতে দেশের অর্থনীতি মজবুত হবে। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশের আমদানি-রপ্তানির ৫০ শতাংশ দেশের পতাকাবাহী জাহাজে পরিবহন করা গেলে এ খাতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে, যা দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করবে এবং দেশে আর্থসামাজিক অবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন ঘটাবে।

বাংলাদেশের প্রায় ৯২ শতাংশ আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম চট্টগ্রাম বন্দর দিয়েই পরিচালিত হয়। অর্থাৎ সমুদ্রপথে নৌ-বাণিজ্যের মধ্যে এ বন্দরের নির্ভরতা খুব বেশি। এরই মধ্যে চীন ও ইউরোপের জাহাজ চলাচলের রুট খুলে গেছে এ বন্দরের মাধ্যমে। বাংলাদেশে তৈরি পোশাকের বৃহৎ রপ্তানি বাজার ইউরোপ। আর পোশাকের সিংহভাগ কাঁচামাল আমদানি হয় চীন থেকে। এই দুই গন্তব্যে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে বিদেশের ট্রান্সশিপমেন্টে বন্দরনির্ভরতা এখন অনেকটাই কমেছে। সরাসরি জাহাজ চলছে ইউরোপের একাধিক বন্দরে। এর ফলে পণ্য পরিবহন সময় যেমন কমেছে, তেমনিভাবে হ্রাস পেয়েছে ব্যয়ও। পরীক্ষামূলকভাবে জাহাজ চলাচলে সফলতা আসার পর চট্টগ্রাম বন্দর থেকে একের পর এক খুলছে নতুন রুট। ইউরোপ অভিমুখে সরাসরি জাহাজ চলাচল শুরু হয় ইতালির রেভেনা বন্দরের মধ্য দিয়ে। ২০২২ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথমবার ইতালির উদ্দেশে ছেড়ে যায় জাহাজ। মূলত আমদানিকারকরাই অল্প সময়ের মধ্যে পণ্য পাওয়ার জন্য উদ্যোগী হয় সরাসরি জাহাজ চলাচলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। রেভেনা বন্দর অভিমুখে সরাসরি পণ্য পরিবহন এখন নিয়মিত রুটে পরিণত হয়েছে। এরপর যুক্ত হয় স্পেন ও নেদারল্যান্ডস। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় একটি বন্দর পেলেই একাধিক দেশের সঙ্গে কানেকটিভিটি হয়ে যায়। বর্তমানে চট্টগ্রাম থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত একাধিক বন্দরে জাহাজ অপারেট হচ্ছে। আরও নতুন বন্দর সংযুক্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। বিশেষ করে পরীক্ষিত হয়ে যাওয়ার পর পর্তুগালসহ বিভিন্ন বন্দর চট্টগ্রামের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

ভারত নিজেদের পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্য, প্রতিবেশী বাংলাদেশ, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে নৌপথে নিরবচ্ছিন্ন বাণিজ্য চালাতে বড় ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে, যেটির আওতায় এ অঞ্চলে পাঁচ হাজার কিলোমিটারের নৌ নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে দেশটির। ভারত নৌপথের ক্ষেত্রে তাদের পূর্বাঞ্চলীয় এ নেটওয়ার্কের পরিকল্পনায় বাংলাদেশের নদীগুলোকেও ব্যবহার করতে চায়। এতে বিশাল এক বাণিজ্যের সম্ভাবনা তৈরি হবে, যার একটি বড় অংশ বাংলাদেশ পাবে।

এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে নৌ ও সমুদ্রপথে আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়াতে বাংলাদেশ সরকারও আগ্রহী। ভারত ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাংলাদেশে বেশ কিছু নদী খনন চলছে। অভ্যন্তরীণ নৌপথ ও সমুদ্রপথের নৌ-যোগাযোগ সচল করার মাধ্যমে এ অঞ্চলে যোগাযোগ বাড়াতে কাজ চলছে। বাংলাদেশে বর্তমানে সচল আন্তর্জাতিক নৌপথের একটি পথ বর্তমানে খুলনার আংটিহারা হয়ে চাঁদপুর ও আরিচা হয়ে সিরাজগঞ্জ এবং সর্বশেষ উত্তরবঙ্গের দইখাওয়া হয়ে ভারতের দিকে চলে গেছে। আরেকটি আংটিহারা, চাঁদপুর, ভৈরব ও আশুগঞ্জ হয়ে সিলেটের জকিগঞ্জ দিয়ে ভারতের দিকে বের হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণের জন্য আরও কয়েকটি রুট তৈরির চেষ্টা চলছে। এগুলো হলো রাজশাহী হয়ে পাকশি, সুলতানগঞ্জ ও কুমিল্লার গোমতী হয়ে ভারতের ত্রিপুরা। আঞ্চলিক করিডোর ব্যবহার করে বর্তমানে ভারত থেকে অনেক জাহাজ বাংলাদেশ হয়ে পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোয় পণ্য পরিবহন করছে। তবে নদীপথের গভীরতা কম থাকার কারণে দুই মিটারের বেশি গভীর জাহাজ চলাচল করতে পারছে না। যাত্রীবাহী জাহাজ গঙ্গাবিলাসও এরই মধ্যে তাদের যাত্রী নিয়ে বাংলাদেশ ঘুরে গেছে । এ নৌপথের উদ্দেশ্য হচ্ছে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ও বাংলাদেশের সঙ্গে উত্তর ভারত, নেপাল ও ভুটানের সংযোগ ঘটানো। মিয়ানমারের সর্বপশ্চিমের শহর পালাতওয়া থেকে অভ্যন্তরীণ নৌপথ এসে সিতয়ুর সঙ্গে মিশে যাবে। সিতয়ু থেকে সমুদ্রপথে বাংলাদেশ ও ভারতের যে কোনো বন্দরে যুক্ত হবে।

কম ঝুঁকি, নিরাপদ পরিবহন ও অধিক লাভের বাণিজ্যের নাম নৌ-বাণিজ্য। বর্তমানে দেশের বিশাল নৌ-বাণিজ্যে সরকারি-বেসরকারি খাতের অংশ যৎসামান্য। বিশ্বায়ন ও প্রতিযোগিতামূলক মুক্তবাজার অর্থনীতির ক্রমবিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব বাণিজ্যে প্রতিনিয়ত ব্যাপক পরিবর্তন আসছে। দ্রুত পরিবর্তনশীল ও প্রতিযোগিতামূলক বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থায় টিকে থাকার জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে গতিশীল ও বহির্মুখী করে তোলাই সরকারের উদ্দেশ্য। অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক বাণিজ্য সহজীকরণ, রপ্তানি বাণিজ্য সম্প্রসারণে সহায়তা প্রদান এবং সক্ষমতা সৃষ্টির মাধ্যমে দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নে সরকার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। সরকারের উদ্দেশ্য হচ্ছে বাণিজ্য প্রসারের মাধ্যমে দেশের ব্যাপক জনগোষ্ঠীর জন্য কর্মসংস্থান ও আয়ের ব্যবস্থা করা এবং দারিদ্র্যের হার অর্ধেকে নামিয়ে আনা।

পিআইডি নিবন্ধ