গারো পাহাড়ে ‘হগ ব্যাজার’ অবমুক্ত

 

প্রতিনিধি, শেরপুর : শেরপুর পৌর এলাকার দীঘারপাড় মহল্লা থেকে দুর্লভ প্রজাতির ‘হগ ব্যাজার’ স্থানীয় ভাষায় গোর খোদক বা বালি খোদক শূকর বলে পরিচিত দুর্লভ প্রাণী উদ্ধার করেছে জেলা বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগ। পরে প্রাণীটিকে গারো পাহাড়ের রাংটিয়া রেঞ্জের গভীর বনভূমিতে অবমুক্ত করা হয়।

বন্যপ্রাণী বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, প্রাণীটি শনিবার দুপুরে শহরের দীঘারপাড় মহল্লায় লাল মিয়া নামক এক ব্যক্তি জমিতে দেখতে পায়। অদ্ভুত প্রাণীটি দেখে লাল মিয়া আশপাশের লোকজনকে ডাক দেয়। পরে তারা প্রাণীটি শিকল দিয়ে দেখে বন বিভাগের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের খবর দেয়।

পরে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের লোকজন এসে প্রাণীটি উদ্ধার করে শনিবার বিকালে জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকার রাংটিয়া রেঞ্জের গজনি বনে অবমুক্ত করে দেন।

এ সময় রেঞ্জের বন প্রহরী জিয়াউর রহমান, আব্দুল হান্নান, মনির হোসেন এবং শেরপুর বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের বন প্রহরী আবু হানিফ উপস্থিত ছিলেন।

বন্য প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের রেঞ্জার মনজুরুল ইসলাম জানায়, হগ ব্যাজারে মুখ মূলত বেশ লম্বা, মুখের সম্মুখভাগ গোলাকার। গায়ের রং ধূসর ও বাদামি। মুখের তুলনায় অঙ্গপ্রত্যঙ্গ কালো। সামনের দু’পায়ের আঙুল বেশ লম্বা নখ রয়েছে, যা অনেকটা শূকরের মতো। এ প্রাণীটি দৈর্ঘ্যে ৬৩ সেন্টিমিটার এবং লেজ ১৫ সেন্টিমিটার। মাটি খুঁড়ে গর্ত করে এই প্রাণীটি বসবাস করে। দিনের বেলায় সাধারণত এরা গর্তে ঘুমিয়ে কাটায়। রাতে খাদ্যের সন্ধানে বের হয়। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে গাছের মূল-শিকর, কাণ্ড, কীটপতঙ্গ এবং ছোট প্রাণী। এ প্রজাতির প্রাণী প্রায় বিলুপ্তের পথে। শেরপুরসহ সিলেট ও পার্বত্য চট্টগামে কালেভদ্রে এদের দেখা মেলে।

এ প্রসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের সভাপতি ড. মনিরুল খান জানান, ইউরেশিয়ান ওয়াইল্ড জগতের প্রাণী এই হগ ব্যাজার। হগ ব্যাজারকে শূকর বলা হলেও এটি আসলে শূকর প্রজাতির নয়।