নথিসহ বিএইসির সঙ্গে সাক্ষাৎ

কৃষিভিত্তিক ব্যবসা চালুর পরিকল্পনা করছে গচিহাটা অ্যাকুয়াকালচার

আতাউর রহমান: ১৯৯৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল গচিহাটা অ্যাকুয়াকালচার কোম্পানিটি। ২০০২ সাল থেকে কার্যকরী কার্যক্রম পরিচালনা এবং লভ্যাংশ প্রদান করতে ব্যর্থ হওয়ায় স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান ট্রেডিং বোর্ড থেকে ওভার-দ্য-কাউন্টার (ওটিসি) বাজারে পাঠানো হয়। এরপর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ওটিসির কোম্পানিগুলোকে এসএমই মার্কেটে যাওয়ার সুযোগ করে দিলে কোম্পানিটি সম্মতি জানায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে স্টক এক্সচেঞ্জের এসএমই প্ল্যাটফর্মে স্থানান্তরিত হওয়ার প্রক্রিয়াধীন রয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটির চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেনÑবিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.) মো. আখতারুজ্জামান।

গচিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস লিমিটেড স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত একটি কৃষিভিত্তিক কোম্পানি। ১০৯ একর জমির মালিকানা থাকা সত্ত্বেও কার্যকরী মূলধনের ঘাটতির কারণে গত দুই দশক ধরে খারাপ অবস্থায় রয়েছে কোম্পানিটি। কোম্পানিটিতে সাম্প্রতিক পরিদর্শন করে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) দ্বারা যে প্রতিবেদন দেয়া হয়েছে এর ভিত্তিতে কাজ করেছে কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কোম্পানির ব্যবসার বর্তমান অবস্থা, জমি এবং আর্থিক প্রতিবেদন বিষয়ে নথি চেয়ে তলব করে। তারই অংশ হিসেবে সম্প্রতি সংশ্লিষ্ট নথিসহ রাজধানীর আগারগাঁও শেরে বাংলা নগরে অবস্থিত সিকিউরিটিজ ভবনে কোম্পানির চেয়ারম্যান ও এমডিসহ অন্য কর্মকর্তারা কমিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ। এ সময় বিএসইসির অন্য কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

বিএসইসির সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেয়ার বিজকে বলেন, ‘আমরা নথিপত্রসহ কমিশনের সঙ্গে দেখা করেছি। আমাদের সব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে এবং কমিশন আমাদের কাছে ব্যবসার পরিকল্পনা জানতে চেয়েছে। আমরা একটি ব্যবসা পরিকল্পনা তৈরি করে শিগগিরই কমিশনের কাছে জমা দেব। এরপর কমিশনের সার্বিক সহযোগিতায় পুনরায় কৃষিভিত্তিক ব্যবসা চালু করা হবে।’

এর আগে কমিশন থেকে কোম্পানিটির বেশ কিছু সমস্যার বিষয়ে উল্লেখ করে সংশ্লিষ্ট নথি চেয়ে

 চিঠি দেয়। বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়,বর্তমানে, গচিহাটা অ্যাকুয়াকালচার ফার্মস চালু রয়েছে এবং এর কারখানা প্রাঙ্গণে গবাদি পশু, মাছ এবং গাছের বাগান রয়েছে। এটি ৮৫ দশমিক ২৫ একর পুকুর এলাকাসহ ১০৯ একর জমির মালিক। ডিএসই তথ্য অনুসারে, জমির বর্তমান বাজার মূল্য প্রায় ৫৫৬ কোটি টাকা। ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের সঙ্গে কোম্পানিটির মেয়াদি ঋণ রয়েছে ২৩ কোটি ৭১ লাখ টাকা। স্পন্সর এবং পরিচালকদের ২৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ১৮ দশমিক ১২ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ৫৬ দশমিক ০২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

কোম্পানিটির কাছে কমিশন জমির মিউটেশন কপিসহ বর্তমান জমির অবস্থার বিবরণ, কেন কোম্পানি তাদের শেয়ারের ডিম্যাট প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেনি সে সংক্রান্ত বিবৃতি, ২০২০-২১ এর বার্ষিক প্রতিবেদনে প্রকাশিত ইপিএসে বিশাল উল্লম্ফনের প্রমাণ হিসেবে সমস্ত সহায়ক নথি বা গত ৫ বছরের আর্থিক বিবৃতি, ওটিসি বাজারে যাওয়ার পর স্থায়ী সম্পদের নিষ্পত্তির বিবরণ (যদি থাকে) তা জমা দিতে বলেছিল। এর আগে, ২০০০ সালে ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য কাঁচামাল এবং যন্ত্রপাতি আমদানি করতে রাষ্ট্র পরিচালিত অগ্রণী ব্যাংক থেকে ১৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা নিয়েছিল। কিন্তু ব্যবস্থাপনা ও মালিকদের প্রচেষ্টার অভাবের জন্য এটি করতে ব্যর্থ হয় এবং ফলস্বরূপ, সময়মতো ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হয়।