নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গুম হচ্ছে একদলীয় দুঃশাসনের নমুনা। রাষ্ট্রের এ অমানবিক আচরণ সংবিধানবিরোধী। যে কোনো দেশের নাগরিকের জীবন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই রাষ্ট্রের প্রধানতম দায়িত্ব। অথচ বর্তমান শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকে গুমকে করে তুলেছে সরকারের প্রধান রাজনৈতিক কর্মসূচি।
তিনি বলেন, গুমের অব্যাহত পরিস্থিতিতে দেশে সৃষ্টি হয়েছে এক ভয়ঙ্কর নৈরাজ্য। এ ধারা বয়ে চললে বাংলাদেশ আদিম অরণ্যের অন্ধকারে ডুবে যাবে। মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্পূর্ণভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে। আসুন, আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে ঐক্যবদ্ধ হই। কেবলমাত্র একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমেই প্রকৃত গণতান্ত্রিক সরকার গঠন হলেই গুম, অপহরণ, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী অপরাধ দূর হবে, জনজীবনে স্বস্তি ফিরে আসবে। আমি জাতিসংঘের অধীনে সব গুমের তদন্তের দাবি করছি।
আজ মঙ্গলবার ‘আন্তর্জাতিক গুম দিবস’ উপলক্ষে দেয়া বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ৩০ আগস্ট ‘গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক গুম দিবস’ উপলক্ষে আমি হারিয়ে যাওয়া মানুষদের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করছি। তাদের পরিবারের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। দেশে গুমের আতঙ্ক এখন সর্বত্র পরিব্যাপ্ত। দুঃশাসন থেকে উৎপন্ন হয় গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যার মতো মানবতাবিরোধী হিংস্রতা। স্বৈরাচারী সরকারের গড়ে তোলা আইন প্রয়োগকারী সংস্থার পরিচয়ে বিরোধী দলের প্রতিবাদী নেতাকর্মীদের তুলে নিয়ে যাওয়া এখন নিত্যকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এরা বিরোধী দল ও মতের মানুষদের অল্পদিন-দীর্ঘদিন অথবা চিরদিনের জন্য নিখোঁজ করে দেয়।
তিনি বলেন, সরকার বিরোধী দল ও ভিন্নমতের মানুষকে ভয় পাইয়ে দেয়ার জন্যই এ কর্মসূচি জোরেশোরে বাস্তবায়ন করছে। বিরোধী দলশূন্য একদলীয় শাসনব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জন্যই গুমকে প্রধান অবলম্বন করা হচ্ছে। এ নির্দয় গুমের শিকার হয়েছেন সংসদ সদস্য ইলিয়াস আলী, সাইফুল ইসলাম হিরু, চৌধুরী আলম, সুমন, জাকিরসহ ছয় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী। আরেকটি লোমহর্ষক গুমের শিকার হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী ও দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। তাকে দুই মাস গুম করে রাখার পর পাচার করা হয়েছে পাশের দেশে। এ নতুন ধরনের ঘটনা দেশবাসীকে মহাআতঙ্কে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে।