গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩২

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে অবিরাম হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। টানা ১৮ মাস ধরে চালানো এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ৫১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি। হামলার পাশাপাশি ইসরায়েল গাজাতে সর্বাত্মক অবরোধও জারি রেখেছে।

গত মঙ্গলবার ভোর থেকে দিনভর ইসরায়েলি হামলায় আরও ৩২ ফিলিস্তিনির মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ১১ জন গাজার খান ইউনিস শহরের একটি ঘরে বিস্ফোরণে সৃষ্ট আগুনে পুড়ে মারা যান। এর পাশাপাশি ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়া মৃতদেহ উদ্ধারে ব্যবহƒত যন্ত্রপাতিও ধ্বংস করেছে ইসরায়েলি বাহিনী।
গাজা শহরের পশ্চিমাঞ্চলে এক পরিবারের সাত সদস্য নিহত হন বাড়িতে আশ্রয় নেয়ার সময় ইসরায়েলি বিমান হামলায়। নুসাইরাত শরণার্থী শিবিরে আরেক হামলায় নিহত হন তিন বেসামরিক নাগরিক, যাদের মধ্যে ছিল দুই শিশু।

ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, রাতের দিকে গাজা সিটির আল-তুফফাহ এলাকায় আল-দুররা শিশু হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) লক্ষ্য করে গোলাবর্ষণ করে ইসরায়েলি বাহিনী। হাসপাতালের সৌর প্যানেলেও বিমান হামলা চালানো হয় বলে টেলিগ্রামে জানায় তারা।

এদিকে, বার্তাসংস্থা আনাদোলুর খবরে বলা হয়, ইসরায়েল পোলিও টিকা গাজায় প্রবেশ করতে না দেয়ায় ৬ লাখেরও বেশি ফিলিস্তিনি শিশু ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে মন্ত্রণালয় জানায়, টিকা ঢুকতে না দেয়ার কারণে পোলিও প্রতিরোধে শুরু হওয়া চতুর্থ পর্যায়ের ক্যাম্পেইন বন্ধ হয়ে গেছে।

জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সাহায্য সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘গাজা পরিণত হয়েছে এক মরুভূমিতে।’ তিনি জানান, সেখানে আটকে আছে প্রায় তিন হাজার ত্রাণবাহী ট্রাক, যেগুলোতে খাদ্য ও ওষুধ রয়েছে, কিন্তু ইসরায়েলের বাধায় তা গাজার ভেতরে ঢুকতে পারছে না।

গাজায় মানবিক সাহায্য আটকে রাখাকে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে অভিহিত করেছেন জাতিসংঘের ফিলিস্তিনবিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদনকারী ফ্রানচেস্কা আলবানিজে। তিনি বলেন, এর মাধ্যমে গাজাবাসীদের জীবনযাপন আরও দুর্বিষহ করে তাদের ধ্বংসের পথ তৈরি করা হচ্ছে।’

ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এক বিবৃতিতে বলেছে, ২ মার্চ থেকে চলা অবরোধে গাজা এক নজিরবিহীন মানবিক বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। এতে খাবার, পানি, জ্বালানি ও ওষুধের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আশ্রয়কেন্দ্র, হাসপাতাল ও আবাসিক এলাকায় প্রতিদিন হামলা চলছে। এর সবকিছু ইসরায়েলি নেতৃত্বের ‘পূর্বপরিকল্পিত অপরাধ’ বলে অভিযোগ করেছে সংগঠনটি।