করোনা মোকাবিলায় ভারতকে সহযোগিতা করবে যুক্তরাষ্ট্র

শেয়ার বিজ ডেস্ক: করোনায় বিপর্যস্ত ভারতের হাসপাতালগুলোয় অক্সিজেনের হাহাকার বেড়েই চলছে। তিল ধারণের ঠাঁই নেই হাসপাতালে। অক্সিজেন সরবরাহ না থাকায় দিল্লির হাসপাতালগুলো রোগী নেয়া বন্ধ করে দিয়েছে। করোনা পরিস্থিতিকে ‘সংক্রমণের ঝড়’ উল্লেখ করে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবাইকে টিকা নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিশ্ববাসীরও সহযোগিতা চান। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়ালও অক্সিজেনের জন্য সবার কাছে আকুল আবেদন করেন। এ অবস্থায় ভারতের পাশে থেকে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর: বিবিসি, রয়টার্স।

কয়েক দিন ধরেই টানা সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ছেই। এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়েছে। অপরদিকে মারা গেছে আড়াই হাজারের বেশি মানুষ।

ভারতের এই ভয়াবহ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেন, করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করতে যুক্তরাষ্ট্র ভারত সরকারের সঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে। ভারতকে সব রকম সাহায্যের চেষ্টা করছে তারা।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, প্রাণঘাতী এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে ভারতের ভয়ংকর পরিস্থিতি দেখে আমাদের হƒদয় ভারাক্রান্ত। আমাদের সহযোগী দেশ ভারতের সঙ্গে নিবিড়ভাবে আমরা যোগাযোগ রেখেছি। আমরা খুব দ্রুত ভারত এবং ভারতের স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য যথাসম্ভব সাহায্য করার চেষ্টা করছি।

গতকাল সকালে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় তিন লাখ ৪৯ হাজার ৬৯১ মানুষের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে, যা এ পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এখন পর্যন্ত ভারতে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এক কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার ১৭২। একই সময়ে মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৭৬৭ জনের, যা এখন পর্যন্ত এক দিনে সবচেয়ে বেশি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনা সংক্রমণে এক লাখ ৯২ হাজার ৩১১ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এদিকে হোয়াইট হাউসের জাতীয় সুরক্ষা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ভারতকে সাহায্যের জন্য ২৪ ঘণ্টা কাজ করছে। ভারতে যেভাবে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে যুক্তরাষ্ট্র খুবই উদ্বিগ্ন। আমরা আমাদের বন্ধু দেশ ভারতের জন্য সবরকম সাহায্য করব এবং মেডিকেল সরঞ্জাম, জীবনরক্ষাকারী ওষুধ থেকে ভ্যাকসিন দ্রুত সরবরাহের কাজ করব।

বিশ্বব্যাপী সহায়তা চেয়ে শনিবার একটি বিবৃতি জারি করেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। এরপরই যুক্তরাষ্ট্রের চেম্বার্স অব কমার্সের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, কঠিন এই পরিস্থিতিতে রপ্তানি নিশ্চিতের চেষ্টা করা হবে। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইঙ্গিত দেয়া হয়েছিল, দেশের সবাইকে ভ্যাকসিন দেয়ার পরই হয়তো ভারতে ভ্যাকসিনের কাঁচামাল রপ্তানি করতে পারবে তারা।

এর আগে ভারতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখে সতর্ক হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) প্রধান তেদ্রোস আধানম ঘেব্রেয়াসুস।

এছাড়া যুক্তরাজ্য, চীন ও পাকিস্তান ভারতকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে।