নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম:‘সিটি করপোরেশন কর তফসিল ২০১৬ অনুযায়ী ইমারত ও জমির ওপর কর সাত শতাংশ, ময়লা নিষ্কাশন রেট সাত শতাংশ, সড়ক-বাতি পাঁচ শতাংশ ও স্বাস্থ্য কর আট শতাংশসহ মোট ২৭ শতাংশ কর নেওয়ার বিধান থাকলেও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নগরবাসীর সুবিধার্থে আগের মতো ১৭ শতাংশ ও ১৪ শতাংশ হারে কর আদায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে গৃহকর কমাতে সবাইকে আপিল করতে হবে। এ পর্যন্ত ৪০ হাজারের অধিক আপিল জমা হয়েছে। আমি আশা করি, রিভিউ বোর্ড নাগরিকদের অসুবিধা বিবেচনা করে কর ও রেট সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসবে। আমার বিশ্বাস রিভিউ বোর্ডের সিদ্ধান্তে সবাই খুশি হবে।’
গতকাল বুধবার নগর ভবনের কেবি আবদুস ছাত্তার মিলনায়তনে সিটি করপোরেশনের অধিক্ষেত্রে ইমারত ও জমির পঞ্চবার্ষিক মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে মেয়র এ কথা জানান।
মেয়র বলেন, ‘নির্বাচিত মেয়র হিসেবে আইন ও জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নই আমি। পরিস্থিতি, প্রেক্ষাপট, দৃষ্টিভঙ্গি ও ব্যক্তিগত রুচির পরিবর্তন হয়েছে। দেশে ক্রমে আইনের প্রয়োগ ও প্রতিফলন হচ্ছে। আমরা কেউ আইন ও জবাবদিহির ঊর্ধ্বে নই। গৃহ কর অ্যাসেসমেন্ট নিয়ে সাবেক দুই মেয়র, ২৩ কাউন্সিলরের চিঠি, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠনের প্রতিবাদ কর্মসূচির প্রেক্ষিতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। ২৭ শতাংশের জায়গায় আমরা চসিকে ১৭ শতাংশ গৃহকর ধার্য করেছি নগরবাসীর প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে। আমি আইন তৈরি করিনি যে, আমি সংশোধন করতে পারব। সমন্বয় অত্যন্ত জরুরি ও সময়োপযোগী দাবি। বিগত সময় যারা মেয়র ছিলেন তারা বিষয়টি উপলব্ধি করেছেন। মেয়রের চেয়ারে যারাই বসেছেন সবাই একই কথা বলেছেন।’
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে সম্পন্ন করা অ্যাসেসমেন্টে মোট এক লাখ ৮৫ হাজার হোল্ডিংয়ের বিপরীতে প্রস্তাবিত বার্ষিক কর ও রেট ৮৫১ কোটি ৩০ লাখ টাকা। নতুন ২৮ হাজার ৭০২টি হোল্ডিংয়ের বিপরীতে কর ও রেট ৪৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যাতে আগের অ্যাসেসমেন্টর তুলনায় বর্তমান দাবির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় চার গুণ। আগের তুলনায় সেবা প্রদান ও উন্নয়ন কার্যক্রমের ব্যয় বেড়েছে অনেক বেশি। উদাহরণস্বরূপ তিনি বলেন, ২০০৯-১০ সালে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বাবদ ব্যয় ছিল ৭১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে এই ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৯১ কোটি ৭১ লাখ টাকা। সেরকম প্রতিটা খাতে ব্যয় বেড়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন চসিকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সামসুদ্দোহা, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা ড. মুহাম্মদ মুস্তাফিজুর রহমান, প্যানেল মেয়র চৌধুরী হাসান মাহমুদ হাসনী প্রমুখ।