কৃষিপণ্য রপ্তানি বাড়াতে একনেকে প্রকল্প অনুমোদন

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের কৃষিপণ্যের রপ্তানি বাড়াতে ঢাকার শ্যামপুরে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ ল্যাবরেটরিকে ‘আন্তর্জাতিক মানে’ উন্নীত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে ‘কেন্দ্রীয় প্যাকিং হাউসে স্থাপিত উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ ল্যাবরেটরিকে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ল্যাবরেটরিতে রূপান্তর’ শীর্ষক একটি প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের ১৫৬ কোটি টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তর। আগামী ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্প শেষ করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। বৈঠক-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, এ প্রকল্প অনুমোদনের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের কৃষিপণ্যের আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করে বিশ্ববাজারে মানসম্পন্ন পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, বিশ্ববাজারে কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্যের বিশাল বাজার আছে। বর্তমানে আমাদের যে বাজার, তা আরও বাড়াতে হবে। সে জন্য কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণের কাজটি যেন যথাযথ মান বজায় রেখে হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সাবধান, আমরা যা রপ্তানি করছি তা যেন অবশ্যই আন্তর্জাতিক মান সম্পন্ন হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘দেশে কৃষিজাত পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণে প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মানের এই ল্যাব স্থাপন করা হচ্ছে। কারণ ইউরোপসহ বিশ্ববাজারে কৃষি ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করতে হলে অবশ্যই আন্তর্জাতিক মান নিশ্চিত করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে বিশ্বাসযোগ্যতা স্থাপনের মাধ্যমে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে কৃষিপণ্যের রপ্তানি প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়াতে পারব।’ বর্তমানে বাংলাদেশ বছরে প্রায় ১০০ কোটি ডলারের কৃষিপণ্য রপ্তানি করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান মন্ত্রী।

পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, এদিন বৈঠকে উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ ল্যাবরেটরির উন্নয়নসহ মোট ৫ হাজার ৪৪১ কোটি ৬৩ লাখ টাকার আটটি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৩ হাজার ৩৩২ কোটি ৭২ লাখ টাক; সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন থেকে ৪৭ কোটি ৯৩ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সহায়তার খাত থেকে প্রায় ২ হাজার ৬১ কোটি টাকার জোগান দেয়া হবে।

অনুমোদন পাওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো মাদারগঞ্জ-কায়রা-মনসুরগঞ্জ (কাজীপুর)-আবদুল্লাহ মোড় (সরিষাবাড়ী)-ধনবাড়ী সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প। ব্যয় ৬৮৫ কোটি ১৩ লাখ টাকা। ময়মনসিংহে কেওয়াটখালী সেতু নির্মাণ প্রকল্প। ব্যয় ৩ হাজার ২৬৩ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ব্যাপক প্রযুক্তিনির্ভর সমন্বিত সম্পদ ব্যবস্থাপনা (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্প। ব্যয় ধরা হয়েছে ২০৯ কোটি ১৭ লাখ টাকা। ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প। ব্যয় ১০৬ কোটি ২৫ টাকা। দিনাজপুর জেলার ঢেপা, পুনর্ভবা ও টাঙ্গন নদীর তীর সংরক্ষণ প্রকল্প। ব্যয় হবে ১৮০ কোটি টাকা। বিদ্যমান গ্রিড উপকেন্দ্র ও সঞ্চালন লাইনের ক্ষমতাবর্ধন প্রকল্প। ব্যয় ৭৭৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট-ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (প্রথম সংশোধিত) প্রকল্প। সংশোধনে এ প্রকল্পে ব্যয় বাড়ছে ৬৬ কোটি ১৮ লাখ টাকা।