খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার বিষয়ে শিগগির অভিমত: আইনমন্ত্রী

ফাইল ছবি

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার বিষয়ে করা আবেদনের ওপর শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয় তাদের অভিমত দেবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল রাজধানীর লেকশোর হোটেলে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ তথ্য দেন।

খালেদা জিয়ার আবেদনটি নিষ্পত্তিতে দীর্ঘদিন ব্যয় হওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে বিএনপি-সমর্থিত ১৫ আইনজীবী এসেছিলেন। তাদের বক্তব্যের মধ্যে কোথাও আইনি কোনো সাপোর্ট আছে কি না, সেটা দেখেছি। কিন্তু কোনো সাপোর্ট আমি পাইনি। তাদের বক্তব্য কোনো আদালত সাপোর্ট করেননি। বরং আমি যে বক্তব্য দিয়েছি, সেটা সংসদেও বলেছিলাম, অনেক রায়ে সেটারই সাপোর্ট আছে। তবে খুব শিগগিরই আইন মন্ত্রণালয়ের অভিমত দিয়ে দেব।’

খালেদা জিয়াকে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানোর ক্ষেত্রে মানবিক হওয়ার সুযোগ আছে কি নাÑজানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আমাকে আইনের মধ্যে থেকেই দেখতে হবে। সরকার যখন কোনো পদক্ষেপ নেয়, তারা আরবিট্রারি পদক্ষেপ নিতে পারে না। তাই সরকারকে আইনি পদক্ষেপ নিতে হয়। এর আগে প্রধানমন্ত্রীর যে মানবিক বিবেচনায় তাকে মুক্তি দেয়া হয়েছিল, তাও কিন্তু ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারার বিধানমতে।’

এছাড়া মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় কমিশনকে অবিচল থাকার আহ্বান জানিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদ-বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি বলেন, সবার প্রত্যাশা উন্নত বাংলাদেশের উপযোগী মানবাধিকার পরিবেশ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করে যাবে। দেশ পরিচালনায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে মানবাধিকার রক্ষার বিষয় নিয়ে কমিশনের ভিন্নমত থাকতে পারে, দ্বন্দ্ব হতে পারে, সমালোচনার সম্মুখীন হতে পারে, কিন্তু কমিশনকে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে অবিচল থাকতে হবে। ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার যে লক্ষ্যে স্বাধীন মানবাধিকার কমিশন গঠন করে দিয়েছে, সেই লক্ষ্য সমুন্নত রাখতে হবে।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্য যে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট থেকে ১৯৯৬ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত আমরা মানবাধিকারকে ভূলুণ্ঠিত করতে দেখেছি। সেই দুঃখজনক অভিজ্ঞতার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন আইন, ২০০৯’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ আইন প্রণয়ন করে মানবাধিকার রক্ষার জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গঠন করেন। আমাদের দেশে মূলত মানবাধিকার রক্ষার চর্চা শুরু হয় সেই থেকে। তারপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের আন্তরিক সহযোগিতায় এ কমিশনের অগ্রযাত্রা ঘটতে থাকে। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও মানবাধিকার রক্ষার ব্যাপারে দেশ অনেকটা অগ্রসর হয়েছে, কিন্তু আরও অনেক দূর আমাদের যেতে হবে।

আইনমন্ত্রী পরামর্শ দেন, ওই সময়ে মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত করার যে মানসিকতা তৈরি করা হয়েছিল, সেই মানসিকতার পরিবর্তন আনতে হলে মানবাধিকার কমিশনকে আরও সুসংগঠিত ও সোচ্চার হতে হবে। ২০০৯ থেকে আজ পর্যন্ত এই ১৩ বছরের অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এখন উন্নয়নশীল দেশ হয়েছে। আমরা বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে পরিচিত হয়েছি। তাই আমাদের গুরুদায়িত্ব এই উন্নয়নের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে মানবাধিকারের বিকাশ ঘটানো।