নিজস্ব প্রতিবেদক: প্রতিবছর কয়েক হাজার গাড়িচালককে বিভিন্ন প্রশিক্ষণকেন্দ্রে গাড়ি চালনার বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেয়া হলেও তাদের নেই সড়ক পরিবহন আইন ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন-সম্পর্কিত স্পষ্ট কোনো ধারণা। তাই তাদের এ আইন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা আবশ্যক বলে মনে করেন বক্তারা। গত বৃহস্পতিবার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়নে প্রশিক্ষণরত ড্রাইভারদের প্রশিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভার আয়োজন করে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্টিভিটিস অব সোসাইটি (ডাস)।
ডাসের সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার মোয়াজ্জেম হোসেন টিপুর সঞ্চালনায় এবং বাংলাদেশ-কোরিয়া কারিগরি প্রশিক্ষণ সেন্টারের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর অতিরিক্ত মহাপরিচালক আ স ম আশরাফুল ইসলাম, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) রোড সেফটি বিভাগের পরিচালক শেখ মো. মাহবুব-ইরব্বানী ও দ্য ইউনিয়নের কনসালট্যান্ট মো. ফাহিমুল ইসলাম। সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন ডাসের নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ ও বাংলাদেশ জার্মান কারিগরি প্রশিক্ষণ সেন্টারের অধ্যক্ষ ফৌজিয়া শাহনাজ। মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ডাসের টিম ম্যানেজমেন্টে লিড দেয়া বখশ্ শেখ। এছাড়া সভায় ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ডাসের পলিসি অ্যানালিস্ট আসরার হাবীব নিপু। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন তামাকবিরোধী এনজিওর প্রতিনিধি ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রশিক্ষকরা।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়টাকে সামাজিক আন্দোলন হিসেবে দেখতে হবে। ড্রাইভিংয়ের পাশাপাশি অন্য যে কোনো মনোযোগ চালকের চিন্তায় বিচ্যুতি ঘটাবেই। আমাদের দেশে সব ক্ষেত্রেই আইন সবল থাকে। কিন্তু বাস্তবায়নের জায়গায় আমরা সবসময়ই দুর্বল থাকি। ডোপ টেস্টের মতো ধূমপানের বিষয়টাকেও প্রশিক্ষণ কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করার ব্যাপারে তার দপ্তর সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিআরটিএর মাহবুব-ই রব্বানী বলেন, উপলব্ধি না করতে পারলে সচেতনতা আসে না। শিক্ষিতরা কেউ ড্রাইভিং পেশায় আসে না। যে গোষ্ঠী আসে, তারা তাদের পারিবারিক পরিবেশ থেকেই ধূমপানটাকে একটা নির্দোষ কালচার হিসেবে দেখে আসে।
ফাহিমুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ সংবিধানের ১৮(১) অনুচ্ছেদে উল্লেখ আছে, জনস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। তামাকের ব্যবহার জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এফসিটিসিতে প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ হলো বাংলাদেশ। এসডিজিতে নন-কমিউনিকেবল ডিজিজ কমানোর পরামর্শ। এতগুলো বিষয়কে মূল্যায়ন বা কার্যকর করতে হলে প্রয়োজন সব কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টা। ট্রেনিং কারিকুলামে তামাক নিয়ন্ত্রণ বিষয়টি অন্তর্ভুক্তকরণ জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। চলমান পরিবহনে চালকই ব্যবস্থাপক, তাই তাকেই প্রধান ভূমিকা নিতে হবে।