Print Date & Time : 11 August 2025 Monday 6:45 pm

কোরবানির পশুরহাটে ‘মাস্ক আমার সুরক্ষা সবার’ ক্যাম্পেইন

শেয়ার বিজ ডেস্ক: আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে স্থাপিত কোরবানির পশুরহাটে কভিড-১৯ বিষয়ক সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ‘মাস্ক আমার সুরক্ষা সবার’ ক্যাম্পেইন শুরু হয়েছে। গতকাল অনলাইনে আয়োজিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এ ক্যাম্পেইন উদ্বোধন করেন।

বর্তমান কভিড পরিস্থিতিতে জীবন ও জীবিকার ভারসাম্য বজায় রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে টিকা গ্রহণের পাশাপাশি সঠিকভাবে মাস্ক পরিধানের কোনো বিকল্প নেই। ডিএনসিসি এবং চসিকের সহযোগিতায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, এটুআই ও শক্তি ফাউন্ডেশন কর্তৃক আয়োজিত দেশব্যাপী এ কার্যক্রমের সঙ্গে রয়েছে গবেষণা সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইয়েল-বিশ্ববিদ্যালয়, ইনোভেশন ফর পোভার্টি অ্যাকশন (আইপিএ) ও ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিআইজিডি)। আর্থিক সহযোগী প্রতিষ্ঠান-সিটি ফাউন্ডেশন ও ফুডপান্ডা। মাস্ক বিতরণে সহযোগী প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) ইয়াং বাংলা এবং বিডি ক্লিন। এ  কার্যক্রমের আওতায় ডিএনসিসির ৯টি এবং চসিকের দুটি গবাদি পশুরহাটে আগামী আজ থেকে জুলাই পর্যন্ত চার দিনব্যাপী বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণ করার পাশাপাশি সারাদেশের জনসাধারণকে সঠিকভাবে মাস্ক পরার বিষয়ে অনুপ্রাণিত করতে বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণ এবং সরকারের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা নাগরিকদের মধ্যে প্রচার করা হবে। এ ক্যাম্পেইনের আওতায় গবাদি পশুরহাটে ৫০০ প্রোমোটারের মাধ্যমে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবস্থা করা হবে এবং প্রায় আট লাখ মাস্ক বিতরণ করা হবে।

ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, জাতীয় হেল্পলাইন সেবা ৩৩৩-এর মাধ্যমে বিভিন্ন জরুরি সেবার পাশাপাশি খাদ্য সহায়তাও পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। আইসিটি বিভাগের সহায়তায় সবার ঢাকা অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। অ্যাপের মাধ্যমে কোনো নাগরিক অভিযোগ করলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই এর সমাধান হবে কী হবে না, সে সাড়া পাবেন। হাসপাতালগুলোতে হাই ফ্লো ন্যাজাল ক্যানোলা প্রদানের জন্য বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘কভিডের মতো কোরবানিও একটি বাস্তবতা। কভিডকে ম্যানেজ করেই আমাদের চলতে হবে। কভিড ম্যানেজমেন্টের অংশই হলো মাস্ক পরা। আমাদের সবাইকে মাস্ক পরতে হবে। আমরা লজ্জা নিবারণের জন্য যেমন পোশাক পরি তেমনি কভিড থেকে জীবন বাঁচানোর জন্য মাস্ক পরতে হবে।’

চট্টগ্রামের কোরবানির হাটগুলোতে মাস্ক পরার সচেতনতা বৃদ্ধিতে নেয়া উদ্যোগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, আসন্ন ঈদকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রামের পাঁচটি পশুরহাটের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এ হাটগুলোয় মাস্ক ও সেনিটাইজার বিতরণ করা হচ্ছে। মাস্ক ছাড়া যাতে কেউ হাটে ঢুকতে না পারে সেজন্য ইজারাদারদের শর্ত দেয়া হয়েছে। কোরবানির জন্য একটি পশু কেনার জন্য মাত্র একজনকে হাটে ঢুকতে দেয়া হবে ও জনগণকে সচেতন করতে নিয়মিত মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’

জীবন ও জীবিকার ভারসাম্য বজায় রেখে অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে টিকা গ্রহণের পাশাপাশি সঠিকভাবে মাস্ক পরার অভ্যাসের ওপর গুরুত্বারোপ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, জীবন ও জীবিকা দুটোকেই রক্ষা করে দেশের সব কার্যক্রম সচল রাখা এবং পরিবারের সবাইকে সুরক্ষিত রাখতে আমাদের সঠিক পদ্ধতিতে মাস্ক পরার অভ্যাস করতে হবে। সঠিক পদ্ধতিতে মাস্ক পরার অভ্যাস তৈরি করতে পারলে আমরা জীবনও রক্ষা করতে পারব এবং জীবিকাকেও রক্ষা করতে পারব। আস্তে আস্তে মাস্ক পরার অভ্যাসকে রীতি ও সংস্কৃতিতে পরিণত করতে হবে। এজন্য সবার জন্য বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণ করা, মাস্ক পরার প্রয়োজন ও পদ্ধতি সম্পর্কে জনগণকে সচেতন করে তোলা, মাস্ক পরিধানকে আবশ্যকীয় করা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ দায়িত্বশীল সবাইকে মাস্ক পরিধান প্রক্রিয়ায় যুক্ত করতে হবে।

সামাজিক সংগঠনগুলোর পাশাপাশি রাজনৈতিক সংগঠনগুলোকেও মাস্ক পরার ক্যাম্পেইনে যুক্ত করার আহ্বান জানিয়ে মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, দেশের শিক্ষা পরিবেশ চলমান রাখার লক্ষ্যে বিদ্যালয়গুলো খুলে দেয়ার চেষ্টা করছি। এ পরিকল্পনার গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে মাস্ক পরা। শিক্ষার্থীদের পর্যায়ে যদি আমরা মাস্ক পরার অভ্যাসটা সৃষ্টি করতে পারি তাহলে আগামীতে যে প্রজš§ তৈরি হবে তাদের মধ্যে মাস্ক পরার প্রবণতা বাড়বে।