ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন কেন: মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক: মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে থাকলে টিসিবির ট্রাকের পেছনে কেন দীর্ঘ সারি সেই প্রশ্ন সরকারের প্রতি ছুড়েছেন নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না। তিনি বলেছেন, ‘জিনিসপত্রের দাম এত বেড়েছে যে, মানুষ বেকুব হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের প্রধানমন্ত্রী দুদিন আগে সংসদে বলেছেন, দ্রব্যমূল্য জনগণের সহ্যের মধ্যে আছে। বুঝেন, ১০ টাকা চাল খাওয়ানোর কথা ছিল, সেই চালের দাম আজকে ৭০ টাকা! তারপরেও লজ্জা নাই। বলে কি না এমন কোনো দাম বাড়ে নাই, মানুষের টাকা আছে কেনার ক্ষমতা বেড়েছে, তিনগুণ ক্ষমতা বেড়েছে যে মানুষ কিনে খেতে পারে।’

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও দুর্নীতির প্রতিবাদে গতকাল শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিএনপির গণঅনশন কর্মসূচিতে এ কথা বলেন মান্না।

মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘একটাই কাজ করতে হবে, এমন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে সরকার যাতে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয় এবং পালাবার কোনো পথ না পায়। আমি বলি, মানুষ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আরও যদি সোজাসাপ্টা বলি, মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে।’

আমি যদি জনগণের জন্য আন্দোলন করি, ন্যায্য আন্দোলন করি মানুষের কাছে যাব, মানুষের সঙ্গে বসব, তার সঙ্গে কথা বলব। ডাক দেব আপনাদের, সারাদেশ বন্ধ হয়ে যাবে; বন্ধ হয়ে যাবে ওদের ক্ষমতার আস্ফালন, ওদের ক্ষমতার লাঠি ঘোরানোও বন্ধ হবে, ক্ষমতার দাপট দেখানো বন্ধ হবে, পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপির যৌথ উদ্যোগে অনশন শুরু হয় সকাল ১০টায়। বেলা ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ারুল্লাহ চৌধুরী বিএনপির মহাসচিব এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনকে পানি খাইয়ে অনশন ভঙ্গ করান।

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদে গত ফেব্রুয়ারি থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ, জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি পেশ, লিফলেট বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয় বিএনপির তরফে। সর্বশেষ গত বৃহস্পতিবার জেলায় জেলায় প্রতীকী অনশন কর্মসূচি করেছে তারা।

অনশন কর্মসূচিতে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, সব কথার এক কথাÑসরকারের পদত্যাগ; সবার এক কথা সুষ্ঠু নির্বাচন। এই লক্ষ্যে আমাদের মধ্যে বিভেদ নেই।

তিনি বলেন, হাসিনা সরকারকে দাফন না করতে পারলে যে ধরনের সরকারই চান তা হবে না; না। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে সরকারের পতন ঠিক করি, তারপরে সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন করি, তারপরে দেশটা মেরামত করি।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেন, লগি-বৈঠা আমাদের অস্ত্র নয়। এই অস্ত্রের প্রয়োজন আছে আজকে যারা সরকার চালায়। আমাদের অস্ত্র লগি-বৈঠা নয়। বিএনপির অস্ত্র হচ্ছে জনগণ। এই জনগণকে নিয়ে আমরা এই সরকারের পতন ঘটিয়ে এদেশে জনগণের সরকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করব।

কর্মসূচির সূচনায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আসুন আমরা আজকে এই গণঅনশনের মধ্য দিয়ে আমাদের যে প্রতিবাদ তা দেশের সব মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে চাই।

বিএনপির মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমানউল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব আমিনুল হক ও দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদের সঞ্চালনায় গণঅনশনে বিএনপির নজরুল ইসলাম খান, আবদুস সালাম, খায়রুল কবির খোকন, ফজলুল হক মিলন, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বক্তব্য রাখেন।