গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচন : ফজলে রাব্বী মিয়ার আসনে মনোনয়ন প্রত্যাশী ৬ জন

প্রতিনিধি, গাইবান্ধা : গাইবান্ধা-৫ (ফুলছড়ি-সাঘাটা) আসনে নির্বাচনী আমেজ শুরু হয়েছে। ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বী মিয়ার মৃত্যুর শোক কাটিয়ে শূন্য আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন ৬জন প্রার্থী।

সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসন। তাদের মধ্যে প্রয়াত ফজলে রাব্বী মিয়ার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলী, ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন, ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম সেলিম পারভেজ ও যুবলীগ নেতা সুশীল চন্দ্র সরকার।

জেলা বিএনপির সহসভাপতি ফারুক আলম সরকার ও সাঘাটা উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জুর নামও শোনা যাচ্ছে। যদিও বিএনপি কেন্দ্রীয়ভাবে বর্তমান সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে যাবে না বলে আগেই ঘোষণা দিয়েছে।

সাঘাটা-ফুলছড়ি উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত গাইবান্ধা-৫ আসন। এ আসনে আওয়ামী লীগের জনসমর্থন বাড়লেও দুই উপজেলায় অভ্যন্তরীণ দ্ব›দ্ব রয়েছে। এ দ্ব›দ্ব কাজে লাগিয়ে ফসল ঘরে তুলতে চান জাতীয় পার্টির প্রার্থী গোলাম শহীদ রঞ্জু।

তবে প্রয়াত ডেপুটি স্পিকারের ইমেজ ব্যবহারের পাশাপাশি উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নির্বাচনী মাঠে নেমেছেন তার মেয়ে ফারজানা রাব্বী বুবলী। তিনি ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি জানান, প্রায় দুই যুগ ধরে তার বাবার সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক কর্মকান্ডের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে কাজ করেছেন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার বাবার সম্মানে তাকেই নৌকা প্রতীক দেবেন।

তিনি বলেন, ফুলছড়িতে তার শ্বশুরবাড়ি, সাঘাটায় বাবার বাড়ি। নির্বাচনী এলাকায় প্রায় ৪০ হাজার ভোটার তার আত্মীয়স্বজন। তাই নির্বাচনে তিনি বাড়তি সুবিধা পাবেন।

আওয়ামী লীগের আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাকে মনোনয়ন দিলে তিনি নির্বাচনে লড়বেন। আর নির্বাচিত হলে প্রথমেই উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগ বাড়াতে আগে বালাসী-বাহাদুরাবাদ টার্নেল নির্মাণে উদ্যোগী হবেন।

ফুলছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান জি এম সেলিম পারভেজ নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি হিসেবে বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন থেকে সাঘাটা-ফুলছড়ি রক্ষায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ ও চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমান উন্নয়নের চেষ্টা থাকবে। বালাসী থেকে বাহাদুরাবাদ পর্যন্ত টানেল নির্মাণে সরকারকে উৎসাহী করা, উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দ্রুত ও সহজ যোগাযোগে বিকল্প সড়ক নির্মাণ এবং কৃষি-কৃষকের আধুনিকায়নে ব্যবস্থা নেবেন তিনি।

সেই সঙ্গে গাইবান্ধা শহর থেকে সোনাতলা হয়ে মোকামতলা পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণে প্রতিশ্রুতি দেন জি এম সেলিম।

সুশীল চন্দ্র সরকার জানান, দল, মত, জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে আওয়ামী লীগের পতাকাতলে আনা এবং প্রধানমন্ত্রীর হাতকে আরও শক্তিশালী করতে তিনি দলের মনোনয়ন চান।

বিএনপি নেতা ফারুক আলম সরকার বলেন, নির্বাচন কমিশন যদি ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করতে পারে, তাহলে তিনি দলীয় সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে প্রার্থী হবেন। তবে সংশয় তো থেকেই যায়। সুষ্ঠু ভোট তো হবে না। সারা মাস ঠিক থাকবে, ভোটের আগের রাতে সব শেষ করে সিল মেরে নেবে বলেন তিনি।

এ আসনে জাতীয় পার্টির হয়ে কাজ করেছেন অ্যাডভোকেট এ এইচ এম গোলাম শহীদ রঞ্জু। তিনি বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে ভোট নিয়ে সংশয় আছে। তা ছাড়া ইভিএমে ভোট হলে পার্টি নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা, সেটাও বিবেচ্য বিষয়। তবে পার্টির সিদ্ধান্ত হলে তিনি নির্বাচনে লড়বেন এবং বিজয়ী হওয়ার প্রত্যাশা করেন র।