শেয়ার বিজ ডেস্ক: ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী করবছরের ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা চার লাখ টাকা করার প্রস্তাব দিয়েছে ব্যবসায়ীদের সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজ (বিসিআই)। গত শনিবার রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির নেতারা এ প্রস্তাব দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি আহসানুল আলম চৌধুরী পারভেজ, এফবিসিসিআইয়ের ঊর্ধ্বতন সহ-সভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, এমসিসিআই সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম এবং বিসিআইয়ের পরিচালক ও সদস্যরা।
সংগঠনটির অন্যান্য প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে শিল্প ক্ষেত্রে মূসক ও কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি। শিল্প খাত দেশীয় বাজারের পাশাপাশি রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় এবং আমদানি হ্রাসের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় করে দেশের অর্থনীতিতে অধিক ভূমিকা রাখে বিধায় মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প খাতের জন্য করপোরেট কর ১০ থেকে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ; তরুণ উদ্যোক্তাদের অর্থায়নের জন্য বাজেটে বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়েছে। কিন্তু সুনির্দিষ্ট নীতিমালার অভাবে এ তহবিলের সুফল পাওয়া সম্ভব হয়নি। তাই তরুণ উদ্যোক্তাদের জন্য বিশেষ তহবিল বিতরণে নীতিমালা প্রণয়ন; শিল্পের কাঁচামাল আমদানির ক্ষেত্রে শূন্য শতাংশ থেকে তিন শতাংশ উৎস কর নির্ধারণের প্রস্তাব; মাইক্রো, কুটির ও ক্ষুদ্র শিল্প এবং তরুণ শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য ন্যূনতম ৫ বছর কর অবকাশ এবং পরবর্তীতে ১০ থেকে ১৫ শতাংশ কর নির্ধারণ; বিসিআই বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানে তিন শতাংশ এবং এসএমই খাতের শিল্প প্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাংশ শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের শ্রমিক নিয়োগ করলে দুই শতাংশ কর রেয়াতের প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু বাজেটে কোনো প্রতিষ্ঠান মোট জনবলের ১০ শতাংশ অথবা ২৫ জনের অধিক কর্মচারী তৃতীয় লিঙ্গ এবং প্রতিবন্ধী নিয়োগ দিলে প্রদেয় করের ৫ শতাংশ অথবা ওই কর্মচারীদের বেতনের ৭৫ শতাংশ এ দুটির মধ্যে যেটি কম সেটি রেয়াত প্রদান করার প্রস্তাব করা হয়েছে। বিসিআই মনে করে এই রেয়াত প্রস্তাব নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান তৃতীয় লিঙ্গ এবং প্রতিবন্ধী নিয়োগের ক্ষেতে উৎসাহিত হবে না; শুধু রপ্তানি খাত নয় সব শিল্পের ক্ষেত্রে গ্রিন সার্টিফাইড শিল্পপ্রতিষ্ঠানের জন্য ২ শতাংশ কর রেয়াতের প্রস্তাব এবং লভ্যাংশের ওপর কর ১০ শতাংশ করার সুপারিশ করা হয়।
বিসিআইয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিশ্ব অর্থনীতি করোনা ও ইউক্রেন সংকটে বিপর্যস্ত, ঠিক এ কঠিন সময়ে জীবন-জীবিকায় প্রাধান্য দিয়ে অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্য নিয়ে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে সাত শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি পাঁচ দশমিক ছয় শতাংশ নির্ধারণ করে আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। এই সময়ে এরূপ উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঘোষিত বাজেট আশাব্যঞ্জক হলেও সুশাসন, যথাযথ মনিটরিং, দক্ষতা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও যথাযথ পরিকল্পনা নিশ্চিত করা না গেলে বাস্তবায়নে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে সরকারকে।