Print Date & Time : 2 August 2025 Saturday 2:59 pm

ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর আইপিও কোটার মেয়াদ শেষ আজ

মুস্তাফিজুর রহমান নাহিদ: ইনিশিয়াল পাবলিক অফারে (আইপিও) ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের কোটার মেয়াদ আজ শেষ হচ্ছে। নতুন করে এই সময়সীমা বাড়বে কি না, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা।
সূত্র জানিয়েছে, আইপিওর কোটার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করা হয়েছে। সেখান থেকে সবুজ সংকেত পেলেই কেবল ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের আইপিওতে কোটার মেয়াদ বাড়বে।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে পুঁজিবাজার ধসে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা ২০১২ সাল থেকে আইপিও কোটা সুবিধা ভোগ করে আসছেন। এর সময়সীমা ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়। এ অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে সময় বাড়ানোর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে আবেদন করে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। যে কারণে চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত এর সময়সীমা বাড়ানো হয়। এর আগে ২০১২ সালের ১ জুলাই থেকে ২০১৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ২০ শতাংশ কোটায় আবেদনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
২০১০ সালের পুঁজিবাজার ধসে ক্ষতিগ্রস্ত আবেদনকারীর সংখ্যা ৯ লাখ ৩৩ হাজার ২৮০ জন। তালিকায় রয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ২০৪ ব্রোকারেজ হাউজের সাত লাখ ৩৯ হাজার ৮৮৩ জন, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ১০৩টি ব্রোকারেজ হাউজের এক লাখ ৫৪ হাজার ২৭৭ জন এবং ২৫ মার্চেন্ট ব্যাংকের ৩৯ হাজার ১২০ জন।
পুঁজিবাজারে অস্বাভাবিকতা রোধ, স্থিতিশীলতা ও ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর স্বার্থরক্ষায় ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালকের নেতৃত্বে বিশেষ সুবিধা দিতে ২০১২ সালের ৫ মার্চ স্কিম ঘোষণা করে। মিউচুয়াল ফান্ড ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের মতো নির্ধারিত কোটার মতো এই স্কিমে মার্জিন ঋণ হিসাব ও নন-মার্জিন হিসাব (বিও) উভয় ক্ষেত্রে চিহ্নিত ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীর জন্য ২০১২ থেকে ২০১৩ পর্যন্ত ইস্যু হওয়া সব পাবলিক ইস্যুতে ২০ শতাংশ কোটা সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এখন পর্যন্ত এর মেয়াদ পঞ্চমবারের মতো বাড়ানো হয়েছে।
প্রথম দফায় ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত আইপিও কোটার মেয়াদ বাড়ানো হয়। এই মেয়াদ শেষের পর সাধারণ বিনিয়োগকারীর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এক বছর সময় বাড়িয়ে ২০১৫ পর্যন্ত করা হয়। তৃতীয় দফায় ২০১৬ সালের জুন ও চতুর্থ দফায় ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। সর্বশেষ এর মেয়াদ বাড়ানো হয় চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
বিষয়টি জানতে যোগাযোগ করা হলে ডিএসইর একজন পরিচালক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা বহুদিন থেকে এই সুবিধা ভোগ করে আসছেন। এই সময়সীমা আর বাড়ানো ঠিক হবে না। কারণ তাদের জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আইপিও থেকে বঞ্চিত হন।
পাবলিক ইস্যু রুলস ২০১৫ অনুযায়ী, ফিক্সড প্রাইজ পদ্ধতিতে আইপিও ক্ষেত্রে ইলিজেবল ইনভেস্টরদের (মার্চেন্ট ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক, স্টক ডিলার, ইন্স্যুরেন্স, অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট ও অলটারনেটিভ বিনিয়োগ ফান্ড প্রভৃতি) জন্য ৫০ শতাংশ, যার মধ্যে ১০ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ও অন্যান্য বিনিয়োগকারী ৪০ শতাংশ। সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য ৫০ শতাংশ। এতে ১০ শতাংশ নন-বাংলাদেশি ও ৪০ শতাংশ অন্যান্য।
এদিকে বুক বিল্ডিং পদ্ধতিতে ইলিজেবল বিনিয়োগকারীর জন্য ৬০ শতাংশ কোটা রয়েছে, যাতে ১০ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ও ৫০ শতাংশ অন্যান্য। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য ৪০ শতাংশের মধ্যে ১০ শতাংশ নন-বাংলাদেশি ও ৩০ শতাংশ অন্যান্য বিনিয়োগকারী। বিশেষ স্কিমের আওতায় সাধারণ বিনিয়োগকারীর কোটা থেকে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা ২০ শতাংশ কোটা সুবিধা পেয়ে থাকেন।