কারণ ছাড়াই অস্বাভাবিক শেয়ারদর বাড়ছে শার্প ইন্ডাস্ট্রিজের

নিজস্ব প্রতিবেদক: শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য নেই পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বস্ত্র খাতের কোম্পানি শার্প ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসির। সম্প্রতি অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চাইলে কোম্পানিটি এমন তথ্য জানায়। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সম্প্রতি কোম্পানিটির অস্বাভাবিক দর বাড়ার কারণ জানতে চেয়ে ডিএসই নোটিস পাঠায়। জবাবে কোনো অপ্রকাশিত মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই শেয়ারদর বাড়ছে বলে জানায় কোম্পানি কর্তৃপক্ষ। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গত ১১ ডিসেম্বর কোম্পানির শেয়ারদর ছিল ১৬ টাকা, যা গত ২ ডিসেম্বর লেনদেন হয় ২৪ টাকা ৮০ পয়সায়। এছাড়া আলোচিত ওই কয়েক কার্যদিবসে শেয়ার লেনদেনের পরিমাণও অস্বাভাবিক পরিমাণে বাড়ে। আর এই দর বাড়াকে অস্বাভাবিক মনে করছে ডিএসই।
এদিকে সর্বশেষ কার্যদিবসে ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১ দশমিক ৬১ শতাংশ বা ৪০ পয়সা বেড়ে প্রতিটি সর্বশেষ ২৫ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনজুড়ে শেয়ারদর ২৪ টাকা ৭০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৫ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়। এ দিন ১ লাখ ৩৬ হাজার ৯১৬টি শেয়ার ৩২১ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ৩৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা। গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১২ টাকা থেকে ২৫ টাকা ৬০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে।

শার্প ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। কোম্পানির ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৩০৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ২ কোটি ১ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট ৩০ কোটি ৩৪ লাখ ৫২ হাজার ১০৯ শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৩০ দশমিক ৫৮ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৩ দশমিক ২৮ শতাংশ এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ০১ শতাংশ এবং বাকি ৪৬ দশমিক ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে।

চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর, ২০২৪) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ১ পয়সা। অর্থাৎ শেয়ারপ্রতি আয় ১৪ পয়সা বেড়েছে। এছাড়া ২০২৪ সালের ৩০ সেপ্টেম্বরে শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ২১ পয়সা। প্রথম প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে ২ পয়সা (লোকসান), যা আগের বছর একই সময় ২ টাকা ৪২ পয়সা (লোকসান) ছিল।

শার্প ইন্ডাস্ট্রিজ পিএলসি ২০২৪ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য সর্বমোট ১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ৩০ জুন, ২০২৪ সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ১৯ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২৪ শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১০ টাকা ৭ পয়সা। এছাড়া এই হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ২ টাকা ৭১ পয়সা (ঘাটতি)। এর আগে কোম্পানিটি ২০২৩ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। ৩০ জুন, ২০২৩ সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৮ পয়সা (লোকসান)। ৩০ জুন, ২০২৩ শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ২ পয়সা (লোকসান)। এছাড়া এই হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ৪ পয়সা (ঘাটতি)।

এর আগে কোম্পানিটি ২০২২ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য কোনো লভ্যাংশ দেয়নি। ৩০ জুন, ২০২২ সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯ পয়সা (লোকসান)। ৩০ জুন, ২০২২ শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৬ পয়সা। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছিল।