প্রতিনিধি, ইবি : বরাদ্দকৃত ক্লাসরুম বুঝিয়ে দেওয়ার দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো আন্দোলনে নেমেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা। রবিবার (২ ফেব্রুয়ারী) সকাল দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা৷ একই দাবীতে গতকাল সকাল থেকেও দাবী আদায়ে আন্দোলন করে উক্ত বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এসময় শিক্ষার্থীদের হাতে শিক্ষা সবার অধিকার, স্পোর্টস সাইন্স কেন বঞ্চিত বারবার; কোথায় পড়বো কোথায় শিখবো? ক্লাসরুম চাই, ক্লাসরুম চাই; সবার নাই ক্লাসরুম, ইবি প্রশাসন দিচ্ছে ঘুম; আমাদের অধিকার ক্লাসরুম দিতে হবে; অন্য বিভাগ স্বর্গে, স্পোর্টস সাইন্স কেন মর্গে ইত্যাদি প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা প্রশাসনের টালবাহানা, মানিবা মানবো না; উই ওয়ান্ট জাস্টিস; আমাদের সংগ্রাম চলবেই চলবে; আমার নাই ক্লাসরুম, প্রশাসন দিচ্ছে ঘুম; একশান একশান, ডাইরেক্ট একশান; বৈষম্যর কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকে।
জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরে জিমনেশিয়ামে ক্লাস করলেও বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় শারীরিক শিক্ষা বিভাগে ক্লাসরুমের সংকট দেখা দিয়েছে৷ বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হওয়ার পর ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগ অনুষদ ভবন থেকে ওই ভবনে স্থানান্তরিত হলে অনুষদ ভবনের ক্লাসরুম গুলো শারীরিক শিক্ষা বিভাগকে বরাদ্দ দেওয়ার কথা ছিলো।
গত ৮ অক্টোবর অনুষদ ভবনের তৃতীয় তলার ৩০১,৩০২,৩৩৭, ৩৩৭(ক), ৩৩৮,৩৩৯,৩৪০,৩৪২,৩৪৩,৩৪৪ নং কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয় শারীরিক শিক্ষা বিভাগকে। এছাড়াও ফোকলোর স্টাডিজ কর্তৃক ব্যবহৃত রুম গুলোও শারীরিক শিক্ষার অধীনস্থ থাকবে বলে জানান কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন। কিন্তু বরাদ্দকৃত ক্লাসরুম আর বুঝে পায়নি শারীরিক শিক্ষা বিভাগ।
শিক্ষার্থীরা বলেন, গতকাল আমরা আন্দোলনে নেমেছিলাম। এরপর প্রশাসনের আশ্বাসে আমরা গতকালের মতো চলে গেলেও পরবর্তীতে আমরা কোনো সমাধান পাইনি। ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেয়ার পরও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের বিন্দুমাত্র ভ্রুক্ষেপ হয়নি। তাই আমরা আজকেও মানববন্ধন এবং অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আমাদের বরাদ্দকৃত শ্রেণিকক্ষ আজকের মধ্যেই ফিরিয়ে দিতে হবে। নইলে আমাদের কর্মসূচী চলমান থাকবে।
শিক্ষার্থী আসিফ বলেন, আমরা স্পোর্টস সায়েন্সের ৩টি ব্যাচ আমাদের কোনো ক্লাসরুম নেই। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন ভবনে জায়গা না পেয়ে জিমনেশিয়ামে আমাদের ক্লাস করতে দেওয়া হয়। তিন মাস আগে অনুষদ ভবনে ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি ব্যবহৃত ১০ টি ও ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের আরও ৮টি শিক্ষক ও ক্লাসরুম বরাদ্দ আছে। কিন্তু প্রশাসনের টালবাহানায় আমাদের বিভাগকে রুমগুলো হস্তান্তর করছে না। এজন্য আজ আমরা এখানে আন্দোলন করছি। আমরা আমাদের বরাদ্দকৃত ক্লাসরুমে ক্লাস করতে চাই।
এর আগে বিভিন্ন সময় ক্লাসরুমের দাবিতে আন্দোলন করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ, ফোকলোর স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থীরা। একই দাবীতে আমরণ অনশন পর্যন্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থীরা৷ এছাড়া একই দাবীতে মুখে কালো কাপড় বেধে আন্দোলন করেছে সমাজকল্যাণ বিভাগ।
