নিজস্ব প্রতিবেদক: পোশাক খাতের মোট রফতানির মধ্যে ৬ দশমিক ১২ বিলিয়ন আসে আনুষঙ্গিক (অ্যাকসেসরিজ) ও প্যাকেজিং উপকরণ থেকে। এ খাতের প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের মোট চাহিদার শতভাগ পূরণের পাশাপাশি বিদেশেও রফতানি করছে। এ খাতের উন্নয়নে প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এ প্রসঙ্গে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে আগামী বাজেটের আগে এ-সংক্রান্ত সুপারিশ পাঠানো হবে। কোনো আইনি সীমাবদ্ধতা না থাকলে অ্যাকসেসরিজ ও প্যাকেজিং খাতে প্রণোদনা দেওয়া হবে।
রাজধানীর বসুন্ধরা আন্তর্জাতিক কনভেনশন সেন্টারে (বিআইআইসি) গতকাল গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ ও প্যাকেজিং, গার্মেন্টেক ও ইয়ার্ন অ্যান্ড ফেব্রিকসের চার দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী এ ঘোষণা দেন।
বিজিএপিএমইএর সভাপতি আবদুল কাদের খান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। এছাড়া ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক, বিজিএমইএর সভাপতি মো. সিদ্দিকুর রহমান, এফবিসিসিআইর সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মো. শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন, বিজিএপিএমইএর ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ট্রেড ফেয়ার স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, পরিচালক কে এইচ লতিফুর রহমান আজিম, বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ, জাকারিয়া ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার ইন্টারন্যাশনালের প্রধান নির্বাহী টিপু সুলতান ভুঁইয়া ও এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন প্রাইভেট লিমিটেডের নন্দ গোপাল বক্তব্য রাখেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশ সব দিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। চলমান অগ্রগতি অব্যাহত থাকলে ২০২১ সালে রফতানি ৬০ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের প্রায় ৩০টি পণ্যের প্রয়োজন হয়। এক সময় এগুলো আমদানি করতে হতো। আজ দেশের শিল্পের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি করা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, অ্যাকসেসরিজ রফতানিকারকরা প্রণোদনার অনুরোধ করছেন। ইপিবি থেকে এ-সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে আমি অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠাবো। কোনো আইনি জটিলতা না থাকলে আশা করি তারা প্রণোদনা পাবেন।
বিআইডিএসের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, প্রণোদনা এক সময় খুবই প্রয়োজনীয় ছিল। কিন্তু সবসময় প্রণোদনানির্ভরতা খাতের জন্য ভালো নয়। তিনি ২০১৫ সালের শিল্পনীতি বাস্তবায়নের দিকে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান।
আনিসুল হক বলেন, আমরা যখন গার্মেন্ট ব্যবসা শুরু করি, তখন অনেক সমস্যা ছিল। ১৯৮৫-৮৬ সালে আমাদের প্রথম রফতানি ছিল আট হাজার পিস পোশাক। তার জন্য সাইজলেবেল আমাদের কাছে ছিল না। আট হাজার পিস সাইজলেবেলের দাম ছিল দেড়শ ডলার। কিন্তু সেটা কেনার জন্য আমাদের হংকং যেতে হয়েছিল। কার্টন-প্যাকেজ কেনার জন্য তিন মাস আগে আমাদের অর্ডার দিতে হতো হংকংয়ে। এখন সেগুলো আগের রাতে বললেও হয়ে যায়। ২০০৫ সালে যখন কোটা উঠে যায়, তখন অনেকে উদ্বিগ্ন ছিলেন। আমরা বলেছিলাম আরও ভালো হবে। আমরা প্রতি বছর ইন্ডাস্ট্রি ডাবল করেছি।
গার্মেন্ট অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিজিএপিএমইএ), এএসকে ট্রেড অ্যান্ড এক্সিবিশন লিমিটেড ইন্ডিয়া ও জাকারিয়া ট্রেড অ্যান্ড ফেয়ার ইন্টারন্যাশনাল যৌথভাবে এ মেলার আয়োজন করেছে।
উল্লেখ্য, অষ্টমবারের মতো আয়োজিত প্রদর্শনীতে বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, হংকং, চীন, তাইওয়ান, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তুর্কি, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডস, ফিনল্যান্ড ও সুইজারল্যান্ডসহ ২৪টি দেশের ৪০০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। প্রতিদিন সকাল ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত প্রদর্শনী উš§ুক্ত থাকবে দর্শনার্থীদের জন্য।