প্রতিনিধি, গাজীপুর: নিরাপদ সবজির নিশ্চয়তা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে বিশেষত নগর এলাকার জনগণের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নিরাপদ সবজি উৎপাদনের জন্য দেশব্যাপী কৃষকদের প্রশিক্ষণ, সহায়ক উপকরণ প্রদান, মনিটরিংসহ বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করছে। বাজার ব্যবস্থায় মধ্যস্বত্বভোগীদের প্রভাবের কারণে কৃষক ও ভোক্তা উভয়েই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রকল্পের আওতায় ১৬টি কৃষকের বাজার স্থাপন করছে। গতকাল শুক্রবার গাজীপুরে কৃষকের বাজার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
গতকাল নেদারল্যান্ডস সরকারের সহায়তায় গাজীপুর সিটি করপোরেশন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে গাজীপুর সদরের রাজদীঘির পশ্চিম পাড়ে কৃষকের বাজার উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ২৮নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হাসান আজমল ভূঁইয়া।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারীর সভাপতিত্বে এবং সংস্থার সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার জিয়াউর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার, গাজীপুর সিটির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো আব্দুল হামিদ সরকার, গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক সাইফুল ইসলাম, গাজীপুর উপজেলা কৃষি অফিসার হাসিবুল হাসান, নজরুল ইসলাম সরকার, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের গাজীপুরের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মো. শহীদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে হাসান আজমল ভূঁইয়া বলেন, এলাকাবাসীর জীবনমান উন্নয়নের লক্ষ্যেই কৃষকের বাজার কার্যক্রমটি এ ওয়ার্ডে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। কৃষকের বাজারের মাধ্যমে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতের দিকে আমরা কিছুটা অগ্রসর হলাম। এ ধরনের কার্যক্রম দেশব্যাপী গ্রহণ করা আবশ্যক। কৃষকের বাজারটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তিনি সব ধরনের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দেন।
আয়েশা আক্তার বলেন, কৃষক থেকে ভোক্তা সবাইকে নিরাপদ খাবার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। বর্তমানে উৎপাদন থেকে বাজারজাতকরণ পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ে খাদ্যপণ্য দূষিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণে সব পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা আবশ্যক।
আব্দুল হামিদ সরকার বলেন, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতে গাজীপুর শহরে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার উদ্যোগগুলো প্রশংসনীয়। জনস্বাস্থ্য উন্নয়নে দেশব্যাপী এ ধরনের কার্যক্রম বিস্তৃত করা প্রয়োজন।
সাইফুল ইসলাম বলেন, নিরাপদ সবজি উৎপাদনের জন্য কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের প্রশিক্ষণ প্রদান, জৈবকৃষি ও উত্তম কৃষি ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যথাসম্ভব কম বালাইনাশকের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, সঠিক সময় ও গ্রহণযোগ্য মাত্রায় কীটনাশক প্রয়োগ করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক যাচাইকৃত নিরাপদ চাষিদেরই এ কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করা হয়েছে। তারা আমাদের নিয়মিত তদারকির মধ্যে থাকেন। এভাবে আমরা জনগণের নিরাপদ সবজি প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে পারি।
ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পরিচালক গাউস পিয়ারী বলেন, কৃষকের বাজারে ভোক্তারা সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে নিরাপদ সবজি কিনতে পারবেন। কৃষকের বাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হলেন কৃষক ও এলাকাবাসী। কৃষক কর্তৃক এলাকাবাসীর চাহিদা অনুযায়ী নিরাপদ পণ্য নিয়ে আসা এবং এলাকাবাসী কর্তৃক সার্বিক সহযোগিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমেই এ কার্যক্রমটি সফল করা সম্ভব।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার ঢাকা ফুড সিস্টেম প্রজেক্টের গাজীপুরের ফুড সিস্টেম সিটি কো-অর্ডিনেটর মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা সারা পৃথিবীতে নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য নিশ্চিতের জন্য কাজ করছে।