গাজার ৪৩% কর্মক্ষম প্রাণী হত্যা

শেয়ার বিজ ডেস্ক: জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) তথ্য অনুযায়ী, যুদ্ধের কারণে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজার ৪৩ শতাংশ কর্মক্ষম প্রাণীকে হত্যা করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এসব প্রাণীর মধ্যে গাধা, ঘোড়া ও খচ্চর রয়েছে। চলতি বছরের গত আগস্ট পর্যন্ত এদের হত্যা করা হয়েছে। বর্তমানে মাত্র ২ হাজার ৬২৭টি কর্মক্ষম প্রাণী জীবিত রয়েছে। খবর: আল জাজিরা।
তবে এখনও ইসরায়েলের যুদ্ধ, জ্বালানি সংকট ও অবরোধের কারণে গাজার মানুষ বেঁচে থাকার জন্য গাধার ওপর নির্ভরশীল। মধ্য গাজার দেইর আল বালাহ শহরের আমিনা আবু মাঘাসিব সেসব মানুষদের একজন, তার জীবিকার মূল ভরসা একটি গাধা ও তার টানা গাড়ি। আমিনা বলেন, যুদ্ধের আগে আমি দুধ এবং দই বিক্রি করতাম, কারখানা আমার কাছ থেকে দুধ কিনে নিত। কিন্তু এখন আমার আয়ের একমাত্র উৎস এই গাধা আর গাড়ি।

যুদ্ধ শুরুর আগে গাধার গাড়ি গাজায় তুলনামূলক কম ছিল। তবে ইসরায়েলের যুদ্ধ এবং অবরোধের ফলে জ্বালানি সংকট ও বিধ্বস্ত পরিবহনব্যবস্থার কারণে এগুলো এখন প্রধান পরিবহনের মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে। বোমা হামলা থেকে পালিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে নিজেদের মালপত্র নিয়ে গাধার গাড়িতে চড়ছেন গাজার উদ্বাস্তু মানুষ। অনেকের জন্য গাধার গাড়িই একমাত্র পরিবহন।
মারওয়া ইয়েস তার পরিবার নিয়ে গাধার গাড়িতে চলাফেরা করেন। তিন সন্তানের এই জননী বলেন, দেইর আল বালাহ থেকে নুসাইরাতে যাওয়ার জন্য আমাকে ২০ শেকেল (৫.৪০ ডলার) খরচ করতে হয়। এটি অনেক বেশি। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে এটি সঙ্গত মনে হয়। তিনি আরও বলেন, যুদ্ধের শুরুতে গাধার গাড়িতে চড়তে লজ্জা পেতাম, কিন্তু এখন আর কোনও বিকল্প নেই।
ইসরায়েলি অবরোধের ফলে গাজায় খাদ্য ও পণ্য পরিবহন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে। যুদ্ধের ফলে ধ্বংসপ্রাপ্ত রাস্তা, জ্বালানি সংকট এবং নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বারবার স্থানান্তরিত হওয়া মানুষদের কারণে সংকট আরও তীব্র হয়েছে। ২৩ বছর বয়সী ইউসুফ মুহাম্মাদ গাজার উত্তরের এলাকা থেকে দক্ষিণে খান ইউনিসে উদ্বাস্তু হয়েছেন। তিনি তার গাধাকে ‘পরিবারের জীবনরক্ষাকারী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সরিয়ে যাওয়ার আদেশে হাজারো মানুষ তাদের মালপত্র নিয়ে নিরাপত্তার জন্য রাস্তায় নেমে পড়ে। এমন সময় গাধার গাড়ি অনেকের জন্য একমাত্র অবলম্বন হয়ে দাঁড়ায়।