নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের ক্রান্তিকালে প্রতিবারই ছাত্র-জনতা তাঁদের শক্তি ও সক্ষমতার প্রমাণ দিয়েছে। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, নব্বইয়ের গণ-আন্দোলন এবং সর্বশেষ ২০২৪ এর আন্দোলনে আমাদের ছাত্র-জনতা গর্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। বহু প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হয়েছে দ্বিতীয় স্বাধীন বাংলাদেশ। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতির প্রতিটি ক্ষেত্রে সমৃদ্ধ রাজস্ব ভান্ডার অর্থনৈতিক উত্তরণে অবদান রাখতে পারে। দেশের এ আরাধ্য অর্থনৈতিক উত্তরণে কাজ করছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক সংগৃহীত অভ্যন্তরীণ সম্পদের বৃহত্তম উৎস মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট।
মূল্য সংযোজন কর সম্পর্কে জনগণকে আরো সচেতন ও উদ্বুদ্ধ করার প্রয়াসে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ১০ ডিসেম্বর দেশব্যাপী সীমিত আকারে আড়ম্বর পরিহার করে পালিত হচ্ছে ‘ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ-২০২৪’। এ বছর ভ্যাট দিবসের প্রতিপাদ্য হলোঃ “ভ্যাট দিব জনে জনে, অংশ নিব উন্নয়নে”। এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে আজ ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ সকাল ১০টায় হোটেল এলিট প্যালেস, ঝাউতলা, কুমিল্লায় একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কুমিল্লার অধিক্ষেত্রাধীন মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছাড়াও বিভিন্ন পর্যায়ের স্টেকহোল্ডার, সুধীজন এবং বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিক স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেমিনারে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কর কমিশনার শেখ মো. মনিরুজ্জামান, কর অঞ্চল, কুমিল্লা। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান, কমিশনার, কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট, কুমিল্লা। বিভিন্ন সেক্টরের ব্যবসায়ী বা উৎপাদনকারী, কুমিল্লা জেলার চেম্বার অব কমার্স এর ভাইস প্রেসিডেন্ট, সুধী সমাজসহ বিভিন্ন স্তরের ভ্যাটদাতাদের অংশগ্রহণে আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি অতিরিক্ত কমিশনার মির্জা সহিদুজ্জামান তাঁর স্বাগত বক্তব্যে বলেন, ভ্যাট প্রদানকে সহজ করা এবং ভ্যাট প্রদানে করদাতাদেরকে উৎসাহিত করা ভ্যাট দিবসের লক্ষ্য। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনায় যুগ্ম কমিশনার মো. পায়েল পাশা বলেন, রাজস্ব আহরণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাংলাদেশের বর্তমান কর জিডিপি রেশিও ডাবল ডিজিটে উন্নীত করতে হলে ব্যবসায়ী সমাজ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ও চূড়ান্ত করদাতা জনগণকে সমন্বিতভাবে ভূমিকা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে প্রতি ১০০ টাকা রাজস্ব আহরণে বর্তমান ব্যয় মাত্র ১৯ পয়সা হতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধি করতে সরকারকে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
প্রধান অতিথি কর কমিশনার শেখ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ২০২৪ সালের আগষ্ট বিপ্লবে সারাদেশের ছাত্র-জনতা অংশ নিয়ে যেমন গণতান্ত্রিক মুক্তি নিশ্চিত করেছে তেমনি দেশের জনগণ একই চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিত করবে। তাই দেশের উন্নয়নে সর্বস্তরের জনগণের অংশগ্রহণ এ দিবসের মূল উপজীব্য। সভাপতি মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান “ভ্যাট দিব জনে জনে, অংশ নিব উন্নয়নে” এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে এ বছর ভ্যাট দিবস ও ভ্যাট সপ্তাহ, ২০২৪ উদযাপনে আয়োজিত আজকের সেমিনারে সবাইকে স্বাগত জানান। দেশের সার্বিক উন্নয়নে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাব, ভ্যাট দিবস ২০২৪ ও মহান বিজয়ের মাসে এটাই হোক আমাদের দৃপ্ত অঙ্গীকার।