কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিকভাবে শেয়ারদর বাড়ছে বসুন্ধরা পেপারের

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কাগজ ও মুদ্রণ খাতের কোম্পানি বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের শেয়ারদর ও লেনদেন অস্বাভাবিক বেড়েছে। এর পেছনে কোনো ধরনের মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই বলে সম্প্রতি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জকে (ডিএসই) জানিয়েছে কোম্পানিটি। বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কোম্পানিটির শেয়ারদর ছিল ২৮ টাকা ৫০ পয়সা, আর গত ২৭ ফেব্রুয়ারি লেনদেন হয় ৪১ টাকা ৫০ পয়সায়। আর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক বলে মনে করছে ডিএসই। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ৯ দশমিক ৭৯ শতাংশ বা ৩ টাকা ৭০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৪১ টাকা ৫০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে ২৮ লাখ ৯৮ হাজার ২৩টি শেয়ার মোট ৩ হাজার ২০৮ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১১ কোটি ৯০ লাখ ৩০ হাজার টাকা। দিনভর শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৩৮ টাকা ৯০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৪১ টাকা ৫০ পয়সায় লেনদেন হয়। তবে গত এক বছরের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনি¤œ ২২ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৭৩ টাকার মধ্যে ওঠানামা করে।

এদিকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২৪) শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) কমেছে বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের। কোম্পানিটির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২৪) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৪ টাকা ৪ পয়সা (লোকসান), আগের বছরের একই সময়ে যা ছিল ৫২ পয়সা। অর্থাৎ শুধু দ্বিতীয় প্রান্তিকের হিসাবে ইপিএস কমেছে ৪ টাকা ৫৪ পয়সা। অন্যদিকে প্রথম দুই প্রান্তিকে বা প্রথমার্ধে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২৪) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৫ টাকা ৮৪ পয়সা (লোকসান), যা আগের বছরের একই সময় ছিল ১ টাকা ৪৬ পয়সা। অর্থাৎ প্রথমার্ধে বা প্রথম দুই প্রান্তিকে ইপিএস কমেছে ৭ টাকা ৩০ পয়সা। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৭১ টাকা ২৬ পয়সা। এছাড়া প্রথমার্ধে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৫ টাকা ৪১ পয়সা, যা আগের বছরের একই সময়ে ছিল ১৪ পয়সা।

কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা করেছে। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১ টাকা ১০ পয়সা এবং ২০২৪ সালের ৩০ জুনে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৭৭ টাকা ৬ পয়সা। এছাড়া আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ৪ টাকা ৩৫ পয়সা। এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে শেয়ারহোল্ডারদের ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছিল কোম্পানিটি। আলোচিত সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৬২ পয়সা এবং ২০২৩ সালের ৩০ জুনে শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৭৭ টাকা ৫৪ পয়সা। এছাড়া আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ১৮ টাকা ১৯ পয়সা।

কোম্পানিটি ২০১৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৭৩ কোটি ৭৯ লাখ ১০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ১ হাজার ৬ কোটি ২৫ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১৭ কোটি ৩৭ লাখ ৯১ হাজার ৪৪১টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৬৬ দশমিক ২১ শতাংশ শেয়ার, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৮ দশমিক ৮৬ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে ২৪ দশমিক ৯৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

সম্প্রতি বসুন্ধরা পেপার মিলস লিমিটেডের ঋণমান অবস্থান (ক্রেডিট রেটিং) নির্ণয় করেছে ক্রেডিট রেটিং এজেন্সি অব বাংলাদেশ লিমিটেড। তথ্যমতে, কোম্পানিটি দীর্ঘমেয়াদে রেটিং পেয়েছে ‘এএ২’ ও স্বল্প মেয়াদে রেটিং পেয়েছে ‘এসটি-২’। ৩০ জুন ২০২৪ পর্যন্ত নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন, ৩০ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে ব্যাংকঋণের অবস্থা এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক তথ্যের আলোকে এ রেটিং সম্পন্ন হয়েছে।