শেয়ার বিজ ডেস্ক: করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্কে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতালিতে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে প্রায় সব দোকান। ভারতও প্রায় সব ধরনের ভিসা বন্ধ করেছে। টুইটার কোম্পানি কর্মীদের জানিয়ে দিয়েছে, অফিসে না এসে বাড়ি থেকে কাজ করতে। পণ্য ও মানুষের চলাচলে এত রকম নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাণিজ্য। আশঙ্কা করা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের মহামারির জের ধরে শিগগিরই বিশ্ব অর্থনীতিতে ঘনিয়ে আসতে পারে বিপর্যয়। শুরু হতে পারে ভয়াবহ মন্দা। খবর: দ্য ওয়াল।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বেশ কিছু শহর ও এলাকাকে কোয়ারান্টাইনে রাখা হয়েছে। বাতিল করা হয়েছে বিভিন্ন এয়ারলাইন্স কোম্পানির উড়োজাহাজ চলাচল। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে খেলা। দোকানে ভিড় করে মানুষ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সংগ্রহ করছে। তাদের আশঙ্কা কিছুদিন পর দোকানপাট একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে।
এর আগে বিশ্বজুড়ে মন্দা দেখা গিয়েছিল ২০০৮ সালে। ২০২০ সালে আবারও এমন পুনরাবৃত্তি হতে পারে। অর্থনীতিবিদরা অনেকেই নিশ্চিত, শিগগিরই মন্দা শুরু হবে। কতদিন তা স্থায়ী হবে, তা নিয়ে এখন চলছে বিতর্ক। সারা বিশ্বে বৃহস্পতিবার ধস নেমেছে শেয়ারবাজারে। বাদ যায়নি ভারতও। দেশটির সেনসেক্স ও নিফটিতে নথিভুক্ত প্রতিটি শেয়ারেরই দাম কমেছে। এক দিনেই ভারতের শেয়ারবাজার থেকে উড়ে গেছে ১১ লাখ কোটি রুপি।
এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে জাপান বাদে অন্যান্য সব দেশে শেয়ারের দাম কমেছে গড়ে তিন দশমিক দুই শতাংশ। জাপানে নিক্কি সূচক নেমেছে পাঁচ দশমিক তিন শতাংশ। যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারে পতন শুরু হয়েছে বুধবার থেকে। ২০০৮ সালের মন্দার পর এই প্রথম ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ নামছে হু-হু করে। কয়েক দশক বাদে এই প্রথমবার চীনের অর্থনীতির বহর কমছে। জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স ও ইতালির অর্থনীতির বহরও কমতে শুরু করেছে।
মন্দার আশঙ্কা নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করছেন প্যাসিফিক ইনভেস্টমেন্ট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা জোয়াকিম ফেলস। তার মতে, ‘ইউরোপ ও আমেরিকায় এখনই মন্দার আশঙ্কা নেই।’ অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী ল্যারি সামার্স বলেন, ‘করোনাভাইরাস তাদের দেশে খুব বড় ধরনের সংকট ডেকে নিয়ে আসতে পারে।’
মন্দা হোক বা না হোক, বিশ্বজুড়ে অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি যে কমবে, সে ব্যাপারে অর্থনীতিবিদরা একমত। ব্যাংক অব আমেরিকার অর্থনীতিবিদরা আগে বলেছিলেন, চলতি আর্থিক বছরে বিশ্ব অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হবে দুই দশমিক আট শতাংশ। এখন তারা বলছেন, বড় জোর দুই দশমিক দুই শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারে।