Print Date & Time : 5 July 2025 Saturday 11:36 am

কোলেস্টেরল কমাতে পোর্টফোলিও ডায়েট

মো. ইকবাল হোসেন : বর্তমান সময়ে হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং হাইপার কোলেস্টেরলেমিয়া রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। তাদের রক্তে ক্ষতিকর কোলেস্টেরল ও এলডিএলের পরিমাণ অনেক বেশি থাকে, যা হার্টের জন্য ঝুঁকি তৈরি করে।
পোর্টফোলিও ডায়েট: পোর্টফোলিও ডায়েট রক্তের কোলেস্টেরল ও এলডিএলের পরিমাণ কমাতে একটি বিশেষ খাবার ব্যবস্থাপনা, যেখানে সব প্রাণিজ উৎস থেকে পাওয়া খাবার বাদ দেয়া হয় এবং উদ্ভিজ্জ খাবারের আধিক্য থাকে। পোর্টফোলিও ডায়েটের পাঁচটি বৈশিষ্ট্য থাকে।

১. প্রাণিজ খাবার বাদ: প্রাণিজ প্রোটিন, যেমন- মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার বন্ধ করতে হবে। এই খাবারগুলো স্বাভাবিকভাবেই কম আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটসমৃদ্ধ হয়। ফলস্বরূপ এই খাবারগুলো রক্তের কোলেস্টেরল, এলডিএল বাড়ায় এবং গুড ফ্যাট এইচডিএল কমায়, যা দীর্ঘদিন চলতে থাকলে উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের রোগ সৃষ্টি করে।

২. উদ্ভিদ প্রোটিন খেতে হবে: মটরশুঁটি, মসুর ডাল, মুগডালসহ সব ধরনের ডাল, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, সব ধরনের বাদাম এবং সয়াবিন থেকে তৈরি খাবার। একটি গবেষণা থেকে দেখা যায়, প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫ গ্রাম সয়া প্রোটিন গ্রহণ করলে হৃদরোগের ঝুঁকি কম হতে পারে। সয়া প্রোটিন সয়া মিট, সয়া দুধ, সয়া দইÑ বিভিন্নভাবে বাজারে পাওয়া যায়। এ ছাড়া টকজাতীয় দেশি ফল খাবারের তালিকায় রাখা যাবে।

৩. দ্রবণীয় ফাইবার (সলিবল ফাইবার): দ্রবণীয় ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ওট, বার্লির মতো শস্য, বেগুন, ঢ্যাঁড়শ, আপেল, কমলা, বেরিজাতীয় ফল দ্রবণীয় ফাইবারের খুব ভালো উৎস। ইসবগুলের ভুসি ও সব ধরনের শাকসবজিতেও দ্রবণীয় ফাইবার পাওয়া যায়।

৪. ফাইটোস্টেরল: ফাইটোস্টেরল উদ্ভিদের জৈবিক ঝিল্লির কাঠামোগত উপাদান, যা স্টেরল ও স্ট্যানলের সমন্বয়ে গঠিত। অলিভ অয়েল, সানফ্লাওয়ার অয়েল, নারকেল তেল, বাদাম, সয়াবিন, মটর ও ক্যানোলা তেলে প্রাকৃতিকভাবে বিদ্যমান।
৫. মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট: স্যাচুরেটেড ফ্যাটের পরিবর্তে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট ব্যবহার করতে হবে। এই চর্বি কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে। তাই রান্নায় জলপাই তেল, সূর্যমুখীর তেল ব্যবহার করতে হবে। এছাড়া অ্যাভোকাডোতেও পর্যাপ্ত পরিমাণে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে।

তবে শুধু ডায়েট মেনে চলাই যথেষ্ট নয়। উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে; ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে; ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে; প্রয়োজনে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিতে হবে।

লেখক: জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল