নিজস্ব প্রতিবেদক : কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে প্রথমবারের মতো ‘কৃষিক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (এআইপি)’ সম্মাননা দেয়া হয়েছে। আজ বুধবার (২৭ জুলাই) সকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মাননা তুলে দেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক।
এ বছর ১৩ জনকে এ সম্মাননা দেয়া হয়। তারা হলেন : কৃষি উদ্ভাবন বিভাগে (জাত প্রযুক্তি) বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. লুৎফুল হাসান (বাউধান-৩-এর জাত উদ্ভাবন), এ আর মালিক সিডসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আতাউস সোপান মালিক (দুটি বীজ আলুসহ মোট ১০টি সবজির জাত উদ্ভাবন ও বাজারজাতকরণ), ফিউচার অর্গানিক ফার্মের সৈয়দ আব্দুল মতিন (মেহগনি ফলের বীজ থেকে তেল তৈরি বা জৈব বালাইনাশক প্রস্তুত), আলীম ইন্ডাস্ট্রিস লিমিটেডের আলীমুছ ছাদাত চৌধুরী (আলীম পাওয়ার ট্রিলার উদ্ভাবন)।
কৃষি উৎপাদন, বাণিজ্যিক খামার স্থাপন ও কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প বিভাগে পুরস্কার পেয়েছেন ৬ জন। এরা হলেন মো. সেলিম রেজা, দৃষ্টান্ত অ্যাগ্রো ফার্ম অ্যান্ড নার্সারি, ডাল সড়ক, নাটোর সদর, নাটোর; মো. মেহেদী আহসান উল্লাহ চৌধুরী, চামেশ্বরী, চৌধুরীহাট, ঠাকুরগাঁও; মো. মাহফুজুর রহমান, এশা ইন্টিগ্রেটেড এগ্রিকালচার ফার্ম, ঝালকাঠি সদর, ঝালকাঠি; মো. বদরুল হায়দার বেপারী, প্রোপ্রাইটার, জাগো কেঁচোসার উৎপাদন খামার, চৌঠাইমহল, নাজিরপুর, পিরোজপুর; মো. শাহবাজ হোসেন খান, নুর জাহান গার্ডেন, শৌলা কালাইয়া, বাউফল, পটুয়াখালী; মো. সামছুদ্দিন (কালু), বিছমিল্লাহ মৎস্য বীজ উৎপাদন কেন্দ্র ও খামার, নাঙ্গলকোট রেলস্টেশন সংলগ্ন, নাঙ্গলকোট, কুমিল্লা।
স্বীকৃত বা সরকার কর্তৃক রেজিস্ট্রিকৃত কৃষি সংগঠন বিভাগে জাহাঙ্গীর আলম শাহ, শাহ্ কৃষি তথ্য পাঠাগার ও জাদুঘর, কালীগ্রাম, মান্দা, নওগাঁ।
বঙ্গবন্ধু কৃষি পুরস্কারে স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত বিভাগে নির্বাচিত হয়েছেন দুজন। এরা হলেন মোছা. নুরুন্নাহার বেগম, নুরুন্নাহার কৃষি খামার, ঈশ্বরদী, পাবনা এবং মো. শাহজাহান আলী বাদশা, মা-মণি কৃষি খামার, ঈশ্বরদী, পাবনা।
এআইপি সম্মাননা প্রাপ্তরা সিআইপিদের মতো সুযোগ-সুবিধা পাবেন। এর মধ্যে রয়েছে মন্ত্রণালয় হতে একটি প্রশংসাপত্র, বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশ পাস, বিভিন্ন জাতীয় অনুষ্ঠানে নাগরিক সংবর্ধনায় আমন্ত্রণ; বিমান, রেল, সড়ক ও জলপথে ভ্রমণকালীন সরকার পরিচালিত গণপরিবহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার, ব্যবসা-দাপ্তরিক কাজে বিদেশ ভ্রমণের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভিসা প্রাপ্তির জন্য সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে লেটার ইস্যু করবে।
এছাড়াও নিজের ও পরিবারের সদস্যদের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালের কেবিন সুবিধাপ্রাপ্তিতে অগ্রাধিকার পাবেন এবং বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের সুবিধাও পাবেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি কৃষিমন্ত্রী বলেন, কৃষিকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আগামী দিনের কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই সম্মাননা কৃষিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। একদিকে ব্যবসায়ী এবং গুণী ব্যক্তিরা যেমন তাদের মেধা ও শ্রম দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক তেমনি দেশকে এগিয়ে নিতে এই কৃষকদের অবদানও অনেক। তাদের সম্মানিত করে আমরা নিজেরা সম্মানিত বোধ করছি।
তিনি বলেন, আগামী দিনের কৃষিকে আমরা বাণিজ্যিক ও সম্মানজনক পেশা হিসেবে উন্নীত করতে চাই। কৃষিতে শিক্ষিত, মেধাবী ও সৃজনশীল তরুণদের আকৃষ্ট করতে চাই।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. সায়েদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী বেগম হাবিবুন নাহার।
উপমন্ত্রী বলেন, আমরা হয়তো সর্বোচ্চ ১৭ ভাগ সবুজায়ন করতে পেরেছি। তবে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আমরা এই অর্জন ২২ ভাগে আনতে সক্ষম হয়েছি। আমাদের দেশের কৃষকরা এই অর্জনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছেন।