Print Date & Time : 8 July 2025 Tuesday 10:03 pm

খামারে নেপিয়ার ঘাস খেয়ে অসুস্থ, মারা গেল ২৭টি গরু

প্রতিনিধি, নেত্রকোনা: নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলায় নেপিয়ার ঘাস খাওয়ার পর একটি খামারের ষাঁড়, গাভি, বাছুরসহ ২৭টি গরুর মৃত্যু হয়েছে। রোববার থেকে গতকাল মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত সদর ইউনিয়নের পশ্চিম পাড়া গ্রামের তাহাযিদ অ্যাগ্রো ফার্মে এ ঘটনা ঘটে। এ ছাড়া খামারটির আরও বেশ কয়েকটি গরু অসুস্থ আছে।

খামারের মালিক জাহেরুল ইসলাম বলেন, তার খামারে দুই শতাধিক ছোট-বড় গরু আছে। এর মধ্যে ষাঁড় বেশি। কোরবানির ঈদ কেন্দ্র করে তিনি ষাঁড়গুলো বিক্রির প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। শনিবার সন্ধ্যায় তার নিজস্ব ক্ষেত থেকে নেপিয়ার কাঁচা ঘাস খাওয়ানোর পরই গরুগুলো অসুস্থ হতে শুরু করে। পরদিন রোববার দুপুর থেকে একের পর এক গরু মারা যেতে থাকে। সর্বশেষ গতকাল মঙ্গলবার রাত ৮টায় একটি ষাঁড় গরু মারা যায়। এ নিয়ে সব মিলিয়ে খামারের ২৭টি গরু মারা গেছে। এর মধ্যে দুটি দুধের গাভি ও দুটি বাছুর ছাড়া অন্য ২৩টি ষাঁড়। খামারির দাবি, গরুগুলোর বর্তমান বাজারমূল্য প্রায় ৭০ লাখ টাকা। 

জাহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ওই দিন বাড়িতে না থাকায় খামার দেখাশোনা করার লোকজন ক্ষেত থেকে কচি ঘাস কেটে সঙ্গে সঙ্গে গরুগুলোকে খেতে দেয়ায় এই সমস্যা হয়েছে। সাধারণত নেপিয়ার ঘাস আগের দিন কেটে রেখে পরদিন দেয়া হতো। অথবা দুই ঘণ্টার মতো রোদে রেখে প্রাণীগুলোকে খেতে দেয়া হতো। খামারের ২০৩টি গরুর মধ্যে অন্তত ৫০টি গরুকে এই ঘাস খেতে দেয়া হয়েছিল। মারা যাওয়ার পর খামারে এখনও চারটি গরু অসুস্থ। উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা এসে মৃত গরুগুলো নমুনা ও ঘাসের নমুনা সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন।’ তিনি বলেন, ‘বড় ধরনের ক্ষতি হয়ে গেল আমার। কী করব, কিছুই বুঝতে পারছি না। ঋণ করে খামারটি করেছিলাম।’

পূর্বধলা উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা এমএমএ আউয়াল তালুকদার বলেন, বৃষ্টির সময় কচি ঘাসে নাইট্রোজেনের মাত্রা বেশি থাকে। নাইট্রেট বিষক্রিয়ায় গরুগুলো মারা যেতে পারে। ঘাসের নমুনা ও মারা যাওয়া গরুর নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষার পর আরও বিস্তারিত জানা যাবে। এ ব্যাপারে খামারির সঙ্গে অধিদপ্তরের মেডিকেল দল সার্বক্ষণিক চিকিৎসাসেবা প্রদানসহ খোঁজখবর রাখছে। তিনি আরও বলেন, খামারিদের গরুকে শুধু কাঁচা ঘাস দেয়া থেকে বিরত থাকা উচিত। এ ছাড়া নেপিয়ার ঘাস কাটার সঙ্গে সঙ্গে গরুকে খেতে দেয়া উচিত নয়।