প্রতিনিধি, দিনাজপুর: অতিমারি কভিডের সংক্রমণ শূন্যের কোটায় নেমে আসায় ৩৩ মাস পর দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করেছে কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে খনির প্রধান ফটকও খুলে দেয়া হয়েছে। শনিবার সন্ধ্যা থেকেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। গতকাল রোববার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম সরকার।
২০২০ সালের ৮ মার্চ এই খনিতে কভিডের বিধিনিষেধ জারি করে খনি কর্তৃপক্ষ। একই সময়ে দেশে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। সরকারিভাবে লকডাউন প্রত্যাহার করা হলেও কয়লা খনিতে বিধিনিষেধ ছিল। নিয়ম ছিল, বাড়ি থেকে আসা শ্রমিকরা ১৫ দিনের কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন। এরপর তিন থেকে চারটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর কাজে যোগ দেবেন। কাজে যোগদানের পর তিনি আর বাড়ি যেতে পারবেন না। কয়লা খনির ভেতরেই রেস্ট হাউসে থাকবেন এবং তিন মাস পর ছুটি পাবেন। এরপর বাড়ি থেকে ফিরলে আবারও কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
এমন নিয়ম করার ফলে শ্রমিকরা বেশ সমস্যায় ছিলেন। তারা বাড়ি যেতে পারছিলেন না। এক রকম বন্দিদশার মধ্যে থেকেই কয়লা উত্তোলন কাজে নিয়োজিত অথচ আগে নিয়ম ছিল যে শ্রমিকরা খনিতে কাজে যোগদান করে আট ঘণ্টা দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর তারা নিজ বাড়িতে চলে যাবেন।
সূত্র জানায়, কভিডের সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পর ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি এই খনিতে চীন থেকে আসা তিন জন কর্মকর্তাকে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা হয়। জানুয়ারির শেষ দিকে খনির ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ১২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কভিডে আক্রান্ত হয়। এ সময় ৪৫০ জন শ্রমিককে ছুটি দেয়া হয়। এছাড়াও একই বছরের ৩০ জুলাই খনির ৯০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী কভিডে আক্রান্ত হন।
কয়লা খনি শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি জাকির হোসেন জানান, বিধিনিষেধের জন্য খনির প্রধান গেট বন্ধ ছিল। বিশেষ নির্দেশনা ছাড়া এটি খোলা হতো না। গেট বন্ধ রাখা ও বিধিনিষেধ শিথিল করার জন্যও শ্রমিকরা আন্দোলন করেছেন। বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করায় শ্রমিকদের মধ্যে স্বস্তি ফিরেছে।