শেয়ার বিজ ডেস্ক : করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অন্যতম উড়োজাহাজ পরিবহন প্রতিষ্ঠানগুলো। এরই মধ্যে তাদের যাত্রী কমেছে অনেক। ফলে আয়ও কমেছে অনেকটা। এ ক্ষতির পরিমাণ দুই হাজার ৯০০ কোটি ৩০ লাখ ডলারেরও বেশি হতে পারে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক উড়োজাহাজ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (আইএটিএ)। খবর: বিবিসি।
গত বৃহস্পতিবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে জানায়, ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে আকাশপথে যাত্রী পরিবহন কমে গেছে অন্তত চার দশমিক সাত শতাংশ। আইএটিএ’র ধারণা ছিল, এ বছরও উড়োহাজাজের যাত্রী চাহিদা বাড়বে। তবে বৃহস্পতিবার সেই বক্তব্য সংশোধন করে তারা জানিয়েছে, গত এক দশকের মধ্যে, অর্থাৎ ২০০৮-০৯ সালের অর্থনৈতিক সংকটের পর থেকে প্রথমবারের মতো এ বছর যাত্রী পরিবহন কমছে।
আইএটিএ বলছে, ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখন পর্যন্ত চীনেই বেশি। কিন্তু এটি এশিয়ার অন্যান্য দেশে আরও ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়লে এয়ারলাইনগুলোর ক্ষতির পরিমাণ আরও বাড়বে।
আইএটিএ’র এ সতর্কবাণীর সত্যতা এরই মধ্যে অনুভব করতে শুরু করেছে কিছু প্রতিষ্ঠান। অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা কান্তাস এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, করোনা সংকটে এই আর্থিক বছরের দ্বিতীয় ভাগে তাদের কর-পূর্ব মুনাফা ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার কম হতে পারে। এছাড়া এয়ার ফ্রান্স-কেএলএম জানিয়েছে, করোনাভাইরাসের কারণে ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে তাদের আয় ২১৬ মিলিয়ন ডলার কমে যাবে।
আইএটিএ’র মহাপরিচালক ও প্রধান নির্বাহী আলেকজাঁদ্র দ্য জুনিয়াক বলেন, করোনাভাইরাসে সৃষ্ট রোগ কোভিড-১৯-এর কারণে তীব্র মন্দা চলছে উড়োজাহাজ পরিবহন সংস্থাগুলোয়। বিশেষ করে চীনা বাজারের সংস্পর্শে আসা সংস্থাগুলোর ওপর অর্থনৈতিক প্রভাব পড়বে। ২০২০ সাল এয়ারলাইনগুলোর জন্য ‘খুব কঠিন একটি বছর’ হতে চলেছে বলেও জানান তিনি।
এর আগে কান্তাস এককভাবে জানিয়েছিল, করোনার প্রভাবে তাদের ৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার ক্ষতি হবে। আগামী তিন মাস তারা এশিয়ায় ১৬ শতাংশ কম ফ্লাইট পরিচালনা করবে। তাদের সাংহাইমুখী সব ফ্লাইট বাতিল এবং হংকং-সিঙ্গাপুরমুখী ফ্লাইট কমানো হয়েছে। সাশ্রয়ী পরিবহন প্রতিষ্ঠান জেটস্টার জানিয়েছে, অন্তত মে মাস শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা এশিয়ায় ১৪ শতাংশ কম ফ্লাইট পরিচালনা করবে। এসব ফ্লাইটের রুট মূলত জাপান, থাইল্যান্ড ও চীনের মূল ভূখণ্ডমুখী।
কান্তাসের প্রধান নির্বাহী অ্যালান জয়েস জানান, করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে এশিয়ায় যাত্রীচাহিদা ব্যাপকহারে কমে গেছে। এর প্রভাবে ২০২০ আর্থিক বছরে প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ১০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি হতে পারে।