আসাদুজ্জামান রাসেল, রাজশাহী: রাজশাহীর বরেন্দ্র অঞ্চলের আমন আবাদ খরার কবলে পড়েছে। প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত না হওয়া এবং প্রচণ্ড রোদ ও দাবদাহ আমন ক্ষেত ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। ফলে ক্ষেতের ধান বাঁচানো এখন দায় হয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় কৃষকরা পুকুর, ডোবা-নালার পানি সেচ দিয়ে কোনো রকমে ধান বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তবে রোদের তীব্রতায় মুহূর্তেই মাঠ শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা বলছেন, সহসা বৃষ্টিপাত না হলে এ অঞ্চলের আমন আবাদ এবার চরম বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। অনেক কষ্টার্জিত ফসল ক্ষেতেই নষ্ট যাবে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজশাহী, নওগাঁ, নাটোর ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় আমন আবাদ হয়েছে তিন লাখ ৫০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে। শুধু রাজশাহী জেলায় এবার আমন চাষ হচ্ছে ৭৩ হাজার ৩৮৭ হেক্টরের বেশি জমিতে। এখন ধানের থোড় হওয়ার সময়। জমিতে সেচের প্রয়োজন। তবে বরেন্দ্র অঞ্চলের উঁচু এলাকায় খরার কারণে মাটি ফেটে যাচ্ছে। অনেকে সেচ দিয়ে ধান বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। তবে যেসব এলাকায় গভীর নলকূপ নেই সে এলাকার কৃষকরা শঙ্কায় পড়েছেন।
তানোর ও গোদাগাড়ী উপজেলার কিছু এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মাঠের পর মাঠ সবুজে সমারোহ। কিছু ক্ষেতে কৃষক গভীর নলকূপ দিয়ে সেচ দিলেও উঁচু জমিগুলো ফেটে চৌচির হয়ে গেছে। সবুজ পাতাগুলো বৃষ্টির অভাবে মরে যেতে শুরু করেছে। তানোর পাঁচন্দর গ্রামের কৃষক জাহিদুর রহমান জানান, বরেন্দ্র প্রকল্পের আওয়ার বাইরে যেসব জমিতে ধান চাষ করা হয়েছে সেগুলোর অবস্থা খুবই খারাপ। এ জমিগুলো মূলত বৃষ্টিনির্ভর। এ সময় ধানের প্রয়োজনীয় পানির জন্য প্রাকৃতিক এ উৎস নির্ভরতা থাকে সবার। কিন্তু বৈরী আবহাওয়ায় কৃষকরা সংকটে পড়েছেন। স্থানীয়ভাবে ডোবা, পুকুর থেকে সেচ দিয়ে কূলকিনারা পাওয়া যাচ্ছে না।
তানোর উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সমশের আলী জানান, বরেন্দ্র অঞ্চলে আমন চাষাবাদ মূলত বৃষ্টির পানির ওপর নির্ভরশীল। অনেক উঁচু জমিতেও কৃষকরা চাষাবাদ করে থাকেন। গত ২৫ দিন ধরে বরেন্দ্র অঞ্চলে বৃষ্টির দেখা নেই। অঞ্চলভেদে যেটুকু হয়েছে তাও সামান্য। বর্তমানে প্রতিটি ক্ষেতে আমন এখন ভরা যৌবনে আছে। এখন বৃষ্টি খুবই জরুরি হয়ে পড়েছে। সময়মতো বৃষ্টি না হলে ফলন অর্ধেকে নেমে আসবে।
