কিশোর-তরুণদের সুরক্ষায় বাংলাদেশ মেডিকেল স্টুডেন্ট সোসাইটির বিবৃতি

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আমরা চিকিৎসক ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি, প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের বিরোধীতার সাথে সাথে, সিগারেট কোম্পানিগুলো ই-সিগারেট, ভেপিং নিষিদ্ধের বিরুদ্ধে জোর প্রচারণা চালাচ্ছে। তরুন প্রজন্মকে নেশাসক্ত করতে ই-সিগারেট, ভেপিং এগুলো একধরনের অস্ত্র। দেশের শিশু-কিশোর তরুণদের ধূমপানে আকৃষ্ট করতে তামাক কোম্পানি রেষ্টুরেন্টে তৈরি করছে ধূমপানের স্থান। ভেপিং বা ই-সিগারেট (বাংলাদেশে এখনো সেভাবে যার ব্যবহার নেই) ব্যবহারের জন্য তৈরি করেছে ভেপিং মেলা। সিগারেট কোম্পানি ব্যবসার জন্য অর্থনীতির নামে হাজার কিশোর তরুণদের স্বাস্থ্য ধ্বংসের খেলায় লিপ্ত। বাংলাদের প্রায় ৪৯% জনগোষ্ঠী তরুণ। শিশু-কিশোর ও তরুণ প্রজন্মের রক্ষায় এখনই আইনী বাধ্যবাধকতার মাধ্যমে ই-সিগারেট আমদানি, রপ্তানি, পরিবহন, বিক্রয়, বিতরণ, সংরক্ষণ, এবং বিজ্ঞাপন নিষিদ্ধ করা উচিৎ।

আমরা আরো লক্ষ্য করেছি যে, তামাক কোম্পানিগুলো প্রচার করছে আইন প্রণয়ন বা শক্তিশালী করা হলে সরকারের রাজস্ব কমে যায়। প্রকৃতপক্ষে ২০০৫ সালে বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণে আইন প্রণয়ন এবং ২০১৩ সালে আইন সংশোধন হবার পর এসময়কালে তামাক হতে রাজস্ব প্রায় ১১গুন বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তামাকের ব্যবহারও কমে এসেছে। সুতরাং এটি প্রমাণিত যে, আইন প্রণয়ন করা হলে তামাকের ব্যবহার কমে কিন্তু সরকারের রাজস্ব কোনভাবেই কমে না। বরং সিগারেট কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন কৌশলে রাজস্ব ফাকিঁর কারণে সরকার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যানুসারে তারা সর্বোচ্চ খুচরা ‍মুল্যে সিগারেট বিক্রি না করে ফাঁকি দিচ্ছে প্রায় ৫০০০ কোটি টাকা রাজস্ব ।

দেশের ৭০ শতাংশ মৃত্যুর কারণ অসংক্রামক রোগ । অসংক্রামক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ তামাক। সিগারেট সেবনের কারণে দেশে প্রতিবছর অকালে প্রাণ হারায় ১ লক্ষ ৬৫ হাজার মানুষ। এমতাবস্থায় নতুন বাংলাদেশে গড়ার যাত্রায় জনস্বাস্থ্য রক্ষায় চেষ্টাকে অব্যহত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া জরুরী। চিকিৎসক ছাত্র সমাজের পক্ষ থেকে সিগারেট কোম্পানিগুলোর উপর উচ্চ হারে অধিক কর আরোপের মাধ্যমে রাজস্ব বৃদ্ধি এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের মাধ্যমে যুব সমাজকে রক্ষায় যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের আহবান জানাচ্ছি।