Print Date & Time : 10 September 2025 Wednesday 6:53 pm

গম লুটের অভিযোগ লাইটার জাহাজ শ্রমিকদের বিরুদ্ধে

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মাস খানিক আগে মাদার ভেসেলে গম আনা হয়। সেই গম আমদানিকারকের মনোনীত লাইটার জাহাজের ‘এমভি তাহমিনা রহমান খান-১’ এ বোঝাই করা হয়। এ লাইটার জাহাজে ২০০০ মেট্রিক টন গম বোঝাই করা হয়। বোঝাইকৃত গম জাহাজের কর্মকর্তা ও শ্রমিকরা নির্দিষ্ট আমদানিকারককে বুঝিয়ে না দিয়ে অন্য পক্ষের কাছে বিক্রয় করে দেয়ার অভিযোগ ওঠে। এতে জাহাজ মালিক ও শ্রমিকদের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকা লুটপাটের অভিযোগ তোলা হয়। বিষয়টি নিয়ে আমদানিকারক, শিপিং এজেন্ট, লোকার এজেন্ট ও লাইটার জাহাজ মালিকদের সঙ্গে বিরোধ চলছে। 

সমতা শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং এজেন্সিজ সূত্রে জানা যায়, চট্টগ্রামের নাবিল গ্রুপের গত ১৩ জুন এমভি জাগ রাডা নামের একটি গমবাহী মাদার ভেসেলে আমদানিকারকের চাহিদা অনুসারে গম নিয়ে বিদেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের জন্য আসে। এ জাহাজ থেকে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের বার্থিং সভায় বরাদ্দপ্রাপ্ত জাহাজ এমভি তাহমিনা রহমান খান-১ গত ১৫ জুন গমবোঝাই করে। এরপর ১৯ জুন নারায়ণগঞ্জের রূপসা গন্তব্যে যাত্রা শুরু করে। ২১ জুন খুলনার বাগেরহাটের কাছে শাহ সিমেন্ট ঘাটে নোঙর করে। একই সময়ে বোটনোট গ্রহণ করে। জাহাজ সিরিয়াল অনুসারে আমদানিকারককে গম বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও কিন্তু নির্দিষ্ট জায়গায় লাইটার জাহাজটির উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। পরে আমদানিকারক জানতে পারেন জাহাজ মালিক ও শ্রমিকরা পরস্পর যোগসাজশে গম অন্য পক্ষের কাছে বিক্রি করে দেয়। এতে আমদানিকারকের প্রায় সাড়ে আট কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়।

এ বিষয়ে সমতা শিপিং অ্যান্ড ট্রেডিং এজেন্সির নির্বাহী পরিচালক জামাল হোসেন চিঠির মাধামে লাইটার জাহাজ সেলকে জানান, গত ১৩ জুন এমভি জাগ রাডা নামের একটি গমবাহী মাদার ভেসেলে আমদানিকারকের চাহিদা অনুসারে গম নিয়ে বিদেশ থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরের আসে। এ জাহাজ থেকে ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলের বার্থিং সভায় বরাদ্দপ্রাপ্ত জাহাজ এমভি তাহমিনা রহমান খান-১ গত ১৫ জুন গমবোঝাই করে। এরপর ১৯ শাহ সিমেন্ট ঘাটে নোঙর করে। একই সময়ে বোটনোট গ্রহণ করে। জাহাজ সিরিয়াল অনুসারে আমদানিকারককে গম বুঝিয়ে দেয়ার কথা থাকলেও কিন্তু নির্দিষ্ট জায়গায় লাইটার জাহাজটির উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। এ জাহাজে আমদানিকারকের ২০০০ মেট্রিক টন গম ছিল। যার বাজারমূল্য প্রায় আট কোটি ৪০ লাখ টাকা। যার দায় ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলসহ সংশ্লিষ্ট জাহাজ মালিক ও শ্রমিকদের। 

এ জাহাজের লোকাল এজেন্ট কাদেরিয়া এজেন্টের স্বত্বাধিকারী শফিক আহমেদ শেয়ার বিজকে বলেন, জাহাজের শ্রমিকরা গম অন্য পার্টির কাছে বিক্রি করেছে এ ধরনের ঘটনা আমি শুনেছি। আমি জাহাজের এজেন্ট। আর সমতা শিপিং পণ্যের এজেন্ট। আমাকে সমতা থেকে জানানো হয, জাহাজে এখনও ৮০০ থেকে এক হাজার মেট্রিক টন গম আছে। জাহাজের লোকজন এ ঘটনা ঘটিয়েছে। আসলে জাহাজ শ্রমিকদের বেতন আগের চেয়ে অনেক বাড়ানো হয়েছে। তাদের কাছে পুরো সেক্টর জিম্মি। তাদের কিছু বললে তো আন্দোলন। জাহাজ মালিককে অবশ্যই ঘটনার ক্ষতিপূরণ দিতে

 হবে। এ জন্য ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট সেলও দায়বদ্ধ। কারণ তাদের জাহাজ পরিচালনায় মালিকপক্ষ বন্ড দিয়ে রেখেছে।

অপরদিকে ওয়াটার ট্রান্সপোর্টে সেলের নাম প্রকাশে অনচ্ছিুক একজন কর্মকর্তা শেয়ার বিজকে বলেন, নাবিল গ্রুপের গম এমভি তাহমিনা রহমান খান-১ গত ১৫ জুন বোঝাই করে। এরপর ১৯ জুন নারায়ণগঞ্জের রূপসা গন্তব্যে যাত্রা করে। কিন্তু ২১ জুন খুলনার বাগেরহাটের কাছে শাহ সিমেন্ট ঘাটে নোঙর করে। এটা কীভাবে সম্ভব? এক গন্তব্যের জাহাজ অন্য গন্তব্য কীভাবে যাচ্ছে? এর সাথে অবশ্যই আমদানিকারক, পণ্যের এজেন্টসহ অন্যরা জড়িত। তিনি বলেন, অনেক সময় আমদানিকারকের ইচ্ছায় এক গন্তব্য কথা বলা হলেও বিভিন্ন গন্তব্য পণ্য পরিবহন করা হয়। তারা ভাসমান গুদাম বানিয়ে রাখে। তাদেরও দায় আছে। আর বোটনোট গ্রহণ করা হয়নি। এছাড়া ২০০০ টন গম লুটে কথা বলা হয়েছে। এটাও মিথ্যা। তবে এ ঘটনার সঙ্গে জাহাজের শ্রমিকরা জড়িত।