কালীগঞ্জে গুদামে ধান দিচ্ছে না কৃষক

প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ২০২৪-২৫ আমন মৌসুমে সরকার নির্ধারিত দাম কম হওয়ায় খাদ্য গুদামে ধান দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না এলাকার কৃষকরা। ধান দিতে গেলেই কৃষকদের নানা ঝামেলা পোহাতে হয় বলে তাদের। এমন অবস্থায় এ উপজেলায় সরকারের ধান সংগ্রহ অভিযান অনেকটা শংকার মুখে পড়েছে। যে কারণে কালীগঞ্জ উপজেলা খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ প্রায় দেড় মাস অতিবিাহিত হলে ও কৃষকের নিকট থেকে একমুঠো ধান সংগ্রহ করতে পারেনি। এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। কৃষকদের দাবি সরকারি ভাবে দাম বাড়াতে হবে।

তা না হলে গুদামে ধান দিলে লোকসান হবে তাদের। কেননা ধান উৎপাদনে তাদের খরচও বেড়েছে। সারা দেশে একযোগে আমন মৌসুমের ধান সংগ্রহ শুরু হয় ১৭ নভেম্বর,যা শেষ হবে ২০২৫ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি।
কালীগঞ্জ খাদ্য গুদামের কার্যালয়ের তথ্যমতে, খাদ্য অধিদপ্তরের নির্দেশনা মোতাবেক “কৃষকের অ্যাপ” এর মাধ্যমে কৃষক নিজেই সরকারি খাদ্য গুদামে তার উৎপাদন ধান বিক্রির জন্য আবেদন করতে পারবেন। একজন কৃষক একবারে সর্বনিম্ন ৪০ কেজি এবং সর্বোচ্চ ৩ মেট্রিক টন ধান খাদ্য গুদামে বিক্রি করতে পারবেন। এ মৌসুমে পূর্বের ন্যায় লটারী হবে না। সরকারি নির্দেশনা রয়েছে উপজেলার আবেদনকারী কৃষক যে কেউ গুদামে ধান নিয়ে আসলে তা কেনার।

কালীগঞ্জ উপজেলায় এবার ১৪২১ মেট্রিক টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারন করা হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত শুরুর ১ মাসের অধিক সময় পার হলেও এক মেট্রিক টন ধানও সংগ্রহ করা যায়নি। ধান নিয়ে এলাকার কোন কৃষকরা গুদামে আসছেন না।
সরকার চলতি মৌসুমে প্রতি মন ধানের দাম ধরেছে ১ হাজার ৩২০ টাকা (কেজি ৩০ টাকা)। বাজারে এরচেয়ে বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় ধান সংগ্রহের আশা ছেড়েই দিয়েছে খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ। কৃষক শাজাহান হোসেন বলেন,খাদ্য গুদামের চেয়ে বাজারে বেশি দামে ধান বিক্রি হচ্ছে। তাই আমি গুদামে কম দামে ধান দেই নি। তাছাড়া গুদামে ধান দিতে গেলে নানা ঝামেলা পোহাতে হয়। এজন্য খোলা বাজারে ১৪০০ টাকা মনে আমি এবার ধান বিক্রি করেছি।

কালীগঞ্জ এলএসডি খাদ্য পরিদর্শক কার্তিক চন্দ্র দেবনাথ জানান, সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় কৃষকরা খাদ্য গুদামে ধান বিক্রিতে অনাগ্রহ দেখান। খাদ্য গুদামে ধান ক্রয়ের জন্য আমরা উপজেলা জুড়ে নানা প্রচার প্রচারনা চালিয়েছি। সামনে নির্ধারিত শেষ সময়ে বেশ কিছুদিন বাকি আছে, দেখা যাক কি হয়।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুব আলম রনি বলেন, উপজেলায় এ মৌসুমে প্রায় ১৮ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে বলা যায়। তবুও সরকার নির্ধারিত মূল্যে খাদ্য গুদামে ধান দিতে কৃষকের অনাগ্রহ রয়েছে। অনেক কৃষকের সাথে কথা বলে যেটা জানা যায় তা হলো বাজারে মূল্য বেশি থাকা, টাকা প্রাপ্তিতে জটিলতার কারণেই তারা সরকারি খাদ্য গুদামে ধান দিতে চান না।

উপজেলা অভ্যন্তরীণ ধান ও চাল সংগ্রহ কমিটির সভাপতি ইউএনও দেদারুল ইসলাম বলেন,এ বিষয়ে আমার জানা ছিল না। আমি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের দায়িত্বশীলদের সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয়পদক্ষেপ গ্রহন করব।