নিজস্ব প্রতিবেদক: ঈদুল ফিতর উপলক্ষে তৈরি পোশাক, নিটওয়্যার এবং অন্যান্য খাতসহ প্রায় তিনশ কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেয়া হয়েছে। বাংলাদেশ শিল্পাঞ্চল পুলিশের এ তথ্য মতে, দেশের মোট ৯ হাজার ৬১৬টি কল-কারখানায় শ্রমিক রয়েছে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত সময়ে তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ ও বিকেএমইএর সদস্যভুক্ত কারখানাসহ মোট ২৮১টি কল-কারখানায় শ্রমিকদের ঈদের ছুটি দেয়া হয়েছে।
শিল্প পুলিশ বলছে, কাজের প্রচণ্ড চাপ থাকায় এ বছর ৭৯টি কারখানায় ঈদের ছুটি হচ্ছে না। তবে এ ঈদের ছুটি পরবর্তীতে শ্রমিকরা ভোগ করতে পারবেন।
সূত্র জানায়, দেশের ৮টি অঞ্চলের মধ্যে ১ নম্বর অঞ্চল আশুলিয়াতে ১ হাজার ৭৯২টি কারখানার মধ্যে ৬৪টি কারখানা ঈদের ছুটি দেয়া হয়েছে। ২ নম্বর অঞ্চল গাজীপুরের মধ্যে ২ হাজার ৩৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩৩টি কল-কারখানায় ঈদের ছুটি দেয়া হয়েছে।
একইভাবে ৩ নম্বর অঞ্চল চট্টগ্রামের ১ হাজার ৪৮০টি কল-কারখানার মধ্যে ১৬৩টি কারখানায় ঈদের ছুটি দেয়া হয়েছে। ৪ নম্বর অঞ্চল নারায়ণগঞ্জের ২২০৭টি কারখানার মধ্যে ১৮টি কারখানায় এবং খুলনায় অঞ্চলে ৩টি কল-কারখানায় ঈদের ছুটি দেয়া হয়েছে।
গতকাল ও আজ বৃহস্পতিবার আরও বেশি কিছু কোম্পানিতে ঈদের ছুটি দেয়া হবে। আর শুক্রবার থেকে বাকি সব কল-কারখানা ছুটি দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ী নেতারা।
তারা বলছেন, একসঙ্গে সব কল-কারখানা ছুটি হলে বাড়ি ফেরা নিয়ে শ্রমিকদের ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। তাই কারখানা মালিকদের অনুরোধ করা হয়েছে ধাপে ধাপে, আগে পরে করে ছুটি দিয়ে দেয়ার জন্য। কারখানা মালিকরাও সেই নির্দেশনা অনুসারে বেতন-বোনাস দিয়ে শ্রমিকদের ঈদের ছুটি ঘোষণা করছে।
জানতে চাইলে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, যেসব কারখানায় অর্ডার কম রয়েছে শ্রমিকদের বেতন বোনাস দিয়ে তারা ঈদের ছুটি দিয়ে দিয়েছে। এবার আমরা বিজিএমইএর সদস্যভুক্ত কারখানা মালিকদের বলেছি, ধাপে ধাপে ছুটি দিতে। যাতে শ্রমিক ভাই ও বোনদের যাতায়াতের ভোগান্তি কম হয়। তাই তারাও সেভাবে ছুটি দিচ্ছে।
তিনি বলেন, এবার ঈদের শ্রমিকরা লম্বা ছুটি পাবেন। অনেক কারখানা ঈদের এক সপ্তাহ পর অর্থাৎ ২৯ কিংবা ৩০ এপ্রিলও খুলবে। তবে যাদের অত্যন্ত সমস্যা তারা ২৫, ২৬ এপ্রিল কারখানা খুলবে।
নিটওয়ার মালিকদের প্রতিষ্ঠান বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শ্রমিকরা যাতে সুন্দরভাবে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারেন, সেজন্য এবার ধাপে ধাপে ঈদের ছুটি দেয়া হচ্ছে কারখানাগুলোতে। তিনি বলেন, সবার বেতন-বোনাস দিয়েই সরকারি ছুটির সঙ্গে সমন্বয় রেখে ঈদের ছুটি দিয়েছে বেশ কিছু কারখানায়। তবে বৃহস্পতিবার থেকে অধিকাংশ কারখানায় ঈদের ছুটি থাকবে বলে জানান তিনি।
এদিকের ঈদুল ফিতর উপলক্ষে পোশাক কারখানা বেশ কয়েক দিন বন্ধ থাকবে। এ সময় কারখানায় থাকবেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ অবস্থায় কারখানায় যাতে কোনো অগ্নিদুর্ঘটনা না ঘটে সেজন্য সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে বিজিএমইএ। কারখানা বন্ধকালীন অনাকাক্সিক্ষত দুর্ঘটনা এড়াতে কারখানায় জরুরি ভিত্তিতে ৭ পদক্ষেপ গ্রহণের সুপারিশ করেছে পোশাক মালিকদের এ সংগঠন। সোমবার বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান সই করা এক চিঠিতে এসব সুপারিশ করা হয়।