গুজব রোধে সচেতনতা জরুরি

আলী হাসান মোজাহিদ: বর্তমান ডিজিটাল যুগে আমরা তথ্যপ্রযুক্তির এক অবিশ্বাস্য উন্নতির মধ্য দিয়ে চলেছি। তবে এই অগ্রগতির পাশাপাশি এক ভয়ংকর বিপদও আমাদের সমাজে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে আর তা হলো গুজব। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে মুহূর্তেই একটি ভুয়া তথ্য হাজারও মানুষের মাঝে ছড়িয়ে পড়তে পারে; যা সমাজে বিভ্রান্তি, ভীতি, এমনকি সহিংসতার কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

গুজব কেবল ব্যক্তিগত ক্ষতি নয়, বরং রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতাও বিপন্ন করতে পারে। অনেক সময় ধর্ম, রাজনীতি কিংবা জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে গুজব ছড়ানো হয়। এতে জনগণের মাঝে বিভাজন তৈরি হয় এবং সমাজে বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়। এ সমস্যার মোকাবিলায় সর্বাগ্রে সচেতনতা প্রয়োজন। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্ব হলো- কোনো তথ্য পাওয়ার পর যাচাই না করে সেটি শেয়ার না করা। এ ব্যাপারে ইসলামেও বেশ জোরালোভাবে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকু যথেষ্ট, সে যা শুনে তা-ই বলে বেড়ায়। তথ্যের উৎস, বিশ্বাসযোগ্যতা ও উদ্দেশ্য ভালোভাবে যাচাই করে তবেই প্রতিক্রিয়া জানানো উচিত।

এ ব্যাপারে কোরআনে এসেছে, হে মুমিনগণ! কোনো পাপাচারী যদি তোমাদের কাছে কোনো খবর নিয়ে আসে, তাহলে তার সত্যতা যাচাই করে নাও, তা না হলে তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো সম্প্র্রদায়ের ক্ষতি করে বসবে, অতঃপর তোমরা যা করেছ সেজন্য তোমাদের অনুতপ্ত হতে হবে। (সুরা হুজুরাত-০৬)

পাশাপাশি সরকার ও গণমাধ্যমকে আরও সক্রিয় হয়ে গুজব প্রতিরোধে নির্ভরযোগ্য তথ্য দ্রুত জনগণের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে। বিদ্যালয়, কলেজ, মসজিদ ও সামাজিক সংগঠনগুলোকেও এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে। সামাজিকভাবে শিক্ষামূলক কর্মসূচি, সেমিনার এবং গণসচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন আয়োজন করা দরকার। একটি সচেতন সমাজই পারে গুজবের ভয়াবহতা থেকে মুক্তি দিতে। তথ্যপ্রযুক্তির সুফল ভোগ করতে হলে তার অপব্যবহার রোধে আমাদের সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে।

লেখক: শিক্ষার্থী, আল-কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।