Print Date & Time : 13 September 2025 Saturday 4:02 am

কিংবদন্তি গীতিকবি গাজী মাজহারুল আনোয়ার মারা গেছেন

নিজস্ব প্রতিবেদক : গীতিকার, চলচ্চিত্র পরিচালক, কাহিনিকার ও প্রযোজক গাজী মাজহারুল আনোয়ার আর নেই (ইন্নালিল্লাহি … রাজিউন)। আজ রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) সকাল ৭টা ৩০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার ভাগনে অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
জয় বলেন, ‘মামা গত দুদিন ধরে শারীরিকভাবে খানিক অসুস্থ ছিলেন। তবে সেটি উল্লেখযোগ্য কিছু ছিল না। বার্ধক্যজনিত কিছু ছোট জটিলতা ছিল তার। আজ সকালে আলট্রসাউন্ড করার কথা ছিল খালি পেটে। সাড়ে ৬টার দিকে ঘুম থেকে উঠে বাথরুমে যান। সেখানেই মাথা ঘুরে পড়ে যান এবং জ্ঞান হারান। ছেলে উপল আনোয়ার দ্রæত ইউনাইটেড হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকরা চেষ্টা করেন জ্ঞান ফেরাতে। কিন্তু পারলেন না।’
গাজী মাজহারুল আনোয়ারের ছেলে উপল আনোয়ার জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে গোসল করিয়ে কবির মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে বারিধারার বাসায়। এরপর পারিবারিকভাবে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে জানাজা ও দাফনের বিষয়ে।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৪৩ সালের ২২ ফেব্রæয়ারি কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার তালেশ্বর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
‘জয় বাংলা, বাংলার জয়, একতারা তুই দেশের কথা বল রে এবার বল’সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের এই রচয়িতা গীতিকবি সংঘের আজীবন সদস্য ছিলেন। তিনি ২০০২ সালে একুশে পদক এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার লাভ করেন। স্বাধীনতা যুদ্ধে বিশেষ অবদানের জন্য স্বাধীন দেশের সর্বপ্রথম পুরস্কার ‘বাংলাদেশ প্রেসিডেন্ট গোল্ড মেডেল অ্যাওয়ার্ড’ লাভ করেন। এছাড়াও পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, একাধিকবার বাচসাস পুরস্কার, ডেইলি স্টার কর্তৃক লাইফ টাইম অ্যাওয়ার্ডসহ তার অর্জিত পুরস্কারের সংখ্যা ১১০।
দীর্ঘ ৬০ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি ২০ হাজারের বেশি গান রচনা করেছেন। বিবিসি বাংলার জরিপে সর্বকালের সেরা ২০টি বাংলা গানের তালিকায় তার লেখা তিনটি গান রয়েছে। তার লেখা আরও কালজয়ী কিছু গান হলো : একবার যেতে দে না আমার ছোট্ট সোনার গাঁয়’, ‘গানের খাতায় স্বরলিপি লিখে’, ‘আকাশের হাতে আছে একরাশ নীল’, ‘শুধু গান গেয়ে পরিচয়’, ‘ও পাখি তোর যন্ত্রণা’, ‘এই মন তোমাকে দিলাম’ প্রভৃতি।
গাজী মাজহারুল আনোয়ার ১৯৬৪ সাল থেকে রেডিও পাকিস্তানে গান লেখা শুরু করেন। পাশাপাশি বাংলাদেশ টেলিভিশনের জন্মলগ্ন থেকেই নিয়মিত গান ও নাটক রচনা করেন। প্রথম চলচ্চিত্রের জন্য গান লেখেন ১৯৬৭ সালে আয়না ও অবশিষ্ট চলচ্চিত্রের জন্য। ১৯৬৭ সালে চলচ্চিত্রের সাথে যুক্ত হন তিনি। তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘নান্টু ঘটক’ ১৯৮২ সালে মুক্তি পায়। তার পরিচালিত চলচ্চিত্রের সংখ্যা ৪১টি।