কর্ম প্রতিবেদনের প্রভাবে ওয়াল স্ট্রিটে উত্থান

শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিটে দুই সপ্তাহ ধরে উত্থান চলছে। তবে গত সপ্তাহের শেষ দিন শুক্রবার উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়, সূচক কিছুটা বাড়লেও বিনিয়োগকারীরা বেশ বিপাকে ছিলেন। খবর: এপি।

যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কর্ম (শ্রমবাজার) প্রতিবেদন প্রকাশের পর ওয়াল স্ট্রিটে দিনের শুরু হয় সূচকের উত্থানের মধ্য দিয়ে। প্রতিমাসের প্রথম শুক্রবার এর আগের মাসের শ্রমবাজার নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুক্তরাষ্ট্রের শ্রম বিভাগ। এবারের প্রতিবেদনে দেখা যায়, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে তা গত মাসের তুলনায় কম। তবু বিনিয়োগকারীদের আশা, কেন্দ্রিয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বা ফেড মূল্যস্ফীতি কমানোর জন্য নীতি সুদহার বৃদ্ধি করবে না।

শ্রমবাজারের প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর সূচক বৃদ্ধি পায় শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ। এরপর বেশিরভাগ সূচকের পতন ঘটে। দিনভর সূচকের উত্থান-পতন চলতে থাকে।

এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচক শূন্য দশমিক ২ শতাংশ বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে দিন শেষ করে। এতে তাদের পয়েন্ট হয় ৪ হাজার ৫১৫ দশমিক ৭৭। বেঞ্চমার্ক সূচকে ফেব্রুয়ারির পর প্রথম পতন হয়। ডাও জোনস ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ বা ডাও বৃদ্ধি পায় শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ এবং পয়েন্ট হয় ৩৪ হাজার ৮৩৭ দশমিক ৭১। অন্যদিকে নাসডাক কম্পোজিট শূন্য দশমিক ১ শতাংশের কম নিয়ে দিন শেষ করে। শেষ দিনের এই সামান্য পতনে ম্লান হয়ে যায় পুরো সপ্তাহ।

শ্রম বিভাগের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত মাসে এক লাখ ৮৭ হাজার কর্মসংস্থান হয়েছে। এর আগের মাস জুলাইয়ে মোট কর্মসংস্থান হয় এক লাখ ৫৭ হাজার। এ হিসাবে গত বছরের একই সময়ের তুলনায় কম কর্মসংস্থান হয়েছে। জুন থেকে আগস্টে দেশটিতে চার লাখ ৪৯ হাজার চাকরি যুক্ত হয়েছে। এ হিসাব গত তিন বছরের মধ্যে ত্রৈমাসিক ভিত্তিতে সবচেয়ে কম।

প্রতিবেদনে দেখা গেছে, বেকারত্বের হার ৩ দশমিক ৫ থেকে ৩ দশমিক ৮ শতাংশ হয়েছে, যা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ। তবে এখনও ঐতিহাসিক মান থেকে বেকারত্বের হার কম।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শ্রমবাজারের প্রতিবেদনে চাঙা হবে ওয়াল স্ট্রিট। বিনিয়োগকারীদের আশা, নীতি সুদহার বৃদ্ধির পথ থেকে সরে আসবে ফেডারেল রিজার্ভ। বিওকে ফাইন্যান্সিয়ালের চিফ ইনভেস্টমেন্ট স্ট্র্যাটেজিস্ট স্টিভ ওয়েট বলেন, কর্মসংস্থানের প্রতিবেদন দেখে মনে হচ্ছে, ফেড নীতি সুদহার বৃদ্ধি করবে না।

শক্তিশালী শ্রমবাজার এবং ভোক্তাব্যয় মন্দা আশঙ্কা কমিয়ে দিচ্ছে। ফলে ২০২৩ সালের অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদী বিশ্লেষকরা।

শুক্রবার এসঅ্যান্ডপি ৫০০ সূচকে ওয়াল স্ট্রিটের ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর টপ গেইনারদের তালিকায় ছিল। চার্লস শোয়াব বৃদ্ধি পায় ২ দশমিক ৩ শতাংশ। এদিন ইউএস ব্যাংককরপ বৃদ্ধি পায় ১ দশমিক ৫ শতাংশ।

তেলের দাম বৃদ্ধি জ্বালানি প্রতিষ্ঠানগুলোর সূচকের উত্থানে ভূমিকা রাখে। এক্সন মবিলের শেয়ারদর বৃদ্ধি পায় ২ দশমিক ১ শতাংশ, শেভরনের বেলায় যা ছিল ২ শতাংশ।

যুক্তরাষ্ট্রে শুক্রবার অপরিশোধিত ক্রুড অয়েলের দাম ২ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। এ নিয়ে গত সপ্তাহে তেলের দাম বৃদ্ধি পায় ৭ দশমিক ৩ শতাংশ। তেল রপ্তানিকারক বৃহৎ দেশগুলো উৎপাদন কমিয়ে দেয়ায় বিশ্ববাজারে তেল দাম বৃদ্ধি পায়। এই শিল্প খাতের অনেক বিশ্লেষকের আশা, সৌদি আরব অক্টোবর পর্যন্ত তেল উৎপাদন হ্রাস করবে।

যোগাযোগ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ারদর সবচেয়ে পিছিয়ে ছিল। ডিজনির শেয়ারদর ২ দশমিক ৪ শতাংশ কমেছে। চার্টারের পতন ঘটে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ।

খুচরা ওষুধ বিক্রেতা ওয়ালগ্রিনস বুটস অ্যালায়েন্সের শেয়ারদরে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ পতন হয়। প্রতিষ্ঠানটির নতুন সিইও রোসালিন্ড ব্রিুউয়ার পদত্যাগ করেন। এ পদত্যাগের ফলে তাদের শেয়ারদরে পতন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। জিনজার গ্রাহাম প্রতিষ্ঠানটি দায়িত্বভার বুঝে নেন। লেবার ডে উপলক্ষে আজ যুক্তরাষ্ট্রের পুঁজিবাজার বন্ধ রয়েছে।