শেয়ার বিজ ডেস্ক : চার মাস পর আগামী সোমবার লন্ডন থেকে দেশে ফিরবেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সফরসঙ্গী হিসেবে থাকছেন তারই দুই পুত্রবধূ তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি।
লন্ডন থেকে দেশে ফেরার পথে খালেদা জিয়ার সফরসঙ্গী থাকবেন আটজন। তারা হচ্ছেন তারেক রহমানের সহধর্মিণী ডা. জোবায়দা রহমান, কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান সিঁথি, ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডা. আমিনুল হক চৌধুরী, এপিএস মাসুদুর রহমান ও দুই গৃহপরিচারিকা ফাতেমা বেগম ও রূপা হক।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এজেডএম জাহিদ হোসেন খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়টি নিশ্চিত করে গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘ম্যাডামের শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে বেশ ভালো। সবকিছু ঠিক থাকলে তিনি আগামী ৫ মে দেশে ফিরবেন।’
বিএনপির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের একটি নিয়মিত ফ্লাইটে বিশেষ ব্যবস্থায় দেশে ফিরবেন বিএনপির চেয়ারপারসন। দেশে ফিরতে পুরোপুরি এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা পাওয়া না গেলেও লন্ডনে খালেদা জিয়ার চিকিৎসক ও সফরসঙ্গীরা সম্ভাব্য সর্বোচ্চ সুবিধা নিশ্চিত করতে কাজ করছেন। তারেক রহমান পুরো বিষয়টি তদারকি করছেন।
বেগম খালেদা জিয়ার দেশে ফেরার বিষয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, চার মাস পরে আগামী ৫ মে (সোমবার) লন্ডন থেকে দেশে ফিরছেন চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। গতকাল গণমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ইনশাল্লাহ ম্যাডাম আগামী ৫ মে সকালে দেশে ফিরছেন। আমরা যতদূর জানি, তার সঙ্গে দুই বউমা (তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমানের স্ত্রী সৈয়দা শর্মিলা রহমান) আসার কথা রয়েছে।
কেমন আছেন খালেদা জিয়া-জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আলহামদুলিল্লাহ আগের চেয়ে ডেফিনিটলি ভালো আছেন।
কীভাবে দেশে ফিরছেন, সে বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ম্যাডামের দেশে ফেরার ব্যাপারে কাতারের আমিরের কাছ থেকে যে অ্যাম্বুলেন্সটা তাকে লন্ডনে নেয়ার জন্য পেয়েছিলাম, সেটা এখন একটু বিলম্বিত হচ্ছে, টেকনিক্যাল রিজনস। সেজন্য ম্যাডাম ঠিক করেছেন, ওটা (এয়ার অ্যাম্বুলেন্স) যদি শেষ মুহূর্তে না পাওয়া যায়, তিনি বাংলাদেশ বিমানেই আসবেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বাংলাদেশ বিমানে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৪ মে তিনি রওনা হলে ইনশাল্লাহ পরদিন (৫ মে) সকালে দেশে এসে পৌঁছাবেন।
২০১৮ সালে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া একটি দুর্নীতির মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি ছিলেন। করোনা মহামারির সময় বিগত সরকার তাকে বিশেষ বিবেচনায় কারামুক্তি দেয়। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের পতনের পর রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের এক আদেশে খালেদা জিয়া মুক্তি পান। এরপর দুর্নীতির যে দুটি মামলায় তিনি কারাবন্দি ছিলেন, সেগুলোর রায় বাতিল করেন আদালত।
চলতি বছরের ৮ জানুয়ারি উন্নত চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়াকে লন্ডনে নিয়ে যাওয়া হয়। টানা ১৭ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর লন্ডন ক্লিনিক থেকে গত ২৫ জানুয়ারি খালেদা জিয়াকে তারেক রহমানের বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। অর্ধযুগের বেশি সময় পর এবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ঈদ উদযাপন করেছেন খালেদা জিয়া।
তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কারাবন্দি থাকা অবস্থায় চারটি ঈদ কেটেছে কারাগার ও বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে।
বর্তমানে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় চিকিৎসাধীন রয়েছেন খালেদা জিয়া। সেখানে খালেদা জিয়ার পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছেন।